দীর্ঘ ১৯ বছর পর ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠল ইস্টবেঙ্গল। ময়দানের প্রাচীন প্রবাদ, 'পিছিয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গল, খোঁচা খাওয়া বাঘের থেকেও ভয়ঙ্কর'। মঙ্গলবার এটাই যেন বিপক্ষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা। সেমি ফাইনালে নর্থইস্ট ইউনাইটেড'কে হারিয়ে অত্যন্ত খুশি লাল-হলুদের স্প্যানিশ হেডস্যার।
ম্যাচের বয়স তখন ৭০ পেরিয়ে ৮০ মিনিটের দিকে গড়াচ্ছে, এমনই সময় 'হো, হো...' একটা শব্দ গোটা গ্যালারিতে ছড়িয়ে পড়ল! পরিবর্তন এল স্কোরবোর্ডেও। ৭৭ মিনিটের মাথায় ব্যবধান(১-২) কমালেন নাওরেম মহেশ। এই দিন শেষ ৩০ মিনিট নর্থইস্ট'কে কার্যত দমিয়ে রাখলেন সিভেরিও-ক্রেসপো'রা। বল দখল থেকে উইং আক্রমণ এবং গোললক্ষ্য করে শট নেওয়া- সবকিছুতেই বিপক্ষকে টেক্কা দিচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল। এই সময়টা নিজেদের স্নায়ু-চাপ কমাতে সময় নষ্টের খেলা শুরু করে দেয় উত্তর-পূর্ব ভারতের দলটি। কিন্তু তাদের এই স্ট্র্যাটেজি ইস্টবেঙ্গলের সামনে টিকল না! নির্ধারিত সময়ের পর ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে হেডে দুর্ধর্ষ গোল করে ইস্টবেঙ্গল'কে লড়াইয়ে ফেরালেন 'ডার্বি বয়' নন্দ কুমার। স্কোরবোর্ডে জ্বল-জ্বল করে উঠল ২-২। এরপর টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলের ব্যবধানে জিতল লাল-বাহিনী। এই পর্বেও শেষ অর্থাৎ জয়সূচক গোলটি করেন নন্দ।
২০০৪ সালের পর ফের ডুরান্ডের খেতাব জয়ের দৌড়ে নাম লেখাল মশাল বাহিনী। সেমি ফাইনালের মতো ম্যাচে রোমাঞ্চিত এই জয় স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তি দিয়েছে, তা সাংবাদিক বৈঠকে এসেই বুঝিয়ে দিলেন কোচ কার্লেস। মুখে সরল হাসি নিয়ে তিনি বললেন, "এটা প্রাক মরসুমের প্রস্তুতি। তবে আমরা ইতিমধ্যেই পাঁচটি কঠিন দলের বিরুদ্ধে খেলেছি। এই দিন ম্যাচটা যে ভাবে শেষ হল, তাতে আমি খুব খুশি। 'যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ', এটাই আজ আমরা প্রমাণ করে দিলাম। এই ইস্টবেঙ্গল আর আগের মতো নেই। আমরা লড়াই করে জিতেছি। তবে এবার আর আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। ফাইনালের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। ১৯ বছর পর ইস্টবেঙ্গল'কে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে তুলতে পেরে আমি খুশি।"