জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে জিতে শিল্ড জয়ের দৌড়ে দারুণ ভাবে টিকে রইল মোহনবাগান। স্টিল সিটির দলকে ৩-০ গোলে পরাজিত করল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন।
ম্যাচের ৭ মিনিটে জনি কাউকোর ডিফেন্স চেরা পাস ধরে মনবীর সিং-এর ডান প্রান্ত বরাবর দৌড় এবং সেখান থেকে মাইনাস জামশেদপুরের ডিফেন্সকে দাঁড় করিয়ে দেয়। মনবীরের থেকে পাওয়া বল ডান পায়ের শটে জামশেদপুরের গোলরক্ষক রেহেনেশ টিপি’কে পরাস্থ করে জালে জড়িয়ে দেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। গোল পাওয়ার পর আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে ওঠে মোহনবাগানের আক্রমণভাগ। কিন্তু পরবর্তীতে একাধিক আক্রমণ তুলে আনলেও দ্বিতীয় বারের জন্য জামশেদপুরের গোলমুখ খুলতে পারেনি। ৩৭ মিনিটে দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিল মোহনবাগান। বক্সের মধ্যে অতিরিক্ত সময় নেওয়ার কারণে সেই সুযোগও হাতছাড়া করেন দিমিত্রিস। ততক্ষণে জামশেদপুরের ডিফেন্সে ফুটবলার বাড়িয়ে নিয়েছিল। এরই মাঝে ৩৫ মিনিটে দুরন্ত দক্ষতায় জামশেদপুরের নিশ্চিত গোল বাঁচান বিশাল কাইথ। চিমা চুকুর গোলার মতো শট বিশালের আঙুলের ডগায় লেগে বারের উপর গিয়ে বেরিয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফেরে জামশেদপুর। যে ভাবে প্রথমার্ধে মোহনবাগান অ্যাটাক তুলে আনছিল সেই ঝাঁঝ ছিল না এই অর্ধের প্রথম কুড়ি পনেরো মিনিট, বরং অনেক বেশি খুলে খেলে জামশেদপুর। গোল শোধ করার তাগিদ দেখা যাচ্ছিল খালিদ জামিলের ফুটবলারদের মধ্যে। তবে, কাঙ্খিত গোলের দেখা স্টিল সিটির দল পায়নি। একাধিক দারুণ অ্যাটাক তৈরি করলেও তিন কাঠিতে শট রাখতে পারেননি সানান-মানজোরোরা। ৬৪ মিনিটে মনবীর সিং-এর পাস থেকে জেসন কামিন্সের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে ফিরতি বলে মনবীরের শট লক্ষ্যচ্যূত হয়। স্কোরিং শিটে নাম তুলতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি বিশ্বকাপারকে।
৬৮ মিনিটে জনি কাউকোর সঙ্গে ওয়ান টু খেলে কামিন্সের উদ্দেশ্যে ডিফেন্স চেরা পাস বাড়ান মনবীর। এই ক্ষেত্রে তিন কাঠিতে বল রাখতে ভুল করেননি কামিন্স, বাম পায়ের প্লেসিংয়ে রেহেনেশকে পরাস্থ করেন তিনি। গোলের পর ট্রেডমার্ক সেলিব্রেশনে গোটা স্টেডিয়ামকে হিল্লোলিত করে তুলেছিলেন বিশ্বকাপার। শেষ ১৫ মিনিট প্রথমার্ধের আগ্রাসন ফের ধরা পরে মোহনবাগানের অ্যাটাকে। ৭৮ মিনিটে স্কোরলাইন বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। দিমিত্রির শট টার্গেটে থাকলেও দলের পতন রোধ করেন জামশেদপুরের গোলরক্ষক। ৮০ মিনিটে মোহনবাগানের হয়ে খেলার ফল ৩-০ করেন পরিবর্ত ফুটবলার হিসেবে নামা সাদিকু। এক্ষেত্রেও পাস বাড়িয়েছিলেন মনবীর। এ দিন অ্যাসিস্টের হ্যাটট্রিক করেন পঞ্জাব তনয়।
ঘরের মাঠে এই জয়ের ফলে ১৬ ম্যাচে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রইল মোহনবাগান। সবুজ-মেরুনের এই জয় প্লে-অফের লড়াইয়ে থাকার ক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধে করে দিল ইস্টবেঙ্গলকে। হারের ফেলে ১৮ ম্যাচে জামশেদপুরের পয়েন্ট দাঁড়াল ২০। এখনও ষষ্ঠ স্থানেই রয়েছে জামশেদপুর। অপর দিকে, ইস্টবেঙ্গল ১৭ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে রয়েছে। এক ম্যাচ কম খেলে সাত নম্বরে থাকা নর্থইস্ট ইউনাইটেডের পয়েন্ট ১৯।