ত্রেতা
যুগে অবতার হয়ে জন্মেছিলেন শ্রীরাম। বধ করেছিলেন রাবণকে। সেই কাহিনির বিস্তারিত
বর্ণনা মেলে রামায়ণে। মূলত বাল্মীকির রচিত রামায়ণের কাহিনিই সকলের কাছে পরিচিত।
তবে রামায়ণের আরও অনেক পাঠও রয়েছে। সেখানে কাহিনির কিছু কিছু পরিবর্তন হলেও মূল
প্রেক্ষাপটে বিশেষ বদল নেই। সবক্ষেত্রেই প্রায় শুভ শক্তি হিসেবে রয়েছেন রাম এবং
অশুভ শক্তি রাবণ। তাই এ কথা বলাই বাহুল্য, মন্দিরও থাকবে সেই
শুভ শক্তিরই। কিন্তু বাস্তবে স্রেফ শুভ শক্তির মন্দিরই যে রয়েছে তা নয়। দেশে রয়েছে
রাবণেরও মন্দির। ভারতে একাধিক রাবণ মন্দির রয়েছে বেশ কয়েকটা।
প্রথম মন্দিরটি মধ্যপ্রদেশে। সেখানকার রাভঙ্গরাম অঞ্চলে রয়েছে এক
রাবণ মন্দির। বলা বাহুল্য মন্দিরটি যে গ্রামে অবস্থিত সেটিকে রাবণগ্রাম বলা হয়।
এখানে রাবণের এক কালো পাথরের বিগ্রহ দেখা যায়। তবে মূর্তিটি মাটিতে শায়িত অবস্থায়
রয়েছে। মনে করা হয়, রাবণের স্ত্রী মন্দোদরী এই গ্রামেই জন্মগ্রহণ
করেছিলেন। তাঁর বেড়ে ওঠাও সেখানেই। তাই এর সঙ্গে রাবণের যোগ থাকা স্বাভাবিক।
দেশের অন্যান্য প্রান্তে যেভাবে রামের পুজো করা হয়, এখানে
ঠিক একইভাবে পুজো করা হয় রাবণের।
রাবণের
অন্যতম বিখ্যাত মন্দিরটি উত্তরপ্রদেশের কানপুরে। শোনা যায়, সেই
মন্দির নাকি ১২৫ বছরের পুরনো। মন্দিরটির বিশেষত্ব বলতে এর খোলা বন্ধের সময়। বছরে
মাত্র একদিন খোলা থাকে দশাননের এই মন্দির। সেইসময় ভক্তদের ভিড় হয় দেখার মতো। আসলে
রাবণ অশুভ শক্তি হিসেবে পরিচিত হলেও, তাঁর মতো শিবভক্ত আর
নেই বললেই চলে। সেই সূত্রেই এখানকার মানুষ রাবণের আরাধনা করেন।
নয়ডার কাছেও
রয়েছে এক বিশাল রাবণ মন্দির। সেখানকার বিসরাখ অঞ্চলে রয়েছে এই মন্দির। কথিত আছে, এই
স্থানই আসলে রাবণের জন্মভূমি। তাই সেখানকার মানুষ রাবণকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করেন।
তাঁদের কাছে রাবণ কোনও অশুভ শক্তি নয়। বরং বীর যোদ্ধা এবং পরম শিবভক্ত হিসেবেই
এখানে রাবণ পরিচিত। নবরাত্রির সময় এখানকার মানুষজন শোক পালন
করেন।