কলকাতা ডার্বি এক ঐতিহ্যের ম্যাচ।
ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ নিয়ে গর্বের শেষ নেই দেশবাসীর। তবে ১৯৮০ সালের একই
দিনে ইডেনে ডার্বি চলাকালীন ভয়াবহ একটি ঘটনা ঘটে যায়, যার পর থেকে আজও কলঙ্কিত হয়ে রয়ে গিয়েছে দুই প্রধানের
ম্যাচ।
১৯৮৪ সালের আগে পর্যন্ত ইডেনে ফুটবল
ম্যাচ আয়োজন করা হত। ভয়াবহ এই ঘটনাটি হয় ১৯৮০ সালে। সে বার ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান
ম্যাচের প্রথমার্ধে বিশেষ উত্তেজনা ছিল না। তবে দ্বিতীয়ার্ধ লাল কার্ড দেখানো
উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। যার রেশ পৌঁছে যায় গ্যালারিতেও। সেই সময়ে মোহনবাগানের সবচেয়ে
ক্ষিপ্র ফরোয়ার্ড বিদেশ বসুকে রাফ ট্যাকল করে মাটিতে ফেলে দেন ইস্টবেঙ্গলের
ডিফেন্ডার দিলীপ পালিত। কিন্তু বিদেশ মাটি থেকে উঠে চূড়ান্ত অখেলোয়াড়ি আচরণ করে
বসেন। তিনি দিলীপ পালিতকে সজোরে লাথি মেরে দেন। পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে রেফারি
সুধীন চট্টোপাধ্যায় দু’জনকেই লাল কার্ড
দেখিয়ে মাঠের বাইরে বের করে দেন। কিন্তু এখানেই বিষয়টি থেমে থাকেনি। এর পর রেফারি
মোহনবাগানের পক্ষে ফ্রি-কিকের বদলে বল ড্রপ দিয়ে খেলা শুরু করে দেন। যার ফলে
উত্তেজনার ফুটতে শুরু করে দেন সমর্থকরা।
Lionel Messi: দূরপাল্লার শটে চোখ ধাঁধানো গোল মেসি'র, লিগস কাপের ফাইনালে উঠল ইন্টার মিয়ামি
বড় মিঞা'র প্রয়াণে শোক প্রকাশ ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সহ এআইএফএফ-এর
গ্যালারির একটি অংশে দুই দলের
উত্তেজিত সমর্থকরা একে অন্যের সঙ্গে হাতাহাতি জড়িয়ে পড়েন। কেউ কেউ ইট ছোড়াছুড়ি
শুরু করে দেন। শুধু তাই নয়, ইট, লোহার রড, কংক্রিটের ভাঙা অংশ
নিয়েও একে অপরকে আঘাত করেন সমর্থকরা। ওই দিন
দর্শকরা তাড়াহুড়ো করে স্টেডিয়ামের বাইরে বেরিয়ে আসতে শুরু করেন। কিন্তু তখন সব ক’টা গেট বন্ধ ছিল। এর মাঝেই আবার উৎশৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ
করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। হুড়োহুড়িতে পড়ে তাঁরা। সেই সঙ্গে চলে ধাক্কাধাক্কি, ছুটোছুটি। ভিড়ের চাপে লুটিয়ে পড়েন অসংখ্য দর্শক। অনেকে
তাঁদের মাড়িয়েই চলে যান। এর ফলে ১৬টি তাজা প্রাণ কেড়ে নেয় ইডেনের সেই অভিশপ্ত
ডার্বি।
সেই দিন প্রাণ হারিয়েছিলেন যাঁরা-
১) কার্তিক মাইতি, ২) উত্তম চাউলে, ৩) সমীর দাস, ৪) অলোক দাস, ৫) সনৎ বসু, ৬) নবীন নস্কর, ৭) কল্যাণ সামন্ত, ৮) অসীম চট্টোপাধ্যায়, ৯) রবীন আদক, ১০) কার্তিক মাঝি, ১১) ধনঞ্জয় দাস, ১২) শ্যামল বিশ্বাস, ১৩) মদনমোহন বাগলি, ১৪) প্রশান্ত দত্ত, ১৫) হিমাংশুশেখর দাস এবং ১৬) বিশ্বজিত কর।