তালেবানের জন্ম ১৯৫০-৯০’র দশকে। সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত
ইউনিয়নের মধ্যে ঠান্ডাযুদ্ধ চলেছিল। উভয় দেশই আদর্শিক ও ভৌগোলিকভাবে নিজেদের
সম্প্রসারণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছিল। এই পর্বে, ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান আক্রমণ করে। আফগানিস্তানে সোভিয়েত
আধিপত্য যুক্তরাষ্ট্র সহ্য করেনি। ফলে তারা ওসামা বিন লাদেনের সাহায্য নেয় এবং
তাকে আফগানিস্তানে পাঠায়। লাদেন স্থানীয় জনগণকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে
যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেন। এই সময়ে আফগান মুজাহিদিন গঠিত হয়, যাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল সোভিয়েত সেনাবাহিনীকে
আফগানিস্তান থেকে বিতাড়িত করা। আমেরিকা এবং পাকিস্তান এই মুজাহিদিনদের সবচেয়ে
দামি সামরিক সরঞ্জাম এবং প্রচুর পরিমাণে আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছিল, যার ভিত্তিতে আফগান মুজাহিদিনরা সোভিয়েত সেনাবাহিনীর সঙ্গে
যুদ্ধ করছিল। এই যুদ্ধে সোভিয়েত সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ১০ বছরের
মধ্যে সোভিয়েত বাহিনী তাদের ১৫,০০০ সৈন্য
হারিয়েছিল। এই কারণে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়।
এরপর আহমদ শাহ মাসুদের নেতৃত্বে
আফগান মুজাহিদিনরা আফগানিস্তানের রাজধানী অবরোধ করে। সৈয়দ মহাম্মদ নাজিবুল্লাহর
নেতৃত্বে আফগানিস্তানে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে এই সময়ে দেশে অস্থিতিশীলতার
পরিবেশ বিরাজ করছে। ১৯৯৪ সালে, আফগান মুজাহিদিনের
একটি শাখা, মোল্লা মোহাম্মদ ওমর প্রতিষ্ঠিত
তালিবান দেশে আবির্ভূত হয়। দ্রুত তালিবান আফগানিস্তানের মধ্যে একটি শক্তিশালী
আন্দোলনে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: Stockholm Syndrome: মনের এমন অবস্থা হয় যেখানে অপহরণকারীর প্রেমে পড়ে যায় অপহৃত, জেনে নিন 'স্টকহোম সিনড্রোম' কী
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল গৃহটি দেখে আপনি স্তম্ভিত হয়ে যাবেন, এখানে রয়েছে ৭৭৫টি রুম, বাগান, এটিএম
এই সময়ে, পাকিস্তান তালিবানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রচুর পরিমাণে
আর্থিক সাহায্য, সামরিক সহায়তা এবং অস্ত্র সরবরাহ
করেছিল,
যাতে তালিবানদের মাধ্যমে মধ্য এশিয়া থেকে পাকিস্তানে
বাণিজ্য পথ উন্মুক্ত করা যায়। পাকিস্তানের এই সাহায্যের কারণে তালিবানরা খুব
শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং ১৯৯৬ সালে রাজধানী কাবুলকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। ধীরে
ধীরে বাকি অংশগুলোকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে শুরু করেন।
এদিকে, ১৯৯৬ সালের দিকে ওসামা বিন লাদেন আফগানিস্তানে ফিরে আসেন, যেখানে তাকে তালিবান নেতারা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায়।
ওসামা বিন লাদেনের অন্যান্য পরিকল্পনা ছিল, যা পূরণ করতে তিনি তালিবানের মধ্যে সন্ত্রাসীদের নিয়োগ শুরু করেন। এর
পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ ওসামা বিন লাদেনকে ধরার জন্য একটি রেজোলিউশন পাস করে, যা কোনও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসেনি। কিছু সময় পর, ২০০১ সালে, ওসামা বিন লাদেন
আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এবং পেন্টাগনের উপর একটি বিমান হামলা চালায়, যাতে বহু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়।