কৌশিক চক্রবর্তী
টিকিট মূল্যের বৈষম্যের জন্য মোহনবাগান ক্লাব রবিবাসরীয় ডার্বি বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কোনও টিকিটও বিক্রি করেনি তারা। যেই ম্যাচকে ঘিরে মাঠের বাইরে একাধিক নাটক তৈরি হয়েছে সেই ম্যাচে মশালধারীদের একরাশ লজ্জা উপহার দিয়ে তরতরিয়ে এগিয়ে চলা পালতোলা নৌকা পৌঁছে গেল লিগ শীর্ষে। ঘটি-বাঙালের লড়াইয়ে মোহনবাগান ৩-১ গোলে পরাজিত করল ইস্টবেঙ্গলকে।
এরই মাঝে ১৪ মিনিটে বাগান গোলরক্ষক ক্লেটন সিলভাকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু সেই লাল-হলুদের এগিয়ে যাওয়ার মক্ষম সুযোগ হাতছাড়া করেন লাল-হলুদ অধিনায়ক। ক্লেটন সিলভার শট বাম দিকে শরীর ফেলে রুখে দেন বিশাল কাইথ। গোলরক্ষকের এই অনবদ্য সেভই যেন মোহনবাগান ফুটবলারদের শরীরী ভাষা সম্পূর্ণ পাল্টে দেয়। প্রথম ২০ মিনিট মাঝমাঠের রাশ দুই দলের হাতে থাকলেও মোহনবাগানের মিডফিল্ডের কারিগরদের নৈপূন্য এবং আক্রমণভাগের আগ্রাসী ফুটবলের সামনে তাসের ঘরের মতো ধসে পড়ে ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্স। ২৭ মিনিটে দিমিত্রি পেত্রাতোসের শট প্রভসুখন সেভ দিলে ফিরতি বলে গোল করে যান জেসন কামিন্স। রক্তের স্বাদ পেয়ে যাওয়া বাঘ যে ভাবে বিভিষিকাময় হয়ে ওঠে তেমনটাই রূপ নিয়েছিল মোহনবাগানের অ্যাটাক। পরের পর আক্রমণে ছিন্নভিন্ন হয়ে উঠছিল ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স। দিমিত্রি পেত্রাতোস একাই কাঁপিয়ে দিচ্ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সকে। তাঁর তৈরি আক্রমণ থেকেই দ্বিতীয় গোল পায় মোহনবাগান। দিমিত্রির শট পোস্টের কোনে লেগে ফিরে আসে, ফিরতি বল তিন জন লাল-হলুদ ফুটবলারের সামনে দিয়ে তিনি বাড়িয়ে দেন দ্বিতীয় পোস্টের দিতে লিস্টন কোলাসোকে। অরক্ষিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা লিস্টন গোল করতে কোনও রকম ভুল করেননি। মোহনবাগানের তৃতীয় গোলটি ইস্টবেঙ্গলের উপহার। অযাচিত ভাবে প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে লিস্টনকে ফাউল করেন নন্দ কুমার। পেনাল্টি দিতে ভুল করেননি রেফারি। ইস্টবেঙ্গলের ক্লেটন সিলভা যেই ভুল করেছিলেন সেই একই ভুল করেননি দিমিত্রি পেত্রাতোস। ঠান্ডা মাথায় গোল করে যান দিমিত্রি।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফেরার চেষ্টা করে ইস্টবেঙ্গল। অজয় ছেত্রীর পরিবর্তে পিভি বিষ্ণু এবং লালচুংনুঙ্গার পরিবর্তে সায়ন ব্যানার্জি নামার পর ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণে হারানো বারুদ ফিরে আসে। ৫৩ মিনিটে ক্লেটন সিলভার পাস বক্সের মধ্যে চেষ্ট ট্র্যাপ করে বাম পায়ের শটে বিশ্বমানের গোল করে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে ব্যবধান করান সাউল ক্রেস্পো। এই গোলের অল্প সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় গোল শোধ করার সুযোগ চলে এসেছিল লাল-হলুদের কাছে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান বিশাল, ক্লেটনের হেড বাম হাত বাড়িয়ে রুখে দেন বিশাল কাইথ। ৬৯ মিনিটে পিভি বিষ্ণুর ব্যাকভলি অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ঠ হয়ে জালের উপর আছড়ে পরে। ম্যাচে ফিরে আসার চেষ্টায় অন্তত দ্বিতীয়ার্ধে কোনও খামতি রাখেনি লাল-হলুদ। নামিয়ে দেওয়া হয় জার্মান স্ট্রাইকার ফেলিসিওকেও। কিন্তু তাতে শেষ পর্যন্ত লাভ কিছু হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ইস্টবেঙ্গলকে নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত করেন রেফারি। নিজেদের বক্সে অভিষেক সূর্যবংশী পিভি বিষ্ণুকে অফ দ্য বল ফাউল করেন। সিমবনে সরাসরি এসে মারলেও রেফারি তেজন নাগভেঙ্কর কোনও পেনাল্টি দেননি, উল্টে কার্ড দেখান বিষ্ণুকে। ভারতীয় রেফারিদের মান যত দিন যাচ্ছে ততই নিম্নগামী। ফেডারেশন কিংবা এফএসডিএল-এর কোনও নজর নেই রেফারিং-এর দিকে। উল্টে কিছু বলা হলে শো-কজ কিংবা ফাইনের জুজু রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতয়ী ফুটবলে যতই লগ্নি হোক, ভাল দল তৈরি হোত- যাঁদের হাতে খেলা নিয়ন্ত্রণের ভার তাঁরাই যদি নিম্নমানের হন সেখানে দেশের ফুটবলের উন্নতি আরও কঠিন হয়ে পড়ে।
✔ Mining 49 111 $. Withdrаw >> https://forms.yandex.com/cloud/65e6228402848f1ab3edd8d4?hs=c990f246a901d88f091ddb0aeda66315& ✔
Mar 11, 2024 15:19 [IST]