গত সোমবার
২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদি। রামলালার মূর্তির উচ্চতা ৫১ ইঞ্চি। প্রায় ২০০ কিলোগ্রাম ওজন এই
মূর্তির। শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের তরফে জানানো হয়েছে যে, প্রায় ৩০০ কোটি বছরের পুরনো কষ্টিপাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মূর্তি।
কর্নাটকের
মাইসুরু জেলায় পাওয়া যায় কষ্টিপাথর। এই শিলার রং কুচকুচে কালো। কৃষ্ণের গায়ের রঙের
সঙ্গে মিল থাকায় এই শিলার নাম কষ্টিপাথর রাখা হয়েছে।
কষ্টিপাথরের
মূল উপাদান ক্যালসাইট। ক্যালসিয়াম কার্বনেটের সবচেয়ে স্থায়ী রূপ (পলিমর্ফ) এটি।
রামমন্দিরের
গর্ভগৃহে রামলালার যে মূর্তিটি স্থাপন করা হয়েছে তা তৈরি করেছেন কর্নাটকের ভাস্কর
অরুণ যোগীরাজ। ছ’মাস ধরে কষ্টিপাথর দিয়ে রামলালার মূর্তিটি খোদাই
করেছেন তিনি।
হিন্দু
শাস্ত্র অনুযায়ী শালগ্রাম শিলাকে ভগবান বিষ্ণুর প্রতিভূ হিসাবে মানা হয়। তাই
প্রথমে ঠিক হয়েছিল, শালগ্রাম শিলা দিয়ে নির্মাণ করা হবে রামলালার মূর্তি।
সেই মতো
নেপালের কালীগণ্ডকী জলপ্রপাত থেকে তুলে আনা ওই জীবাশ্ম প্রস্তর দিয়েই তৈরি করা হবে
রামের বিগ্রহ, পরিকল্পনা ছিল এমনটাই। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৫
টন ওজনের দু’টি শালগ্রাম শিলাখণ্ড নেপাল থেকে অযোধ্যায় নিয়ে আসা
হয়।
কিন্তু শালগ্রাম শিলা মূর্তি তৈরির কাজে লাগেনি।
কারণ, খোদাইয়ের সময় বার বার সেই পাথর ভেঙে যাচ্ছিল। পরে ঠিক
হয় কালো পাথরের মূর্তি তৈরি হবে।
রামলালার
মূর্তি নির্মাণে শালগ্রাম শিলা ব্যবহার না হলেও তা রামমন্দির চত্বরে রাখা হয়েছে।
মাইসুরুর
শিল্পীর তৈরি বিগ্রহ গর্ভগৃহে স্থান পেলেও সেই দৌড়ে ছিল আরও দুই বিগ্রহ। গর্ভগৃহে
স্থান না পেলেও বিগ্রহ দু’টি মন্দিরেই রাখা হয়েছে। তার মধ্যে একটি বিগ্রহ তৈরি করেছেন রাজস্থানের শিল্পী সত্যনারায়ণ পাণ্ডে। শ্বেতপাথরের
তৈরি বিগ্রহের এক হাতে সোনার তির, অন্য হাতে সোনার ধনুক। বিগ্রহের ঠোঁটে
গোলাপি আভা। ফুটে উঠেছে শিশুসুলভ হাসি। দৌড়ে থাকা অন্য একটি বিগ্রহ তৈরি করেছেন
কর্নাটকের ভাস্কর গণেশ ভট্ট। সেটিও গর্ভগৃহে স্থান পায়নি।
ভাস্কর অরুণ
যোগীরাজ শুধু রামলালার মূর্তিই নয়, কেদারনাথের ১২ ফুট লম্বা আদি
শঙ্করাচার্যের মূর্তি এবং ইন্ডিয়া গেটের কাছে অমর জওয়ান জ্যোতির পিছনে ৩০ ফুট
লম্বা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিও গড়েছেন।