ফের হার! ভুবনেশ্বরে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ওড়িশা এফসি’র বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও পরাজিত হল ইস্টবেঙ্গল। যেই প্রতিপক্ষকে সুপার কাপ ফাইনালে হারিয়ে এক যুগ পর সর্ব ভারতীয় ট্রফির খরা কাটিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল সেই ওড়িশা এফসি বৃহস্পতিবার ২-১ পরাজিত করল লাল-হলুদকে।
এ দিন ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ইস্টবেঙ্গলকে দুর্ধর্ষ গোলে এগিয়ে দেন তরুণ ফরোয়ার্ড পিভি বিষ্ণু। ৩৭ সেকেন্ডে করা বিষ্ণুর গোলে লিড নিলেও ইস্টবেঙ্গলের যে দাপট মাঝমাঠে এবং আক্রমণে তৈরি করা উচিৎ ছিল সেটা করতে পারেনি। এর ফলে আকস্মিক গোল হজম করে থমকে গেলেও লড়াইয়ে ফিরে আসে ওড়িশা। ঘরের মাঠে সমতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে একের পর এক তুলে আনতে থাকে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সে। ইস্টবেঙ্গলের দল গঠনে বৈচিত্রের ছড়াছড়ি ছিল এ দিন। কী কারণে সৌভিক চক্রবর্তী, নাওরেম মহেশ প্রথম থেকে খেললেন না তাঁর উত্তর হয়তো লাল-হলুদ ম্যানেজমেন্টের কাছেই রয়েছে। সৌভিক না থাকার ফলে মাঝমাঠে ব্লকিংটাই ঠিক মতো হচ্ছিল না। এর ফলে ওড়িশার আক্রমণ পুরীর সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ছিল ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে।
চাপের মুখে ভুল করে ফেলেন মহম্মদ রাকিপ। ওড়িশার ফুটবলারকে আটকাতে গিয়ে বক্সের ভিতর ফাউল করে ফেলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। এরপর মোক্ষম এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সমতায় ফেরে ওড়িশা। ৪০ মিনিটের মাথায় সমতাসূচক গোলটি করেন ডিয়েগো মৌরিসিও(১-১)। এর পরমুহূর্তেই আরও একটি গোল খেয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। যদিও রয় কৃষ্ণ'র সেই গোল অফসাইডের কারণে বাতিল করা হয়। তা না হলে এক গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যেত লাল-হলুদ।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে খেলায় বিশেষ উন্নতি হয়নি ইস্টবেঙ্গলের। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া এবং নির্ভুল পাসের অভাবে মাঝমাঠে জমাটি ফুটবল খেলতে পারছিলেন না ক্লেইটন সিলভা'রা। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাল ওড়িশা। ৬১ মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে আহমেদ জাহু'র মারা শটে হালকা ভাবে পা ঠেকিয়ে দেন রেবেলো। যা জালে প্রবেশ হওয়া থেকে আটকাতে পারেননি গোলরক্ষক প্রবসুখন সিং গিল(১-২)। এক গোলে পিছিয়ে পড়ার পর একাধিকবার আক্রমণে উঠলেও ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণে সে রকম ঝাঁজ লক্ষ্য করা যায়নি। এই সুবাদে শেষ ২-১ গোলে হেরেই পড়শী রাজ্য থেকে ফিরতে হবে লাল-হলুদ'কে।
এই দিন জয়ের পর উৎসবে মেতে ওঠে ওড়িশা। এক মাস আগে এই মাঠেই সুপার কাপ ফাইনাল হেরে গিয়েছিলেন রয় কৃষ্ণ'রা। তাই দ্বিতীয় সাক্ষাতে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিলেন তাঁরা। অন্যদিকে, এ দিন হারের ফলে আইএসএল-এর পরের রাউন্ডে ওঠার রাস্তা কঠিন হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গলের। একই ভাবে কলকাতা ডার্বি(১০ মার্চ)'র আগে আত্মবিশ্বাসে বড়সড় আঘাত পেল লাল-হলুদ শিবির।