মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে নাস্তানাবুদ করে নৈশালোকে উদ্ভাসিক যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে আইএসএল লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হল মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। ঘরের মাঠে প্রায় ৬২ হাজার সমর্থকের সামনে মুম্বই সিটি এফসি-কে ২-০ গোলে পরাজিত করল মোহনবাগান। আইএসএল-এর ইতিহাসে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে মোহনবাগানের এটিই প্রথম জয়।
মুম্বই সিটি এফসি’র বিরুদ্ধে সোমবার ঘরের মাঠে প্রিয় দলকে সমর্থন জানাতে শহর-শহরতলি ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন। টিকিট বাজারে ছাড়তে ক্লাব কর্তৃপক্ষ যেমন কোনও কার্পণ্য করেনি তেমনই সবুজ-মেরুন জনতা যুবভারতীর গ্যালারিকে সবুজ-মেরুন রঙে রাঙিয়ে দিতে কোনও খামতি রাখেনি। সমগ্র গ্যালারি-ই ছিল মোহনবাগানের দখলে। লখনউ সুপার জায়েন্টের অধিনায়ক কে এল রাহুল-ও এ দিন উপস্থিত ছিলেন মাঠে।
লিগ শিল্ড জিততে হলে এই ম্যাচে জয় ছাড়া কোনও উপায় ছিল না মোহনবাগানের কাছে। অন্য দিকে, মুম্বই সিটি এফসি ড্র করলেই টানা দ্বিতীয়বার শিল্ড জিতত। কিন্তু হোম অ্যাডভান্টেজকে কাজে লাগিয়ে দুরন্ত ফুটবল উপহার দিল গঙ্গাপারের ক্লাব। খেলার প্রথম মিনিট থেকেই ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে নেয় মোহনবাগান। মাঝমাঠের সঙ্গে আক্রমণভাগের বোঝাপড়ার উপর ভর করে শুরু থেকেই মুম্বইয়ের ডিফেন্সকে চাপে ফেলতে থাকে মোহনবাগান। এরই সুবাদে ২০ মিনিটে প্রথম গোলের খোঁজ কার্যত পেয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান কিন্তু নিশ্চিত গোল থেকে বাগানকে বঞ্চিত করে পোস্ট। অনিরুদ্ধ থাপার পাস থেকে লিস্টন কোলাসোর ঝুঁকে পরে নেওয়া হেড প্রথম পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। তবে, প্রথম গোল পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বাগানকে। ২৮ মিনটের মাথায় দিমিত্রি পেত্রাতোসের পাস ধরে বক্সের মধ্যে ইনসাইড-আউটসাইড ডজ করে তিন ডিফেন্ডারকে নাস্তানাবুদ করে ডান পায়ের দূরপাল্লার শটে দ্বিতীয় পোস্টে বল জড়িয়ে দেন লিস্টন কোলাসো।
যে দাপট নিয়ে প্রথমার্ধে মাঠ ছেড়েছিল সেই একই দাপটের সঙ্গে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে ফেরে সবুজ-মেরুন। মাঝমাঠকে আরও জমাটি করে ইনস্যুরেন্স গোল তুলে আনার লক্ষ্যে জনি কাউকোর পরিবর্তে ব্র্যান্ডন হ্যামিল এবং আর্মান্দো সাদিকুর জায়গায় নামার জেসন কামিন্সকে। পাশাপাশি ডিফেন্সের উপর জোর দিতে অভিষেক সূর্যবংশীর পরিবর্তে নামানো হয় দীপক টাংরিকে। চটজলদি এই পরিবর্তনগুলি মোহনবাগানকে মাঝমাঠের উপর আরও দখল নিতে সাহায্য করে। আর্মান্দোর পরিবর্তে নামা জেসন কামিন্স মোহনবাগানকে দ্বিতীয় গোলটি এনে দেন। কামিন্সকে লক্ষ্য করে দিমিত্রির পাস বাম পায়ে ঠিক মতো রিসিভ করতে না পারলেও মুহূর্তে সেই ভুল শুধরে ডান পায়ের শটে গোল করে ২-০ গোলে পালতোলা নৌকাকে এগিয়ে দেন অজি তারকা। এই গোলের দুই মিনিট আগে বক্সের বাইরে থেকে অনিরুদ্ধ থাপার শট বাম দিকে শরীর ছুঁড়ে বাঁচান মুম্বইয় গোলরক্ষক পূর্বা টেম্পা লেচেম্পা।
জোড়া পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি মোহনবাগান। ৮৯ মিনিটে খেলার গতির বিপরীতে ছাংতের গোলে একটি গোল ফিরিয়ে দেয় মুম্বই। এই গোলের পর থেকেই অন্য রূপ নেয় এই ম্যাচ। খেলার নিরিখে নয় হাতাহাতি কিংবা মারামারির নিরিখে। শিল্পের গণ্ডি ছাড়িয়ে শারীরিক ফুটবলের ফলে ধাক্কাধাক্কি হয় অনেক বেশি। পরিবর্তফুটবলার হিসেবে নামা হ্যামিল জোড়া হলুদ কার্ড দেখে লাল কার্ড দেখেন। ৮ মিনিট অতিরিক্ত সময়ের ৪ মিনিটই অতিক্রান্ত হয় দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে হাতাহাতি কিংবা উত্যপ্ত বাক্য বিনিময়ে। এ দিন ম্যাচের শেষে মোহনবাগান সুপার জায়েন্টের অন্যতম ডিরেক্টর সঞ্জীব গোয়েঙ্কা লিগ শিল্ড জেতার জন্য সমর্থক ধন্যবাদ এবং ফুটবারদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, “আনন্দিত এবং গর্বিত যে আমরা লিগ শিল্ড জিততে পেরেছি। সমর্থকদের অসংখ্য ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য।”
↔ SЕNDING 0,7576 ВТС. Receive =>> https://telegra.ph/BTC-Transaction--755693-03-14?hs=7edc77fce96668cedbb241cd42d64ec0& ↔
Apr 16, 2024 09:16 [IST]