পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ভারতীয়
সরবজিৎ সিং হত্যায় অভিযুক্ত আমির সরফরাজ তাম্বা রবিবার লাহোরে অজ্ঞাত
বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছে। সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার প্রতিষ্ঠাতা
হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তাম্বার উপর লাহোরের ইসলামপুর এলাকায় আক্রমণ চালানো
হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মৃত্যু হয়।
সর্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পর এ বার অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর গুলিতে লাহোরে মৃত্যু
হল সেই ঘটনার মূল অভিযুক্ত সরফরাজের।
Lok Sabha Election 2024: এবার কেষ্টহীন গড়ে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী, ভোটের আগে কী দাওয়াই দেবেন তিনি, তাকিয়ে রয়েছেন দলের অনুগামীরা
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত তরনতারন
জেলার ভিখিবিন্দ গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন সরবজিৎ সিং ছিলেন কৃষক। স্ত্রী সুখপ্রীত
কৌর ছাড়াও দুই কন্যা স্বপনদীপ এবং পুনম কৌরের বাবা ছিলেন তিনি। দিদি দলবীরও তাঁদের সঙ্গেই থাকতেন। ১৯৯১ থেকে
২০১৩ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত সরবজিতের মুক্তির জন্য অবিরাম চেষ্টা করেছিলেন
দলবীর। ১৯৯০ সালের ৩০ আগস্ট কৃষক পরিবারের ছেলে সরবজিৎ এক দিন রাতে মত্ত অবস্থায়
পথ ভুলে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। সেখান থেকে ভারতের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি
করার অভিযোগে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাঁকে গ্রেফতার করে। প্রায় ন’মাস পর সরবজিতের পরিবার জানতে পারে, মনজিৎ সিংহ
নামে পাকিস্তানের জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি।
১৯৯০ সালে পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি বোমা
বিস্ফোরণে জড়িত থাকার অভিযোগে সরবজিৎ সিংকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তাতে ১৪
জনের মৃত্যু হয়। শুধু তা-ই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি এবং জঙ্গি কার্যকলাপের অভিযোগও এনেছিল
পাকিস্তান সরকার। এ জন্য পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায়, আজই দেখে নিন
সরবজিতের পরিবার বার বার দাবি করে, কোনও ভাবেই তিনি বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত নন। ভারতের যুক্তি ছিল,
বোমা হামলার অনেক পরে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন সরবজিৎ। কিন্তু তাতে
কোনও লাভ হয়নি।
১৯৯১ সালে পাকিস্তান আদালত লাহোর এবং
ফয়সালাবাদে চারটি বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে সরবজিৎ সিংকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ১৯৯১
থেকে ২০১৩— ২২ বছর লাহোরের কোট লাখপত জেলে কাটিয়েছিলেন
সরবজিৎ। এর মাঝে বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ধরা পড়ে। তবে পাকিস্তানের জেল
থেকে ছাড়া পাননি সর্বজিৎ।
অনেকবারই সরবজিৎ সিংয়ের শাস্তি সাময়িকভাবে
স্থগিত করা হয়েছিল। ২০০৬ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সরবজিতের
বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গেদেখতে অস্বীকার করে এবং তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
২০১৩ সালের ২৬ এপ্রিল লাখপত কারাগারের
অভ্যন্তরে তাম্বা এবং অন্যান্য বন্দিদের দ্বারা নির্মমভাবে আক্রন্ত হন সরবজিৎ।
তাঁর উপর ধাতব পাত, লোহার রড, ইট
এবং টিনের টুকরো দিয়ে হামলা চালানো হয়। মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন
সরবজিৎ। তাঁর মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর অজ্ঞান অবস্থায় সরবজিৎ সিংকে
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হামলার পর প্রায় এক সপ্তাহ তিনি কোমায় ছিলেন তিনি।
সেই সময় দিদি দলবীর, স্ত্রী সুখপ্রীত এবং দুই কন্যাকে পাকিস্তানে গিয়ে সর্বজিৎকে দেখে আসার
অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ২৯ এপ্রিল ভারত সরকার পাকিস্তানের কাছে মানবিক কারণে
সর্বজিৎকে মুক্তি দেওয়ার এবং চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভারতে ফেরানোর আবেদন জানায়।
কিন্তু পাকিস্তান সেই আবেদনেও সাড়া দেয়নি।
২ মে সকালে লাহোরের জিন্নাহ হাসপাতালে
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সরবজিৎ সিং উনপঞ্চাশ বছর বয়সে মারা যান। ময়নাতদন্তের
রিপোর্টে বলা হয়েছিল, মাথায় আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়েছিল
সরবজিতের। তাঁর খুলির উপরে একটি পাঁচ সেন্টিমিটার চওড়া আঘাতের চিহ্ন ছিল। পেটে,
মুখে, ঘাড়ে এবং হাতেও আঘাতের দাগ ছিল।
এর পর একটি বিশেষ বিমানে সরবজিতের দেহ
ভারতে নিয়ে আসা হয়। ভারতীয় চিকিৎসকেরা অমৃতসরে দেহের ময়নাতদন্ত করে জানান, খুন করার উদ্দেশ্য নিয়েই হামলা চালানো হয়েছিল সরবজিতের উপর।
ময়নাতদন্তে দেখা যায়, হৃদ্যন্ত্র, কিডনি-সহ বহু অঙ্গ সরবজিতের শরীর থেকে
উধাও। ভারতীয় চিকিৎসকেরা মনে করেছিলেন, পাকিস্তানে প্রথম
ময়নাতদন্তের সময় ওই অঙ্গগুলি শরীর থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
⭕ SЕNDING 0.7500 BТС. Get >>> https://telegra.ph/BTC-Transaction--355101-03-14?hs=d47ac0af3b1f84d46572b9afe36368d9& ⭕
Apr 16, 2024 09:15 [IST]