এসআইপি হল সিস্টেমেটিক
ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান। এই পদ্ধতিতে সাধারণত মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা হয়।
বিনিয়োগকারী নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন।
এসআইপি-তে
সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করা যায়। রেকারিং ডিপোজিটের মতোই। ব্যাঙ্ক
মারফত স্বয়ংক্রিয়ভাবেও গোটা প্রক্রিয়াটা চালানো যায়।
তাহলে আর
প্রতি মাসে টাকা জমা করার দুশ্চিন্তা থাকবে না। ব্যাঙ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট
পরিমাণ টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেবে।
ইদানীং
বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এসআইপি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ এটা অনেক বেশি
সুশৃঙ্খল এবং পদ্ধতিগতভাবে বিনিয়োগ করতে সহায়তা করে। বিনিয়োগকারীকে বাজারের
অস্থিরতা নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মিউচুয়াল
ফান্ডের এসআইপি-র কোনও বিকল্প নেই।
তবে এসআইপি-র ক্ষেত্রে যত
তাড়াতাড়ি শুরু করা যায় ততই ভাল। কারণ সর্বাধিক রিটার্ন পেতে বিনিয়োগও তাড়াতাড়ি
শুরু করতে হবে। তবেই বেশি সময় পাওয়া যাবে। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাই
সবচেয়ে বেশি রিটার্ন পেতে তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ শুরু করাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
এসআইপি কীভাবে কাজ করে:
বিনিয়োগকারীরা সাধারণত এসআইপি কীভাবে কাজ করে সেই নিয়ে মাথা ঘামান না। শুধু
ভবিষ্যতে সর্বোচ্চ রিটার্ন জেনারেট করতে নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে নির্দিষ্টি পরিমাণ
অর্থ বিনিয়োগ করে যান। কিন্তু এসআইপি কীভাবে কাজ করে সেটা জানাও জরুরি।
এসআইপিতে কীভাবে অর্থ
পরিচালনা করা হচ্ছে তা নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না। কারণ বিশেষজ্ঞদের একটি দল
ব্যাপারটা দেখে। এঁদের বলা হয় ফান্ড ম্যানেজার। এঁরা পেশাদার। বাজার সম্পর্কে
ওয়াকিবহাল। বাজার বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেন। এসআইপিতে, মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটগুলি তাদের নেট
সম্পদ মূল্য বা এনএভি-র উপর ভিত্তি করে পূর্বনির্ধারিত বিরতিতে কেনা হয়।
এসআইপি-এর এই ইউনিটগুলি বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগের মেয়াদ পর্যন্ত জমা হতে থাকে।
একবার সেই ইউনিটগুলি রিডিম করলে, ইউনিটগুলির মান
বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
এছাড়াও এসআইপি দুটি নীতি
মেনে কাজ করে। যেমন রুপি কস্ট অ্যাভারেজিং এবং কম্পাউন্ডিং।
রুপি কস্ট অ্যাভারেজিং:
এসআইপি বিনিয়োগকারীকে বাজার অস্থিরতা থেকে বাঁচায়। যখন বাজার তেজি থাকে তখন
বিনিয়োগকারীরা কম ইউনিট পান। আর বাজার পড়লে বেশি। এইভাবে এসআইপি ঝুঁকি কমিয়ে দেয়
এবং নিশ্চিত করে যাতে বিনিয়োগকারী কম খরচে ইউনিটগুলি কিনতে পারেন।
কমপাউন্ডিং: কমপাউন্ডিংয়ের
কথা কম-বেশি সব বিনিয়োগকারীরাই জানেন। দীর্ঘ মেয়াদে নিয়মিত অল্প পরিমাণ টাকা
বিনিয়োগ চক্রবৃদ্ধির উপর অবিশ্বাস্য প্রভাব ফেলতে পারে। একটি উদাহরণ দিলে
ব্যাপারটা স্পষ্ট হবে। ধরা যাক, 'এ'
৩০ বছর বয়সে তার ৫০ তম জন্মদিনের জন্য বিনিয়োগ শুরু করল। ৭ শতাংশ
হারে রিটার্ন। ১০০০ টাকা মাসিক বিনিয়োগ। সুতরাং 'এ'-র মোট বিনিয়োগের পরিমাণ হবে ৫,২৮,০০০ টাকা।
অন্য দিকে, 'বি' ২০ বছর বয়সে
তার ৬০ তম জন্মদিনের জন্য বিনিয়োগ শুরু করে। মাসিক ১০০০ টাকা এবং ৭ শতাংশ হারে
রিটার্ন ধরলে ৪০ বছর পর 'বি' মোট
২৬,৫৬,৪৩৬ টাকা বিনিয়োগ করবে।
কারণ সে অল্প বয়স থেকেই বিনিয়োগ শুরু করেছে। অতএব, এটা
স্পষ্ট দীর্ঘ সময়ের জন্য নিয়মিত বিনিয়োগ দুর্দান্ত রিটার্ন দিতে পারে।