কুয়েত’কে টাইব্রেকারে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে
ভারতীয় দল। মঙ্গলবারের নির্ধারিত এবং সংযোজিত সময়ে ম্যাচের ফলাফল অমিমাংসিত থাকার কারণে
টাইব্রেকার হয়। এই পর্বে ৫-৪ গোলে জেতে ভারত। কিন্তু এই দিনই ভারতীয় ফুটবলে শুরু হয়েছে
বিতর্ক। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পর ভারতীয় পতাকার বদলে জিকসন সিং-এর কাঁধে দেখা যায়
মনিপুরের পতাকা।
এই দিন জিকসনের কাঁধে ছিল মেইতেই
সম্প্রদায়ের সাতরঙা পতাকা। মণিপুরে গত দু’মাস ধরে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে। জিকসন নিজে মেইতেই সম্প্রদায়ের। তাই তিনি এই পতাকা নিয়ে
নিজের সম্প্রদায়ের কথা তুলে ধরতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে যে ভাবে
তিনি ফুটবলের মঞ্চে তা ব্যবহার করেছেন তা নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেকেই। তাঁদের মতে, এর ফলে অশান্তি নতুন
করে বাড়তে পারে। জিকসন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের অধিনায়ক ছিলেন। অনূর্ধ্ব-১৭
বিশ্বকাপ খেলেছেন। একমাত্র ভারতীয় ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপে গোল রয়েছে তাঁর। তাই সাফ জয়ের উৎসবের মধ্যে তিনি এটি না করলেই
পারতেন বলে মনে করছেন অনেকে।
বিষয়টি দেশবাসীর নজরে আসার পর সমাজমাধ্যমে
একটি পোস্ট করে জিকসন বলেছেন, “আমি কারও ভাবাবেগে আঘাত করতে চাইনি। আমার রাজ্য মণিপুর এখন
কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেটাই সবার সামনে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম।”
আরও পড়ুন: SAFF Championship Final 2023: গুঁড়িয়ে গেল কুয়েত, টাইব্রেকারে গুরপ্রীতের হাতে ভর দিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতলেন সুনীল'রা
আরও পড়ুন: এই মাসেই মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত-পাকিস্তান, কবে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মাঠে নামছেন সাই সুদর্শন-যশ ঢুল'রা
মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আসরে নেমেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে
বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে।
শুরু হয় দীর্ঘ অশান্তি। গত ৩ মে
মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস
ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর
বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। তার পর থেকে তা
ক্রমে বাড়তে থাকে। এই ঘটনায় গত দু’মাস ধরে
মণিপুরের এনএইচ-২ বা ইম্ফল-ডিমাপুর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল কুকিরা। পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণ করতে সর্বদল বৈঠক ডাকেন অমিত। এরপরেও
শান্তি ফেরেনি মণিপুরে। অবশেষে অমিত মণিপুরে শান্তি স্থাপনের
অনুরোধ করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধের পরে জাতীয় সড়ক থেকে অবরোধ
তুলে নেয় কুকিরা। দু’মাস পর ফের স্কুল খোলার নির্দেশ দিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন
সিং।