পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে আর যে কোনও পোশাকে প্রবেশ করা
যাবে না। সেবায়েতদের জন্য আগেই পোশাকবিধি চালু হয়েছিল। এবার ভক্তদের জন্যও
পোশাকবিধি চালু করল জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ। এই বিধি অনুসারে আর টর্ন জিন্স, বারমুডা,
স্লিভলেস পোশাক পরে মন্দিরে প্রবেশ করা যাবে না। মন্দিরে প্রবেশের
জন্য পরতে হবে সভ্য পোশাক। ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে
জানিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। তবে এখনই এই নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে না, নতুন বছর থেকে এই নিয়ম চালু করা হবে।
শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের প্রধান রঞ্জন কুমার দাস
বলেন,
“মন্দিরের ঐতিহ্য ও পবিত্রতা বজায় রাখা আমাদের দায়িত্ব।
দুর্ভাগ্যবশত, অনেককে অন্যের ধর্মের ভাবাবেগের তোয়াক্কা না
করেই মন্দিরে প্রবেশ করেন।”
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে আরও বিভিন্ন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা
জারি রয়েছে।পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে হিন্দু ব্যতীত আর কোনও ধর্মাবলম্বী মানুষের
প্রবেশাধিকার নেই। মন্দিরের সিংহদ্বারের কাছে ছোট পাথরে পাঁচটি ভাষায় (হিন্দি, ওড়িয়া,
বাংলা, ইংরেজি এবং উর্দু) স্পষ্ট ভাবে তা লেখা
রয়েছে।বছরে এক বার জাতি, ধর্ম, বর্ণ
নির্বিশেষে সকলেই পুরীর জগন্নাথের দর্শন করতে পারেন। আর তা হল রথযাত্রার সময়।
জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ গর্ভগৃহ থেকে বাইরে বার
করে আনা হয়। আর সেই সময় সকলেই তা দর্শন করতে পারেন।
শোনা যায়, বিভিন্ন সময়ে পুরীর জগন্নাথ
মন্দিরে আক্রমণ চালিয়েছে বহিরাগত শক্তিরা। সম্পদ চুরির পাশাপাশি মন্দির চত্বরের
ক্ষতিও করা হয়েছে বার বার। মন্দিরে যত বার হামলা করা হয়েছে তত বারই বিভিন্ন
স্থানে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ লুকিয়ে রাখা
হয়েছে। মন্দির থেকে দূরে থাকতে হয়েছে জগন্নাথকে। আর সেই কারণেই মন্দির পরিচালনা
কমিটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, মন্দির
প্রাঙ্গণকে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত রাখার জন্য অহিন্দুদের মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করতে
দেওয়া হবে না।
জুতো, ছাতা, মোবাইল ফোন,
যে কোনও বৈদ্যুতিন যন্ত্র, ক্যামেরা, অস্ত্র- গোলাবারুদ এবং চামড়ার
জিনিসপত্র নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করাও কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। মন্দির চত্বরে মদ্যপান,
ধূমপান এবং অন্যান্য নেশা করা নিষিদ্ধ। জগন্নাথ মন্দির চত্বরে কোনও
রকম রান্না করা খাবার নিয়ে প্রবেশ করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
জগন্নাথ মন্দির
প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য কোনও প্রবেশমূল্য লাগে না। আর সেই কারণে মন্দিরে প্রবেশের
জন্য কাউকে কোনও প্রবেশমূল্য না দেওয়ার জন্য সতর্ক করেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।