শহরের তাপমাত্র চল্লিশ পার করে গিয়েছে। তাপপ্রবাহে ওষ্ঠাগত প্রাণ। মাঝ বৈশাখে কালবৈশাখীর দেখা না পাওয়া গেলেও শুক্রবার গঙ্গাপারে ব্যাটিং সাইক্লোনের সাক্ষী থাকল তিলোত্তমাবাসী। নাইট বাহিনীর সল্ট-নারিনের ঝোড়ে ব্যাটিংয়ের জবাবে পঞ্জাব কিংসের বেয়ারস্টো-শশাঙ্ক দেখাল পঞ্জাবি ধামাল।
ইডেন মাঠে এ দিন প্রথম ইনিংসে তৈরি হওয়া সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভেঙে গেল দ্বিতীয় ইনিংসে। কেকেআর-এর ২৬১/৬ রানের জবাবে পঞ্জাব কিংস ১.৪ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে জিতে নিল ম্যাচ।
শুরুতে পাওয়া ব্যাটিংয়ের সুযোগ দুর্ধর্ষ ভাবে কাজে লাগিয়ে কেকেআর-কে বড় রানের লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে কোনও ভুল করেননি ফিলিপ সল্ট-সুনীল নারিন। প্রথম উইকেটে ১৩৮ রানের পার্টনারশিপ গড়ে এই জুটি। সুনীলের ব্যাট থেকে আসে ৭১(৩২) রান এবং ফিলিপ সল্ট খেলেন ঝকঝকে ৭৫(৩৭) রানের ইনিংস। বিধ্বংসী ফর্মে থাকা দুই ব্যাটার ড্রেসিংরুমে ফিরলেও কলকাতার রানের গতিতে লাগাম পরেনি। মিডল অর্ডারে ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৩৯), আন্দ্রে রাসেল (২৪) এবং শ্রেয়াস আইয়ার (২৮) স্কোর বোর্ডকে সচল রাখার কাজ সাবলীল ভাবে করেন। ২০ ওভারে ছয় উইকেটের বিনিময়ে ২৬১ রান স্কোর বোর্ডে তোলে কেকেআর, যা ছিল ইডেন গার্ডেন্সে রেকর্ড। শুধু আইপিএল-এই নয়, আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেটেও ইডেনে এত রান কখনও হয়নি। কিন্তু কে জানত পরবর্তী দুই ঘণ্টাও স্থায়ী হবে না এই রেকর্ড।
পাহাড়প্রমাণ রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরুটা ঝড়ের গতিতে করে পঞ্জাব কিংস। শেষ চার ম্যাচ হেরে ইডেনে আসা পঞ্জাব শুরু থেকেই পাল্টা মারের রাস্তা বেছে নেয়। জনি বেয়ারস্টো এবং ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামা প্রভসিমরণ সিং প্রথম উইকেটে ৯৩ রান তুলে পঞ্জাবের রানের মুখ খুলে দিয়েছিলেন। ঝড়ের গতিতে চলতে থাকা পঞ্জাবের স্কোর বোর্ড সাময়িক ধাক্কা খায় প্রভসিমরণ সিং (৫৪) রান আউট হওয়ায়। তবে, সেটি বেশিক্ষণের জন্য নয় রিলি রসৌ (২৬) ছন্দে না থাকলেও বেয়ারস্টোকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন শশাঙ্ক সিং। বেয়ারস্টোও ছন্দে ফেরার মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ইডেনকেই। ইংলিশ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের অপরাজিত ৪৮ বলে ১০৮ রানের ইনিংস এবং শশাঙ্কের ২৮ বলে ৬৮ রানের অপরাজিত ইনিংস পঞ্জাবকে বাঁচিয়ে রাখল প্লে-অফের লড়াইয়ে। আঙুলে চোট পাওয়া মিচেল স্টার্কের পরিবর্তে এ দিন নাইট জার্সিতে অভিষেক ঘটে দুশমন্ত চামিরার। স্টার্কের হাত থেকে নাইট রাইডার্সে ক্যাপ পাওয়া শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার তিন ওভারে খরচ করেন ৪৮ রান। কেকেআর-এর সুনীল নারিন (১-২৪) ছাড়া বল হাতে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স করতে পারেননি কেউ।