হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং
পবিত্র গাথা হল রামায়ণ। রামায়ণে এত ধরনের চরিত্র চিত্রিত করা হয়েছে, যা আজও বোঝা খুব দুষ্কর। সেরকমই একটি নাম হল মেঘনাদ, যিনি ইন্দ্রজিৎ নামে পরিচিত। আজ আমরা জানব তাঁর জীবন সম্পর্কিত
কিছু বিশেষ কথা।
যুদ্ধক্ষেত্রে যে যোদ্ধা রীতিমতো
সবার কালঘাম ঝরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন লঙ্কাপতি রাবণের জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং রাবণের
প্রথম স্ত্রী মন্দোদরীর সন্তান মেঘনাদ। কেন রাবণ নিজ পুত্রের নাম মেঘনাদ রেখেছিলেন
তার নেপথ্যে একটি গল্প রয়েছে। শাস্ত্র অনুসারে, মেঘনাদের যখন জন্ম হয়েছিল, তখন তাঁর কান্না সাধারণ শিশুর মতো ছিল না, কান্নার শব্দ ছিল মেঘের গর্জনের মতো। এই কারণে লঙ্কাধীশ
ছেলের নাম রাখেন মেঘনাথ।
হিন্দু শাস্ত্র এবং জ্যোতিষশাস্ত্র
অনুসারে,
মেঘনাদ রাবণের জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং লঙ্কার যুবরাজও ছিলেন। তাই
মেঘনাদকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন রাবণ। কথিত আছে যে রাবণ যঠিক যতটা পণ্ডিত ও গুণী ছিলেন, তিনি চেয়েছিলেন তাঁর পুত্র মেঘনাদ পিতার থেকেও বেশি গুণী, মহান যোদ্ধা এবং পণ্ডিত। শুধু তাই নয়, পুত্রকে সবচেয়ে শক্তিশালী ও অমর করার ইচ্ছায়
ত্রিলোকবিজয়ী দশানন মেঘনাদের জন্মের সময় সমস্ত দেবতাকে একই স্থানে অর্থাৎ একাদশ
ঘরে বসে থাকতে বলেছিলেন। পুত্রের প্রতি অনুরাগের কারণে সন্তান জন্মের সময় তিনি
গ্রহের গতিবিধি পরিবর্তন করার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু শনিদেব রাবণের আদেশ অমান্য
করে সমস্ত গ্রহ থেকে দূরে বাইরের ঘরে গিয়ে বসলেন যাতে রাবণ পুত্র মেঘনাদ অজেয় ও
অমর উপাধি পেতে না পারেন।
আরও পড়ুন: মাছের ঝোল তো অনেকই খেয়েছেন, কিন্তু ঠাকুরবাড়ির জনপ্রিয় এই মাছের ঝোল একবার বানিয়ে ফেলতে পারেন
আরও পড়ুন: স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে ছুটে আসেন অসংখ্য ভক্ত, জানুন ব্যারাকপুরের এই হনুমান মন্দিরের অজানা কাহিনি
হিন্দু ধর্মের পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, লঙ্কাপতি রাবণ স্বর্গে তার আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য দেবতাদের আক্রমণ করেছিলেন।
মেঘনাদও এই যুদ্ধে অংশ নেন। এই সময় ইন্দ্র লঙ্কাপতিকে আক্রমণ করতে চাইলে মেঘনাদ
পিতাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। মেঘনাদ একই সময়ে দেবরাজ ও তাঁর বাহন ঐরাবতকে আক্রমণ
করেন এবং সমস্ত দেবতাসহ ইন্দ্রকে পরাজিত করেন। এরপরেই মেঘনাদের নাম হয় ইন্দ্রজিৎ।