সীতা অপহরণ নিয়ে কুম্ভকর্ণ রাবণকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তুমি বিশ্বমাতাকে
অপহরণ করেছে। রামায়ণে তিন ভাই রাবণ, বিভীষণ ও কুম্ভকর্ণ ব্রহ্মাকে খুশি করার জন্য
তপস্যা করছিলেন। তাঁদের তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মা আবির্ভূত হলেন। রাবণকে বর দেওয়ার
পর কুম্ভকর্ণকে দেখে ব্রহ্মা চিন্তিত হয়ে পড়লেন। তাঁর উদ্বেগের কারণ ছিল যে কুম্ভকর্ণ
যদি প্রতিদিন পর্যাপ্ত খাবার খান, তাহলে অচিরেই সমগ্র সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে যাবে। এই কারণে
ব্রহ্মা সরস্বতীর মাধ্যমে কুম্ভকর্ণের বুদ্ধি বিভ্রান্ত করেছিলেন। কুম্ভকর্ণের জিহ্বাগ্রে
অধিষ্ঠিত হলেন বীনাপাণি, ফলে দেবী কুম্ভকর্ণকে দিয়ে ব্রহ্মার কাছে ৬ মাস ঘুমানো ও ৬
মাস জেগে থাকার বর চাওয়ালেন।
রাবণভ্রাতা কুম্ভকর্ণ অত্যন্ত শক্তিশালী ছিলেন, তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করার মতো যোদ্ধা সারা পৃথিবীতে ছিল না। তিনি সুরাসক্ত হয়ে ছয় মাস ঘুমাতেন। কুম্ভকর্ণ
যখন জেগে উঠলেন, তখন ত্রিভুবনে হৈচৈ হল।
আরও পড়ুন: এই পরিবারে নামেই রয়েছে নোবেল জয়ের রেকর্ড, জেনে নিন স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে কত পুরস্কার জিতেছেন
আরও পড়ুন: আপনি কি জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কিত এই ১০টি তথ্য সম্পর্কে জানেন
শ্রীরাম ও রাবণের বাহিনীর মধ্যে যখন প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছিল তখন কুম্ভকর্ণ
ঘুমিয়ে ছিলেন। রাবণের বাহিনীর বহু বীর মারা গেলে কুম্ভকর্ণকে জাগ্রত হওয়ার নির্দেশ
দেওয়া হয়। নানা ব্যবস্থার পর যখন কুম্ভকর্ণ জেগে ওঠেন এবং জানতে পারেন যে রাবণ সীতাকে
অপহরণ করেছে। এটা জেনে তাঁর খুব খারাপ লাগল। কুম্ভকর্ণ দুঃখ পেয়ে রাবণকে বললেন, “আপনি
জগৎ মাতাকে অপহরণ করেছেন, আর এখন আপনার কল্যাণ চান?” এর পর কুম্ভকর্ণ রাবণকে নানাভাবে
বুঝিয়ে বলেন যে, তিনি যেন শ্রীরামের কাছে ক্ষমা চান এবং সীতাকে নিরাপদে সসম্মানে ফিরিয়ে
দেন। যাতে রাক্ষস পরিবার ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা পায়। এত বোঝানোর পরও রাবণ রাজি হলেন
না। শেষ পর্যন্ত ভ্রাতৃকর্তব্য মেনে কুম্ভকর্ণ দাদার পাশে থেকে শ্রীরামের সঙ্গে যুদ্ধ
করেন এবং নিহত হন।