গগন চৌধুরী সিঁড়ি দিয়ে
নামতে নামতে স্ত্রীর সঙ্গে প্রচন্ড ঝগড়া করছেন। রেগেমেগে বেরিয়ে গেলেন স্ত্রী। গগন
চৌধুরী বসে পড়লেন সিঁড়িতে, কাঁধে তোয়ালে, গালে শেভিং ক্রিম, আচমকায় বাঁ হাতটা উঠে
এল বুকের কাছে। ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ছবির এই দৃশ্যের কথা উত্তমপ্রেমীরা কোনওদিনও ভুলতে
পারবেন না। বলা হয় ওই সময়েই আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হন মহানায়ক। দ্রুত হাসপাতালে
ভর্তি করা হয় তাঁকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তাঁর ডায়েরির পাতায় ২৪ জুলাইয়ের পর আর
কোনও কাজের কথা লেখা ছিল না। বড় বড় হরফে লেখা ছিল ‘REST’। আপামর বাঙালিকে কাঁদিয়ে
চিরঘুমের দেশে চলে গিয়েছিলেন উত্তম। যদি কাউকে প্রশ্ন করা হয় মহানায়কের শেষ ছবি
কোনটি, সকলেই একবাক্যে উত্তর দেবেন ‘ওগো বধূ সুন্দরী’। এই তথ্য কিন্তু ঠিক নয়। তাহলে
সঠিক তথ্য কী, চলুন জানা যাক।
আরও পড়ুন: Uttan Kumar: অনুপ ছাড়া 'পলাতক' হবে না, উত্তমকে সটান জানিয়ে দিয়েছিলেন পরিচালক তরুণ মজুমদার
আরও পড়ুন: Shraban Month Special: শ্রাবণ মাস শুরু হয়ে গিয়েছে, সোমবার করুন পারদ শিবলিঙ্গে পুজো
মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস
আগে উত্তম কুমার একটি হিন্দি ক্রাইম থ্রিলার এর জন্য ডাবিং শেষ করেছিলেন। ছবিটি
মুক্তি পায় ১৯৮১ সালে। ছবিটির নাম ‘প্লট নং ৫’ (Plot
No. 5)।
সেখানে একজন
সিরিয়াল কিলার হিসেবে দেখা গিয়েছিল মহানায়ককে।
১৯৭৮ সালে শুরু হয়েছিল এই ‘প্লট নং ৫’র শুটিং। ১৯৮০ সালে ‘প্লট নং ৫’এর ডাবিং শেষ করে কলকাতায় ফিরেছিলেন উত্তম কুমার। সেই সময় আরও বেশ কিছু
নতুন বাংলা ছবি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ‘ওগো
বধূ সুন্দরী’ শ্যুটিং চলাকালীন বড়সড় হৃদরোগে আক্রান্ত
হয়ে প্রয়াত হন তিনি। ১৯৮১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এই ছবি। কলকাতার এলিট সিনেমা হলে ১০
সপ্তাহ ধরে চলেছিল ‘প্লট নং ৫’। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রোম্যান্টিক মেলোড্রামা
না থাকায় অন্যান্য শহরে এটি ছাপ ফেলতে পারেনি। সমান্তরাল সিনেমা এবং মূলধারার
সিনেমার সংমিশ্রণ ছিল এই ছবি। এই জাতীয় সিনেমার সার্বিকভাবে তখনই হজম করতে পারেনি
বলিউডের সাধারণ দর্শক। তবে আজ আর সেই দিন নেই।
‘প্লট নং ৫’ একমাত্র ভারতীয় সিনেমা যেখানে তিন কিংবদন্তি অভিনেতা একসঙ্গে উপস্থিত
হয়েছিলেন- উত্তম কুমার, অমল পালেকর এবং আমজাদ খান। ছবিতে
মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন বিদ্যা সিনহা এবং শ্রীরাম লাগু। অন্যান্য চরিত্রে
অভিনয় করেছিলেন প্রদীপ কুমার, সারিকা, বির্জু খোটে, বেঞ্জামিন
গিলানি সহ অন্যান্যরা।