নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প
বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায় ঘোষণা
করা হয় বৃহস্পতিবার। সেই সময় ২০১৩ সালের কোম্পানি আইনে যে সংশোধনী আনা হয়েছিল, তারও
সমালোচনা করা হয়। ওই সংশোধনীতে কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে, লাগামছাড়া রাজনৈতিক অনুদান দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। এদিনের রায়, কোম্পানি
আইনে করা মোদি সরকারের ওই সংশোধনীটিও বাতিল হল।
২০১৩ সালের কোম্পানি আইনের ১৮২ নম্বর ধারায়, ভারতীয়
কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে, কোনও রাজনৈতিক দলের তহবিলে অনুদান
দেওয়ার অধিকারকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়েছিল। কর্পোরেট সংস্থার
অনুদানের পরিমাণের উপর থেকে লাগাম তুলে নেওয়ার বিষয়ে তুষাড় মেহতা জানান, আগের
প্রক্রিয়াটি অকার্যকর। অনুদানের সীমাকে ফাঁকি দিতে, অনেক সময়
বড় কর্পোরেটরা ভুয়ো সংস্থা তৈরি করত। এই ধরনের ভুয়ো সংস্থা তৈরি করাকে নিরুত্সাহিত
করতেই, অনুদানের উপর থেকে সীমার বাধা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “কোনও সংস্থা তাদের মোট লাভের ৭.৫ শতাংশের বেশি
দান করবে কিনা, তা ঠিক করার অধিকার তাদের কাছে থাকুক।”
তিনি আরও যুক্তি দেন, সীমা টানা হলে, সংস্থাগুলি নগদ অনুদান দিতে চাইবে। তাতে, কালো টাকার
লেনদেন বাড়বে।
কোম্পানি আইনের সংশোধনীটিকে অপ্রয়োজনীয় বলেছে আদালত। ভারতের প্রধান
বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, ব্যক্তি অবদানের থেকে
রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোনও কর্পোরেট সংস্থার প্রভাব বেশি থাকে। তারা অনুদান করে
সম্পূর্ণভাবে ব্যবসায়িক স্বার্থে। এটা লেনদেনের মতো। কোম্পানি আইনের ১৮২ নম্বর
ধারার সংশোধনীতে সংস্থা এবং ব্যক্তিদের সমানভাবে দেখা হয়েছে, যা স্পষ্টতই অযৌক্তিক।” তিনি আরও বলেন, এই সংশোধনী আনার আগে, লোকসানে থাকা সংস্থাগুলি
রাজনৈতিক অুনদান দিতে পারত না। এই সংশোধনী লোকসানে চলা সংস্থাগুলি এবং একটি
রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে লেনদেনের সম্ভাবনা কুলে দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলিকে অর্থ
দিয়ে, তার বিনিময়ে ওই লোকসানে চলা সংস্থা সরকারি সুবিধা পেতে
পারে। যার মাধ্যমে তারা লাভজনক সংস্থায় পরিণত হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলিকে,
কর্পোরেট সংস্থাগুলির এই লাগামহীন অনুদান দেওয়ার ক্ষমতা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিরোধী বলে জানিয়েছে আদালত। এর ফলে, কিছু ব্যক্তি বা সংস্থা সরকারি নীতি প্রণয়নে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
তাই এই সংশোধনী অসাংবিধানিকও বটে।