বাংলা সাহিত্য যারা পড়েছেন তাঁরা
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ের ‘কপাল কুণ্ডলা’ উপন্যাস পড়েননি হতে পারে না। উপন্যাসের নায়ক নবকুমারের বলা ‘আহা! কী দেখিলাম! জন্ম জন্মান্তরেও ভুলিব না’ এ তো রীতিমতো মোহ মুগ্ধতার ট্যাগলাইন। ‘কপাল কুণ্ডলা’ উপন্যাসে এক কালীমন্দিরের বর্ণনা ছিল। সেই কালী মন্দির বাস্তবে আজও রয়েছে।
রাস্তার পাশেই অবস্থিত ছোট কালী
মন্দিরটি। সকাল এবং সন্ধ্যা দু’বেলা পুজো করে যান
পুরোহিত। সন্ধ্যাবেলা নিয়ম মেনে করা হয় আরতি। যদিও এটি আসল মন্দির নয়। আসল মন্দির
রয়েছে আর একটু ভেতরে। সেখানে রয়েছে সিদ্ধেশ্বর শিবমন্দির ও বঙ্কিমচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি সৌধ। সিদ্ধেশ্বর শিব মন্দিরটি আটচালার। তাতে রয়েছে
স্বয়ম্ভু শিব লিঙ্গ। ইনি বাবা সিদ্ধেশ্বর মহাদেব। মন্দিরটির উল্টো দিকে রয়েছে
একটি বিশাল বড় বটগাছ রয়েছে। প্রায় ২০০ বছরের বেশি পুরনো এই মন্দির।
একসময় সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায় মেদিনীপুর জেলার কালেক্টর ছিলেন। ভাবছেন তো হঠাৎ মেদিনীপুর প্রসঙ্গ
এল কেন?
এ মন্দির আসলে মেদিনীপুর জেলাতেই অবস্থিত। যদি দিনের দিন
মন্দির দেখে ফিরে আসতে চান তাহলে সকাল সকাল হাওড়া স্টেশন থেকে দিঘা যাওয়ার ট্রেনে
উঠে পড়ুন। ভোর সাড়ে ৬টা থেকে ছাড়ে
ট্রেন। সাড়ে ৯টার মধ্যে কাঁথি পৌঁছে যাবে। সেখান থেকে টোটোতে রূপসা মোড়ে পৌঁছতে
হবে। সেখান থেকে দরিয়াপুর যাওয়ার ট্রেকার পাওয়া যায়। সেখানেই রয়েছে কপালকুণ্ডলা
মন্দির। কাঁথি থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার দূরে।
কালেক্টর থাকাকালীন সময়ে এই
কালীমন্দিরে এসেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র। সেই সময় নদীর পাড়ে গভীর অরণ্যের মধ্যে থাকা
মাতৃমন্দিরে ছিল এক ভয়াল দর্শনা কালীমূর্তি। এক তান্ত্রিক তাঁর আরাধনা করতেন।
এইসব দৃশ্য দেখার পরেই কপাল কুণ্ডলা উপন্যাস নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন তিনি।
এই মন্দিরের অনতিদূরেই রয়েছে দারুয়া নামে আর একটি কালী মন্দির। সেটিও কপালকুণ্ডলা
কালী মন্দির নামে পরিচিত।