সালটা ১৯৫৩, সিনেমা তখনও প্রবল
জনপ্রিয়তা পায়নি মানুষের মধ্যে। নাটক-যাত্রা কিংবা থিয়েটারই ছিল সাধারণ মানুষের বিনোদনের
প্রধান উৎস। বিশেষ করে তখনকার মানুষের নাটকের প্রতি আগ্রহ ছিল অপরিসীম। এই সময়েই জমিদার
বিরোধী ৫৯টি নাটক নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল বিধান রায়ের সরকার।
১৯৫৩ সালে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিলেও
তাতে বিধান রায়ের খুব একটা সায় ছিল না। কিন্তু কংগ্রেসের মধ্যে তখন বেশ প্রভাবশালী
জোরদার জমিদার লবি। বর্তমানে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়াণা বা রাজস্থানের মতো তাদের
ক্ষমতা। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিধানসভায় প্রশ্ন তোলেন মণিকুন্তলা সেন।
তর্কাতর্কি শেষ পর্যন্ত মু্খ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় এবং তৎকালীন বাংলার বিরোধী
দল নেতা জ্যোতি বসু পর্যন্ত গড়ায়।
আরও পড়ুন:National Doctors' Day: শুধু ডাক্তারিতে পাণ্ডিত্যই নয়, 'সেন্স অফ হিউমরে' বিধান রায়ের তুলনা ছিলেন তিনি নিজেই
আরও পড়ুন:National Doctor's Day: 'আপনি আমাকে রয়্যাল হাইনেস বলে ডাকতে পারেন- হাসতে হাসতে এই কথা কাকে বলেছিলেন ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায় তা জানেন
বিধার রায়কে হিটলারের সঙ্গে তুলনা
করে জ্যোতি বসু বলেন, “আপনি হিটলারের মতো আচরণ
করছেন।” জবাবে বিধানচন্দ্র রায় বিধানসভায়
বলেছিলেন, “হ্যাঁ, হিটলার স্ট্যালিনের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।”
কংগ্রেসের
মূল প্রতিপক্ষ সেই সময় বামফ্রন্ট হলেও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের কোনও নেতাকে কটূ
ভাষায় আক্রমণ করতেন না বিধানচন্দ্র রায়। বরং আগবাড়িয়ে তাঁর সঙ্গে অন্যায় মস্করা
করলে তার জবাব দিতেন হাসি মুখে কিন্তু তা গিয়ে লাগত সরাসরি হৃদয়ে। প্রবল ঈশ্বর
বিশ্বাসী বিধানচন্দ্র রায় মকর সংক্রান্তীর সময়ে একবার গঙ্গাসাগর গিয়েছিলেন স্নান
করতে। বিধান সভার অধিবেশন শুরু হতেই এক সিপিআই নেতা তাঁকে খোঁচা মেরে জিজ্ঞাসা
করেন, “মশাই কি গঙ্গাসাগরে সারা জীবনের
পাপ রেখে এলেন নাকি।” বিধান বাবু অনুনকরণীয় ভঙ্গিমায়
হাসতে হাসতে জবাব দেন, “হ্যাঁ রেখে এলাম, তোমরা
মেখে নিও।” এমনই ছিলেন বিধানচন্দ্র রায়।