হিন্দু ধর্মে জ্যোতির্লিঙ্গকে বিশেষ
গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জ্যোতির্লিঙ্গের
আভিধানিক অর্থ হল 'আলোকিত লিঙ্গ', ভারতে দ্বাদশ প্রধান জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে। এই
জ্যোতির্লিঙ্গগুলি দেখেই ভক্তদের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। ভারতের সমস্ত পবিত্র
স্থানে অবস্থিত দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে সোমনাথ জ্যোতির্লিঙ্গের একটি
গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। আসুন জেনে নিই এই মন্দির সম্পর্কিত কিছু বিশেষ জিনিস।
আরও পড়ুন: sawan month 2023: শ্রাবণ মাসে বাড়িতে আনুন শিবের এই ছবি, আর্থিক সমস্যা দূর হবে, সংসারে ঘটবে অর্থের আগমন
আরও পড়ুন: Gadura Purana: কেন মানুষের আয়ু কমে যাচ্ছে, গরুড় পুরাণে এর ৫টি কারণের উল্লেখ করা হয়েছে
এই জ্যোতির্লিঙ্গটি গুজরাটের
সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের ভেরাভাল বন্দরে অবস্থিত। ভারতের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে
এটিই প্রথম জ্যোতির্লিঙ্গ। মহাভারত, শ্রীমদ্ভগবতগীতা, স্কন্দপুরাণ ও
ঋগ্বেদে এর মহিমা বর্ণিত হয়েছে। অগণিত ভক্তের বিশ্বাসের কেন্দ্রস্থল সোমনাথ
মন্দির। সোমনাথ মন্দির সম্পর্কে একটি পৌরাণিক বিশ্বাস রয়েছে যে এই মন্দির
চন্দ্রদেব নিজেই তৈরি করেছিলেন। ঋগ্বেদে সোমনাথ মন্দিরের উল্লেখ রয়েছে।
এই মন্দিরের দক্ষিণ দিকে সমুদ্রের
তীরে অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্তম্ভ রয়েছে। যাকে বলা হয় বান স্তম্ভ, এর উপরে একটি তীর বসিয়ে দেখানো হয়েছে যে সোমনাথ মন্দির
এবং দক্ষিণ মেরুর মধ্যে ভূমির কোনও অংশই নেই। এটি প্রাচীন ভারতীয় জ্ঞানের একটি
বিস্ময়কর প্রমাণ। বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ এই স্থানে দেহত্যাগ
করেছিলেন।
স্কন্দপুরাণ অনুসারে, চন্দ্রদেব প্রজাপতি দক্ষের ২৭ জন কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু দক্ষকন্যা
রোহিণীর প্রতি তাঁর ভালবাসা ছিল অপরিসীম। এই কারণে, বাকি ছাব্বিশ রানিরা অবহেলিত ও অপমানিত বোধ করতে লাগলেন। এই বিষয়ে তাঁরা
দক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। কন্যাদের কষ্ট দেখে প্রজাপতি চন্দ্রদেবকে বোঝানোর
চেষ্টা করলেও চাঁদ বুঝতে চাইলেন না। ফলে দক্ষরাজ চন্দ্রদেবকে অভিশাপ দিলেন যে তিনি
ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হবেন।
এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য
ব্রহ্মদেবের নির্দেশে প্রভাসক্ষেত্রে চন্দ্র ভগবান শিবের কঠোর তপস্যা করেন।
চন্দ্রদেব শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করে পুজো করেন। চন্দ্রের কঠোর তপস্যায় খুশি হয়ে ভগবান
শিব তাকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করেন এবং অমরত্বের বর দেন। এই অভিশাপ এবং বরের কারণে, চাঁদ ১৫ দিন বাড়তে থাকে এবং ১৫ দিন হ্রাস পায়।
কথিত আছে, অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, চন্দ্র তাঁর তৈরি শিবলিঙ্গে থাকার জন্য শিবের কাছে
প্রার্থনা করেছিলেন। তখন থেকেই এই শিবলিঙ্গটি সোমনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ হিসেবে পূজিত
হতে শুরু করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে সোমেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শন ও পুজো করলে
সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই জায়গাটি 'প্রভাস পট্টন' নামেও পরিচিত।