ফুটবলের সম্রাট নামে পৃথিবীতে
একজনকেই ডাকা হয়, তিনি পেলে।
সম্প্রতি, ৮২ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। কিন্তু
আপনি কি জানেন যে ১৯৬০ সালে পেলের কারণে একটি যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আসুন জেনে
নিই এই ঘটনা সম্পর্কে।
এই ঘটনা ১৯৬৯ সালের। তিনি তাঁর
কেরিয়ারের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন স্যান্টোস ফুটবল ক্লাবে। পেলের কারণে
স্যান্টোস ফুটবল ক্লাব ১৯৬০-এর দশকে বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত ফুটবল ক্লাব ছিল। এই
ক্লাবটি সারা বিশ্বে স্বীকৃত ছিল এবং বিশ্বের প্রতিটি কোণে হওয়া প্রীতি ম্যাচে অংশ
নিয়েছিল।
এমনই একটি ম্যাচ হয়েছিল ১৯৬৯ সালের ৪
ফেব্রুয়ারি। ম্যাচটি হয়েছিল নাইজেরিয়ার একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায়। এই ম্যাচে
স্যান্টোসের মুখোমুখি হয় বেনিন সিটির একটি ক্লাব। ২৬ জানুয়ারি স্যান্টোসের দল
নাইজেরিয়া পৌঁছায়।
তখন নাইজেরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছিল।
নাইজেরিয়া ও বিয়াফ্রার মধ্যে লড়াই হচ্ছিল। এই লড়াইয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ
হারায়,
লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়। যাই হোক, বলা হয় যে পেলে আসার সময় নাইজেরিয়া এবং বিয়াফ্রার মধ্যে
লড়াই ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। ইতিহাসবিদ গেহরম্যান গোর্চে জানিয়েছেন, ম্যাচের আগে ব্রাজিলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা দলের
নিরাপত্তা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন ছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে নাইজেরিয়ায় যুদ্ধ বন্ধের
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: UEFA Champions League: ৭ গোলের ম্যাচে অবিশ্বাস্য কামব্যাক রিয়েল মাদ্রিদের, ভিনিসিয়াস-বেনজিমা'দের দাপটে উড়ে গেল লিভারপুল
আরও পড়ুন: অনলাইনে ডার্বির টিকিট কেটেছেন, জেনে নিন কবে, কোথা থেকে, কোন সময়ে টিকিট তুলতে পারবেন
এরপর খেলা হয়। সেই ম্যাচে বেনিন সিটি
থেকে স্যান্টোস ক্লাবকে ২-১ গোলে পরাজিত করে। তবে এই ঘটনা নিয়েও বিভিন্ন কথা বলা
হয়েছে। ১৯৭৭ সালে পেলের প্রথম আত্মজীবনীতে ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়নি।
এই ঘটনাটি ২০০৫ সালে টাইম ম্যাগাজিনে
পৌঁছেছিল। এই প্রসঙ্গে বলা হয়, কূটনীতিক এবং দূতরা
গৃহযুদ্ধ বন্ধ করার জন্য দুই বছর ধরে বৃথা চেষ্টা করেছিলেন, ১৯৬৯ সালে ব্রাজিলিয়ান তারকা ফুটবলার পেলে সেই যুদ্ধই
তিনদিনে বন্ধ করেছিলেন। তবে এমন অনেক নিবন্ধও বেরিয়েছে, যা এই ঘটনা নিয়েও প্রশ্ন চিহ্ন তুলেছে। পেলের সতীর্থ
গিলমার এবং কুটিনহোর মতে, যুদ্ধবিরতি হয়েছিল
ম্যাচ চলাকালীন সময়টুকুর জন্য। ম্যাচ শেষ হতেই গুলির শব্দ শোনা যায়।
পেলেকে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের
মধ্যে গণ্য করা হয়। পেলে তাঁর কেরিয়ারের বেশিরভাগ সময় ব্রাজিলিয়ান ক্লাব
স্যান্টোসের প্রতিনিধিত্ব করেন। এই ক্লাবের হয়ে তিনি ৬৫৯ ম্যাচে ৬৪৩টি গোল
করেছিলেন। পেলের নেতৃত্বে অধীনে তিনবার (১৯৫৮, ১৯৬২ এবং ১৯৭০) বিশ্বকাপ জিতেছে ব্রাজিল।
এটি কোনও খেলোয়াড়ের সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপ শিরোপাও।