আমরা সেই পরিবারের কথা বলছি যাদের নামে নোবেল জয়ের বিশ্ব রেকর্ড রয়েছে।
এই রেকর্ডটি কুরি পরিবারের নামে রেকর্ড করা হয়েছে। কুরি পরিবার নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে
সবচেয়ে বেশি নোবেল পুরস্কার জিতেছে। শুরু হয়েছিল মেরি কুরি (মাদাম কুরি) এবং তাঁর
স্বামী পিয়ের কুরিকে দিয়ে।
মেরি কুরি ফ্রান্সের নাগরিক ছিলেন। তিনি ১৮৬৭ সালের ৭ নভেম্বর পোল্যান্ডে
জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা গণিত এবং পদার্থবিদ্যার শিক্ষক ছিলেন। মা মারা যাওয়ার সময়
মেরির বয়স ছিল ৯ বছর। ১৮৯১ সালে মেরি পড়াশোনার জন্য প্যারিসে যান। সেখানে সারাদিন
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে কাটাতেন এবং গভীর রাত পর্যন্ত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতেন।
১৮৯৪ সালে স্নাতক হওয়ার পর তিনি প্রতিভাবান ফরাসি রসায়নবিদ পিয়ের কুরির সঙ্গে দেখা
করেন। তারপর দুজনে বিয়ে করেন।
সেই সময় একজন ফরাসি পদার্থবিদ বেকারেল ইউরেনিয়াম লবণ থেকে কিছু রশ্মির
নির্গমন সনাক্ত করেছিলেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রী শব্দ এল কোথা থেকে
আরও পড়ুন: আপনি কি জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কিত এই ১০টি তথ্য সম্পর্কে জানেন
মেরি এবং তাঁর স্বামী এই খবরে উত্তেজিত হন এবং উভয়েই এটির দিকে নজর দেন।
শুরু হয় কাজ। তিনি ইউরেনিয়ামের থেকে ১০০ গুণ বেশি তেজস্ক্রিয় উপাদান আবিষ্কার করেছিলেন।
পোল্যান্ড থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এর একটি নাম দিয়েছেন – ‘পোলোনিয়াম’। চার বছর একটানা
পরীক্ষার পর, তাঁরা একসাথে ১৯০২ সালে রেডিয়াম বের করতে সক্ষম হয়।
এর পরে, মেরি এবং পিয়ের কুরি যৌথভাবে ১৯০৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার
লাভ করেন। মেরি কুরি পিয়ের কুরি ১৯০৬ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। কিন্তু
স্বামীকে হারানোর পরও সাহস হারাননি মেরি কুরি। তিনি তাঁর গবেষণার কাজ চালিয়ে যান।
এর কিছুদিন পরে, পরমাণু সম্পর্কিত আবিষ্কারের জন্য তিনি আবার ১৯১১ সালে রসায়নে নোবেল
পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু ক্রমাগত তেজস্ক্রিয় উপাদানের সংস্পর্শে আসার কারণে তাঁর
লিউকোমিয়া (ব্লাড ক্যান্সার) হয় এবং মেরি কুরি মারা যান।
আইরিন জোলিয়ট কুরি ছিলেন আইরিন মারি এবং পিয়েরে কুরির কন্যা। তার প্রাতিষ্ঠানিক
শিক্ষা তেমন ছিল না। কিন্তু তিনি অনানুষ্ঠানিক ক্লাসে যোগ দিতেন যেখানে পদার্থবিদ্যা
পড়ানো হত। পরে মায়ের রেডিয়াম ইনস্টিটিউটে বসে গবেষণার কাজ শুরু করেন। ১৯২৬ সালে,
আইরিন কুরি ফ্রেডরিক জোলিয়টকে বিয়ে করেন। স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে মানুষের তৈরি
তেজস্ক্রিয় উপাদান সম্পর্কিত একটি আবিষ্কার করেছেন। মায়ের মতোই তিনিও এক প্রজন্মের
বিজ্ঞানী তৈরি করেছিলেন। বিকিরণের দীর্ঘকালীন কাজ করার কারণে ১৯৫৬ সালে আইরিন লিউকোমিয়ায়
মারা যান। ১৯৩৫ সালে, জোলিয়ট কুরি আইরিন এবং ফ্রেডেরিক জোলিয়ট রসায়নে নোবেল পান।