দক্ষিণ কলকাতার রুবি মোড়ে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার দুর্গাপুজোর অসুরের
চেহারা ঘিরে সপ্তমী থেকে গোটা রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক। উত্তপ্ত হচ্ছে বাংলার
রাজনীতিও।
দেখা গিয়েছে, যে দুর্গার মূর্তি পুজো করা হচ্ছে এই মন্ডপে, সেই মূর্তিতে
মহাত্মা গান্ধির আদলে তৈরি করা হয়েছে মহিষাসুরকে। আর এতেই ঘটছে বিপত্তি। এরপরই এক প্রকার
বাধ্য হয়ে সপ্তমীর রাতে চুল আর গোঁফ লাগিয়ে চেহারা বদলে দিয়ে যায় পুলিশই। দাবি পুজো
উদ্যোক্তাদের। তবে এই পরিবর্তন উদ্যোক্তাদের পছন্দ না হওয়ার দরুণ প্রতিবাদে পুজোমন্ডপের
সামনেই অষ্টমীতে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই
থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, আইনি পথেই তার মোকাবিলা করা হবে।
রবিবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল রুবি পার্কের অখিল ভারতীয় হিন্দু
মহাসভার দুর্গাপুজোর ছবি। তাতে দেখা গিয়েছে, ওই পুজোর দুর্গা প্রতিমার সঙ্গে যে অসুর
মূর্তি রয়েছে তার টাকমাথা এবং চোখে চশমা। পাশাপাশি, মূর্তিটিকে পরানো হয়েছে সাদা ধুতিও।
অভিযোগ উঠতে শুরু করে, ওই পুজোয় যে অসুর মূর্তি তৈরি করা হয়েছে তার সঙ্গে মহাত্মা গান্ধির
চেহারার দারুণ মিল রয়েছে।
আরও পড়ুন: মহানবমীতে কোন রাশির কেমন কাটবে? কী বলছে জ্যোতিষ
আরও পড়ুন: Durga Puja 2022: পুজোর সময়ে বৃষ্টির ভ্রুকুটি তো চলছেই, এই পদ্ধতিতে মেক আপ ঘাঁটবে না কখনও
হিন্দু মহাসভার সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী এই প্রসঙ্গে এক সংবাদমাধ্যমকে
দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “নো অবজেকশন নিয়ে পুজো করা হচ্ছে। তবে গান্ধিকে অসুর রূপে
দেখানো হয়নি। এই মিল নিতান্তই কাকতালীয়। এটাও আবার অস্বীকার করছি না যে, মোহনদাস কর্মচাঁদ
গান্ধিকে যে জাতির জনক বা জাতির পিতা বলা হয় ঠিকই, কিন্তু আমরা তা মানি না। আমরা নেতাজিকে
শ্রদ্ধা করি।” তিনি আরও বলেন,
“আমি তো প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করেছি যে, আপনি তো বলছেন, গান্ধীর অনুপ্রেরণায় আট
বছর সরকার চালিয়েছেন, এটা অবিশ্বাস্য। তার কারণ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম পুলিশের
কাছে তুলে দেওয়ার জন্য যে মানুষটির নাম জড়িয়েছে, কংগ্রেস থেকে যে ভাবে নেতাজিকে বিতাড়িত
করা হয়েছে, ভগৎ সিংহের ফাঁসির ক্ষেত্রে গান্ধির অত্যন্ত নক্কারজনক ভূমিকা রয়েছে, সেই
মানুষটি জাতির জনক কেন হতে যাবে।”
পুলিশের এসে চুল আর গোঁফ লাগিয়ে দিয়ে যাওয়া নিয়ে সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী
বলেন, ‘‘সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ কসবা থানার
পুলিশ এসে জোর করে অসুরের মূর্তিতে চুল লাগিয়ে দিয়েছে। না হলে পুজো বিসর্জন দিয়ে দিতে
হবে বলে পুলিশ আমাদের জানিয়েছিল। ওঁদের উপর নাকি কেন্দ্র থেকে প্রচুর চাপ দেওয়া হচ্ছে।
লালবাজারেও নাকি চাপ দেওয়া হয়েছে। আমার কাছেও ফোন এসেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে।
সেই ফোনে বলা হয় যে গান্ধির ব্যাপারে এ সব বিতর্ক করাই যাবে না। পাশাপাশি বলা হয়েছে,
আমি গ্রেফতার পর্যন্ত হতে পারি। আমি ওঁদের পাল্টা বলেছি, গ্রেফতার হলে হব। আমি সত্যি
কথা বলতে ভয় পাই না।”