উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেরাদুনের কাছে অবস্থিত মুসৌরি হিল
স্টেশন এতই সুন্দর যে গেলে আর ফিরে আসতে মন চায় না। অথচ এই পাহাড়ের রানির বুকে একসময় ভারতীয়দের
হাঁটাও নিষিদ্ধ ছিল। এখানে ব্রিটিশরা বড় বড় বোর্ডে লিখেছিল- 'ইন্ডিয়ানস
নট অ্যালাউড'।
আসুন জেনে নিই এই হিল স্টেশন সম্পর্কিত মজার তথ্য।
মুসৌরিতে শুধুমাত্র ব্রিটিশরা বসতি স্থাপন করেছিল।
ইতিহাসবিদদের মতে, ১৮২৩
সালে ব্রিটিশ অফিসার এফ জে শোর পর্বতারোহণ করতে গিয়ে এই স্থানে পৌঁছেছিলেন। তিনি
যখন এখান থেকে দুন উপত্যকার সুন্দর ও বিস্ময়কর দৃশ্য দেখলেন, তখন শোর বিস্মিত
হয়ে গেলেন। তিনি শিকারের জন্য এখানে একটি মাচা তৈরি করেছিলেন। এরপর থেকে এফ জে
শোর প্রায়ই মুসৌরি আসতেন। কিছুকাল পর ব্রিটিশরা এখানে প্রথম ভবন নির্মাণ করে।
ল্যান্টোর মার্কেট ১৮২৮ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং ১৮২৯ সালে মুসৌরিতে প্রথম দোকান
খোলা হয়েছিল। ১৯২৬-৩১ সালের মধ্যে একটি পাকা রাস্তাও মুসৌরিতে তৈরি হয়ে যায়। এর
ফলে এখানে মানুষের চলাচল বেড়ে যায়।
ভারতীয়রা এই জায়গায় হাঁটতেও পারত না
আজকে সবাই মুসৌরিতে বেড়াতে গেলেও, ব্রিটিশ
আমলে ভারতীয়দের মুসৌরিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হত না। এখানে মল রোডে ব্রিটিশ
কর্মকর্তারা দেওয়ালে লিখেছিলেন- 'ইন্ডিয়ানস অ্যান্ড ডগস নট অ্যালাউড'। অনেকেই এই
লেখের বিরোধিতা করেছিলেন। প্রথম এই নিয়ম ভাঙেন পণ্ডিত মতিলাল নেহেরু। উল্লেখ্য, নেহরু
পরিবার মুসৌরি বড় ভালবাসতেন। ১৯২০-১৯৪০ সময়কালে কংগ্রেস পরিবারটির সদস্যরা
প্রায়ই এখানে আসতেন।
কেন নাম মুসৌরি
মুসৌরিতে সর্বাধিক মনসুর প্রজাতির গাছ জন্মায়, তাই একে একসময়
মনসুরি বলা হত যা এখন মুসৌরিতে পরিণত
হয়েছে। আপনি যদি মুসৌরির বুকে হাঁটতে চান তবে আপনি ট্রেন, বাস, গাড়ি এবং
ফ্লাইট মারফৎ এখানে পৌঁছাতে পারেন। মুসৌরির নিকটতম বিমানবন্দর হল জলি গ্রান্ট
বিমানবন্দর, যা
দেরাদুনে অবস্থিত। আপনি ট্রেনে দেরাদুন পৌঁছেও এখানে আসতে পারেন। দিল্লি থেকে অনেক
বাস সরাসরি মুসৌরিতে আসে।