পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী হলেন বিধান চন্দ্র রায় যার জন্ম ও মৃত্যুর
তারিখটি এক, ১ জুলাই। আগামীকাল শনিবার ১ জুলাই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি
তিনি ছিলেন একজন অসামান্য চিকিৎসক। তাই তাঁর জন্ম ও মৃত্যুদিনে পালিত হয় ন্যাশনাল ডক্টরস’
ডে। পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কেমন সম্পর্ক ছিল মহাত্মা গান্ধির আজ
জানা যাক।
আরও পড়ুন: National Doctors Day: প্রেসক্রিপশনে কোনও ওষুধের নাম নেই, শুধু লিখে দিয়েছিলেন 'রিভার্স ইয়োর হেড'- এমনই ছিলেন ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়
আরও পড়ুন: National Doctors Day: গন্ধ শুঁকে বলে দিয়েছিলেন রোগী কোন রোগে আক্রান্ত, ছাত্র বিধানের কীর্তিতে থ হয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালের সুপারও
তখন ভারত স্বাধীন হয়নি। সালটা ১৯৪৩। আগা খান প্রাসাদে বন্দি রয়েছেন গান্ধিজী।
খাওয়া দাওয়া বন্ধ, ব্রিটিশ শাসনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ চালাচ্ছে অনশন।
ফলে শরীর খারাপ হতে সময় লাগল না। এদিকে অ্যালোপ্যাথিতে বিশ্বাস নেই মোহনদাস করমচাঁদের।
তাই অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খাওয়ানো যাচ্ছে না। দেশীয় কোনও ওষুধ হলে তিনি খেতে রাজি। কিন্তু
সেই সময় দেশে তেমন উন্নত মানের ওষুধ কোথায়! অতএব ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়ের ডাক পড়ল,
তিনি যদি এই একরোখা মানুষটিকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ওষুধ খাওয়াতে পারেন।
বিধান রায় এলেন। ওষুধ খাওয়াতে গেলে তাঁকে মহাত্মা গান্ধির কাছ থেকে শুনতে
হল, “আমি আপনার ওষুধ কেন খাব? আপনি কি দেশের
৪০ কোটি মানুষকে বিনাপয়সায় চিকিৎসা পরিষেবা দেন? এর স্পষ্ট উত্তরও দিয়েছিলেন ডাক্তার রয়। বলেছিলেন,
“আমি এখানে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধিকে সারাতে আসিনি, এসেছি ৪০ কোটি মানুষের নেতাকে সারিয়ে
তুলতে। আপনি মারা গেলে ৪০ কোটি মানুষ মারা যাবে আর আপনি বেঁচে থাকলে ওই ৪০ কোটি মানুষ
বাঁচবে।” এমন কথার মারপ্যাঁচ যে একজন ডাক্তার জানবেন তা আন্দাজ করেননি গান্ধিজী। তাই
বলেছিলেন, তিনি ওষুধ খাবেন, কিন্তু তাঁর যেটা পছন্দ হবে সেটাই খাবেন। আর বিধান রায়
যে যেরকম মারপ্যাঁচ কষে কথা বলেন তাতে তিনি আইন নিয়ে পড়লে খুব উন্নতি করতেন। এখানেও
গান্ধিজীকে জবাব দিয়েছিলেন দারুণভাবে বাংলার একালের ধন্বন্তরী। তিনি বলেছিলেন, “আমি
ডাক্তারি পড়েছি একদিন বাপুর চিকিৎসা করব বলে।”
যাদবপুর টিবি হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন সেবাসদন, কমলা নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল,
ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন, চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতাল তো তিনিই পশ্চিমবাংলাকে দিয়ে
গিয়েছিলেন। লন্ডনে গিয়ে একইসঙ্গে করেছিলেন এমআরসিপি ও এফআরসিএস। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল
অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠায় তাঁর ভূমিকা অগ্রগণ্য।