হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী তিন
আদি দেবতা হলেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু
ও মহেশ্বর। এর মধ্যে ব্রহ্মা হলেন সৃষ্টিকর্তা, বিষ্ণু
নিয়ন্ত্রক এবং শিব অশুভ শক্তিকে ধ্বংসকারী। শিবরাত্রির
পুণ্যদিনে মহাদেবের সম্পর্কে এমন কয়েকটি
তথ্য জেনে নিন, যা হয়তো
অনেকেরই জানা নেই।
উচ্চতা
মহাদেব অত্যন্ত শক্তিশালী ও পেশীবহুল শরীরের
অধিকারী। হিন্দু পুরাণে মহাদেবের শরীরের যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তার থেকে জানা যায় যে তাঁর উচ্চতা
প্রায় সাত ফুট। শরীরে জড়ানো বাঘের ছাল। তবে পশুর চামড়া পেতে কখনোই পশুহত্যা করেন
না তিনি। মৃত পশুর চামড়া সংগ্রহ করে তাই নিজের অঙ্গে জড়িয়ে নেন মহাদেব।
মাদক সেবন
শিব মানেই গাঁজা-ভাং খাওয়ার একটা ছবি
আমাদের মনে ফুটে ওঠে। সেই অজুহাতে গাঁজা-ভাঙের মতো নিষিদ্ধ মাদককে 'বাবার প্রসাদ' তকমা দিয়ে অনেক শিব-ভক্তও গাঁজা, ভাং খেয়ে
থাকে। কিন্তু জানেন কি মহাদেব কেন মাদক সেবন করেন? কারণ
হিমালয়ের যে অঞ্চলে তাঁর বাস, সেখানকার প্রচণ্ড ঠান্ডার
কারণেই গাঁজা খান তিনি। এছাড়া শিব অত্যন্ত কঠোর তপস্যায় রত। মনঃসংযোগ করতেই গাঁজা
খেয়ে থাকেন তিনি।
নীলকণ্ঠ
সমুদ্র মন্থনের সময় ভয়ঙ্কর হলাহল বিষ উত্থিত হয়। সারা বিশ্ব সেই
বিষের ঝাঁঝে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সৃষ্টিরক্ষার জন্য স্বয়ং মহাদেব ওই বিষ পান করেন।
প্রচণ্ড সেই বিষকে নিজের কণ্ঠে ধরে রাখেন তিনি। তাই তাঁর আর এক নাম নীলকণ্ঠ।
যৌনতা
বলশালী মহাদেব জানতেন যে শারীরিক মিলনের ক্ষেত্রে
তাঁর প্রচণ্ড পৌরুষের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবেন না কোনও নারী। কিন্তু দেবী পার্বতী
একজন স্ত্রী-এর স্বাভাবিক বাসনা-মতো মহাদেবকে ঘনিষ্ঠ ভাবে পেতে চান। শিব প্রথমে
অরাজি হলেও পার্বতীর আবেদনের কাছে তিনি নত হন। এরপর দুজনে গোপনে কোথাও মিলিত হন।
এই মিলন মাসের পর মাস ধরে চলতে থাকে। এক সময় গোটা পৃথিবী কম্পমান হয়ে ওঠে, পাহাড় ধসে পড়তে থাকে। সব দেবতারা
শিব-পার্বতীকে ফিরে আসতে অনুরোধ করেন। মহাদেব বুঝতে পারেন যে পার্বতী তাঁর যোগ্য
পত্নী।
রাক্ষস
মহাদেব যতটা দেবতাদের নিজের আপন মনে করেন, ততটাই তিনি রাক্ষসকূলের কাছের। তিনি
বিশ্বাস করেন জন্ম কিছু নয়, কর্মই আসল। তপস্যার দ্বারা
তাঁকে প্রীত করতে পারলে রাক্ষসদেরও তিনি বর প্রদান করেন।