অনেক
দেব-দেবী বজরংবলী হনুমানকে বর দিয়েছেন। দেবী সীতা
একাই মহাবলীকে আটটি বর দিয়েছেন।
ইন্দ্র ও সূর্যের মতো দেবতারাও প্রসন্ন হয়ে বহুবার বজরংবলীকে আশীর্বাদ করেছেন। ব্রহ্মদেব হনুমানকে তিনটি বর দিয়েছিলেন, যার মধ্যে একটি বর
এমন ছিল যে ব্রহ্মাস্ত্রও তাঁর কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। পবনপুত্রের এমন অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে যে তিনি
মশার থেকে ছোট এবং হিমালয়ের থেকেও বড়
আকার ধারণ করতে পারেন। তাঁর ক্ষমতার মধ্যে গোপন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে,তাই মহাবীর হনুমানকে
রহস্যময় বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন: Rath Yatra 2023: আজ রথযাত্রা উপলক্ষে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন পুরীর মন্দিরের ভোগে থাকা সুস্বাদু ডালমা
১. হনুমানের ঘামের রহস্য: হনুমানের ঘামের রহস্য খুবই
আশ্চর্যজনক। তার ঘাম থেকে একটি পুত্র সন্তান হয়েছিল। আসলে হনুমান নিজের লেজের আগুন নিভিয়ে এবং সারা লঙ্কা পুড়িয়ে দেওয়ার পর শরীরকে ঠান্ডা করতে সমুদ্রে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তখন একটি কুমির তার
শরীর থেকে ঝরে পড়া ঘাম গিলে ফেলে। সেই ঘামের
শক্তিতে মকরধ্বজ নামে এক পুত্রের জন্ম হয়।
আরও পড়ুন: সারাদিন খাবার খেয়ে সন্ধ্যাবেলায় যোগা করেন, ঠিক করছেন তো?
২. বজরংবলীর ১০৮টি নাম: হনুমানের ১০৮টি নাম রয়েছে। সংস্কৃতে প্রতিটি নামের
অর্থ তাঁর জীবনের অধ্যায়ের সারমর্ম বলে
মনে করা হয়। এই কারণেই শুধু মহাবীরের নাম জপ
করলেই আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
৩. ভগবান রামের আগে
হনুমানের জন্ম হয়েছিল: হনুমান কর্ণাটকের কোপাল জেলায় অবস্থিত হাম্পির কাছে একটি গ্রামে
জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ঋষি মাতঙ্গের আশ্রমে
জন্মগ্রহণ করেন। ভগবান শ্রীরামের জন্মের আগে হনুমানজির জন্ম হয়। চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে বজরংবলীর জন্ম
হয়েছিল।
৪. কল্পের শেষ অবধি
হনুমান দেহধারণ করেই থাকবেন: হনুমান ইন্দ্রদেবের কাছ থেকে স্বেচ্ছামৃত্যুর বর পেয়েছিলেন। ভগবান শ্রী
রামের নির্দেশ অনুসারে, তাঁকে কলিযুগের শেষ অবধি বেঁচে থাকতে হবে। ভগবান রামের বর
অনুসারে কল্পের শেষে তিনি তাঁর সাযুজ্য পাবেন। সীতার বর অনুসারে বজরংবলী চিরঞ্জীবি। রঘুবীর শ্রীমদ ভাগবত অনুসারে, হনুমান কলিযুগে
গন্ধমাদন পর্বতে অবস্থান করেন।
৫. হনুমান হলেন মাতা
জগদম্বার সেবক: শ্রী রামের পাশাপাশি হনুমানকে
মাতা জগদম্বার সেবক বলে মনে করা হয়। বলা হয়, মা
যখন হাঁটেন, বজরংবলী তাঁর সামনে হাঁটেন এবং ভৈরব মহাদেব দেবীর পিছনে। এই কারণেই যেখানে দেবীর মন্দির রয়েছে সেখানে
অবশ্যই হনুমানজি ও ভৈরবজির মন্দির রয়েছে।
৬. ব্রহ্মাস্ত্রও
প্রভুর উপর অকার্যকর: ব্রহ্মাদেব হনুমানকে
তিনটি বর দিয়েছিলেন, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং শক্তিশালী বর ছিল যে ব্রহ্মাস্ত্র
দ্বারা মহাবলী প্রভাবিত হবেন না। মহাবিশ্বে ঈশ্বরের পরে যদি কোনও শক্তি থেকে থাকে তবে তা মহাবীর হনুমান বলে মনে করা হয়। বিক্রম
বজরংবলীর সামনে কোনও মায়াবী শক্তি দাঁড়াতে পারে না।
৭. সর্বপ্রথম হনুমান রামায়ণ লিখেছিলেন: হনুমান নিজের নখ দিয়ে হিমালয় পর্বতে রামায়ণ খোদাই করেছিলেন। কিন্তু তুলসীদাস
যখন বজরংকে তাঁর লেখা রামায়ণ
দেখাতে সেখানে যান, তখন হনুমান লিখিত রামায়ণ দেখে তুলসীদাস
দুঃখ পান। কারণ সেই
রামায়ণ ছিল অতীব সুন্দর। হনুমানের রামায়ণের পাশে
ফিকে হয়ে গিয়েছিল তুলসিদাসী রামায়ণ। মহাবীর যখন তুলসীদাসের মনের কথা
জানতে পারলেন, সঙ্গে সঙ্গে নিজের লিখিত রামায়ণ মুছে দিলেন।