কাঁঠাল
খাওয়ায় পছন্দ-অপছন্দ থাকলেও কাঁঠালের বীজ কিন্তু কমবেশি সবার পছন্দ।
এমনকি এই বীজ শুকিয়ে ভেজে খেতেও পছন্দ করেন অনেকে। শুধু পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ তা নয়, এর
বীজেও রয়েছে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি একগাদা উপকরণ।
হজমশক্তি
বাড়ায়: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে বিপাকক্রিয়া বাড়ায় কাঁঠাল বীজ। প্রচুর ফাইবার
থাকে এতে। যা ডায়রিয়া নিরাময়েও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে
নিন। বদহজমে সহজ হোমমেড রেমেডি হতে পারে এই পাউডার।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়: কাঁঠাল বীজে প্রচুর
ভিটামিন এ আছে। যা চোখের জন্য খুবই জরুরি। যারা চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন; তারা
চোখের যত্নে কাঁঠাল নিয়মিত খেতে পারেন। এটি নাইট ব্লাইন্ডনেস কাটাতেও সাহায্য করে।
যৌন চিকিত্সায়: যুগ যুগ ধরে নানা
ধরনের যৌনব্যাধিতে কাঁঠালের বীজের ব্যবহার হয়ে আসছে। এশিয়ার অনেক দেশে প্রচলিত
চিকিত্সার একটি অন্যতম উপকরণ এটি। কাঁঠালে থাকা আয়রনও এ কাজে সহায়ক।
পেশী গঠন: উচ্চমানের প্রোটিন সমৃদ্ধ কোলেস্টেরলবিহীন
বীজটি ডায়েট চার্টে থাকলে তৈরি হবে পেশীবহুল শরীর। মিলবে ক্যালরিও। যারা নিয়মিত
শরীরচর্চা করেন, তাদের জন্য কাঁঠাল বীজ হতে পারে অনেক উপকারী এক
খাবার।
বলিরেখা দূর করে: বয়সের ছাপ দূর করতে
কাঁঠালের বীজে আছে জাদুকরি গুণ। কাঁঠালের বীজের গুঁড়ো দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট
তৈরি করে ফেসপ্যাক দুই সপ্তাহ পরপর মুখে লাগালে অসময়ে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়া রোধ
করবে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ফ্রি র্যাডিক্যাল দূর করে। এতেও ত্বকের
সতেজতা বাড়ে।
চুলের যত্নে: কাঁঠালের বীজে থাকা ভিটামিন এ চুলের স্বাস্থ্য
ভালো রাখে। চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে এই ভিটামিন। এজন্য খাবারের তালিকায়
কাঁঠালের বীজ রাখুন। এতে থাকা প্রোটিন ও আয়রন চুলের জন্য টনিকের কাজ করে।
রক্ত স্বল্পতায়: রক্তে হিমোগ্লোবিন
বাড়ায় কাঁঠালের বীজে থাকায় আয়রন। যা অ্যানিমিয়া তথা রক্তাল্পতা সংক্রান্ত সমস্যা
মোকাবিলা করে।
ত্বকের রোগ সারায়: এটি ত্বকের নানা
রোগও সারায়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ও স্বাস্থ্যকর চুল পেতে নিয়মিত কাঁঠালের
বীজ খেতে পারেন। কাঁঠালের বীজ আপনার ত্বককে করে তুলবে সজীব ও তরতাজা। দু-একটি বীজ
সামান্য দুধ ও মধুতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে, সেটা দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি
করুন। সেই পেস্ট সারা মুখে লাগিয়ে শুকাতে দিন। তারপর উষ্ণ গরম জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
দেখবেন ত্বকের উজ্জ্বলতা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
মানসিক চাপ কমায়: মানসিক চাপ কমাতে
কাঁঠালের বীজ খুবই উপকারী। কাঁঠালের বীজ প্রোটিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসে ঠাসা। যা
মস্তিষ্কের ক্যামিকেলের ভারসাম্য বজায় রেখে শরীর মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
সংক্রমণ রোধে: বর্ষাকালে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ বাড়ে।
এই বীজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অনেকেরই হয়তো জানা নেই, কাঁঠাল
বীজ বিভিন্ন সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে। নিয়মিত কাঁঠালের বীজ খেলে বর্ষা মৌসুমে
বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন।
মস্তিষ্ক ও হার্টের সুস্থতায়: প্রতিদিনের খাবারে
কাঁঠালের বীজ রাখলে আপনার শরীরের আয়রনের মাত্রা বাড়বে। এই বীজে প্রচুর পরিমাণে
আয়রন থাকে। কাঁঠালের বীজ হিমোগ্লোবিনের একটি উপাদান। আয়রন সুস্থ রাখবে আপনার
মস্তিষ্ক ও হার্টকেও।