হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এক মঙ্গলবার বজরংবলী হনুমানের
জন্ম হয়েছিল। তাঁর মায়ের নাম অঞ্জনা এবং পিতার নাম কেশরী। হনুমানকে সংকট মোচন এবং
পবনপুত্র নামেও ডাকা হয়। শ্রীরামের পূজা করলে হনুমান প্রসন্ন হন। তিনি রামভক্তদের
প্রতিটি ব্যথা দূর করেন। বিশ্বাস করা হয় যে বাড়িতে প্রতিদিন হনুমানের পুজো করা
হয়, সেই বাড়িতে কোনও নেতিবাচক শক্তি বাস
করে না। আপনি কি জানেন ভগবান হনুমানের জন্ম কিভাবে হয়েছিল?
একবার ভগবান ইন্দ্র ঋষি দূর্বাসার
দ্বারা আয়োজিত স্বর্গে একটি আনুষ্ঠানিক সভায় যোগদান করছিলেন। সেই সময় সকলেই
ছিলেন গভীর চিন্তায় মগ্ন। হঠাৎ পুঞ্জিকস্থলী নামে এক অপ্সরা অজ্ঞাতসারে সভায় বিঘ্ন
ঘটাচ্ছিলেন। তখন ঋষি দূর্বাসা তাঁকে বিঘ্ন ঘটাতে নিষেধ করলেন। তা না করতে বললেন।
কিন্তু অপ্সরা ঋষি দূর্বাসার কথা শুনতে পাননি। নিষেধ করা সত্ত্বেও পুঞ্জিকস্থলি
একই কাজ করছেন দেখে মহর্ষি রেগে যান এবং তাঁকে অভিশাপ দেন। তুমি বানরের মতো কাজ
করেছ। সেজন্য তুমিও একইভাবে বানর হয়ে যাও। ঋষি দূর্বাসার অভিশাপ শুনে অপ্সরা তার
ভুল বুঝতে পেরে কাঁদতে লাগলেন এবং বারবার ক্ষমা চাইতে লাগলেন।
Hanuman jayanti 2024: এইভাবে হনুমান চালিশা পাঠ করলে হবে সকল ইচ্ছাপূরণ
অপ্সরা ঋষি দূর্বাসাকে বললেন, “হে মুনিপ্রবর, আমাকে ক্ষমা করুন। আমি আপনাকে বিরক্ত করার জন্য এমন করিনি। আমার বোকামি যে এমন
পরিণতির দিকে আমাকে নিয়ে যাবে, তা আমার ধারণা ছিল
না।”
ঋষি দূর্বাসা পুঞ্জিকস্থলীর অনুরোধ শুনে বললেন, পরজন্মে তাঁর সঙ্গে এক দেবতার বিয়ে হবে। কিন্তু তিনি হবেন
বানর এবং তাঁদের যে ছেলে হবে তিনি হবেন খুব শক্তিশালী। হবেন ভগবান শ্রী রামের
প্রিয় ভক্ত।
ফোন নম্বরের মাধ্যমে লোকেশন ট্র্যাক করতে চান, জেনে নিন কৌশল
একথা শুনে পুঞ্জিকস্থলী ঋষি
দূর্বাসাকে প্রণাম করে অভিশাপ গ্রহণ করেন। তারপর ভগবান বিরাজের মেয়ে হয়ে জন্ম হয়
অঞ্জনার। অঞ্জনা যখন বিবাহযোগ্য হন, তখন তিনি বানর দেবতা কেশরীকে বিয়ে করেছিলেন। এরপর স্বামীর সঙ্গে সুখী
দাম্পত্য জীবন কাটাতে থাকেন। অঞ্জনা ও কেশরী শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করছিলেন। একদিন
শঙ্খবল নামে একটি বন্য হাতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উৎপাত করে। এই হট্টগোলে প্রাণ
হারায় বহু মানুষ। তার কারণে অনেক ঋষি তাদের আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারেননি।
ভগবান কেশরী শ্রী শঙ্খবলকে খুব
ভালবাসতেন। ভগবান কেশরী যখন তার প্রিয় হাতিকে বধ করেন, তখন তিনি গভীর শোকাহত হন। তা দেখে ঋষিরা তাঁকে বর দিলেন যে
তোমার ঘরে এমন এক সন্তান জন্ম নেবেন, যিনি খুব শক্তিশালী। তাঁর গতি ও শক্তি বাতাসের সমান হবে। এরপর কেশরীর ঘরে
অঞ্জনার গর্ভে জন্ম নেন কেশরীনন্দন হনুমান।