রায়গঞ্জের জনসভায় সামিল হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর সমর্থনে জনসভার আয়োজন করছেন তিনি। রায়গঞ্জের চাকুলিয়ার শিরশি আইএম সিনিয়র
মাদ্রাসা মাঠে সভা করছেন তিনি। এর আগেও কৃষ্ণ কল্যাণীর
সমর্থনে সভা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
রায়গঞ্জের চাকুলিয়াতে কৃষ্ণ
কল্যাণীর সমর্থনে প্রচার করতে জনসভা করছেন তৃণমূল নেত্রী। মঞ্চে উঠলেন তিনি। তাঁর
আগে বক্তৃতা করেন প্রার্থী কৃষ্ণ। তার পরেই তিনি পরের সভায় চলে যান। মুখ্যমন্ত্রীর
পাশে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি।
Lok Sabha Election 2024: 'দূরদর্শনটা দূর করে দিন'- বালুরঘাটে মমতা উবাচে হতবাক জনগন
মমতা বলেন, ‘‘সকালে মা-বোনেরা রান্নাটাও ঠিক ভাবে করতে পারেননি।
চাকুলিয়ার সভায় এসে উপস্থিত হয়েছেন। আজ তবু মেঘ উঠেছে। এত গরমে এসেছেন, বেশি সময় নেব না।’’
মমতা বলেন, ‘‘এখানে প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী এক বছর আগে বিজেপি বিধায়ক পদ
থেকে পদত্যাগ করেছেন। আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। কেন ওঁকে প্রার্থী করেছি? তিনি কাজের মানুষ। দীর্ঘ দিন ধরে একটা অ্যাম্বুল্যান্সে করে
খাবার দিতেন সকলকে।’’
কংগ্রেস আর সিপিএম ভোট কাটাকুটি করে
বিজেপিকে জেতানোর চেষ্টা করছেন, দাবি করলেন মমতা।
তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তারা বিজেপির দুটো চোখ।’’
মমতা বলেন, ‘‘গদ্দারদের একটি ভোটও দেবেন না। এনআরসি যখন হয়, এঁদের টিকি পান? ’’
মমতা বলেন, ‘‘আগে নিজের গদি বাঁচান, বিজেপি আপনাকেই পাত্তা দেয় না। আপনার জন্য অত্যাচারী মোদী ক্ষমতায়। ’’
মমতা বলেন, ‘‘২৬ বাজার শিক্ষকদের চাকরি চলে যাব, এমন বোমা। হতাশ হবেন না। কেউ জীবনের ঝুঁকি নেবেন না। আমরা
পাশে আছি। যত দূর দরকার, লড়াই করব। দেখলেন
না সুপ্রিম কোর্ট এটাকে সরিয়ে দিয়েছিল। কাকে নিয়ে করবেন? বিচারের বাণি নিভৃতে কাঁদে। আমি বিচারক নিয়ে বলছি না। রায়
নিয়ে বলছি। রায়কে চ্যালেঞ্জ করছি। ২৬ হাজার শিক্ষক মানে দেড় লক্ষ পরিবার। টাকা
ফেরত চার সপ্তাহে কি সম্ভব?’’
Lok Sabha Election 2024: ‘বা… তোমার ৭ টাকার বাড়ানোর দরকার নেই’- প্রধানমন্ত্রীকে চরম গালাগালি দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মমতা বলেন, ‘‘এই রায় বেআইনি। আমরা যাঁদের চাকরি দিচ্ছি, আপনারা আইনের খোঁচায় কেড়ে নিচ্ছেন। চিন্তা করবেন না
শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীরা, আমরা পাশে আছি। ’’
মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি পিল (আবেদন) করলে বেল, আমরা পিল করলে বেল। কী করবেন? আমায় জেলে পাঠাবেন? মানুষের পাশ থেকে সরব না। পরিবারের পাশে আছি।’’
মমতা বলেন, ‘‘বিধানসভায় ৮০-ও পেরলো না। কত বলেছিল। এখন ১০টা পাও। তার পর
কথা বলো। এই সরকার ফেলা সহজ নয়। গোয়া, মহারাষ্ট্রে সরকার ফেলেছ। অরবিন্দ, হেমন্ত জেলে। আমরা ভয় পাই না।’’
মমতা বলেন, ‘‘তোমাদের ভয় পেলে তৃণমূল ছেড়ে দিতাম। আমরাই এক মাত্র দল, যাঁরা ভয় পায় না।’’
মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় কংগ্রেসের কী আছে? ধরলাম, ক্ষমতায় এল ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়া জোট
তৈরি করেছিল কে? আমি। বলেছিলাম কংগ্রেসকে, তোমাদের বাংলায় কী আছে? বিধানসভায় কোনও আসন নেই। তোমাদের দু’টো আসন দিচ্ছি।
নিয়ে থাকো। ভোট কাটাকুটির রাজনীতিতে যেয়ো না।’’
মমতা বলেন, ‘‘কেরলে কংগ্রেস সিপিএমের লড়াই হচ্ছে। বাংলায় দোস্তি হচ্ছে।
জলপাইগুড়িতে সিপিএম বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলেছে ভোট বিজেপিকে দাও।’’
কংগ্রেসকে খোঁচা দিলেন মমতা। বললেন, ‘‘একটা অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে। বলেছে টাকা নেই। যদিও সমর্থন
করি না ফ্রিজ করা। তোমাদের টাকার অভাব? তেলঙ্গানায় সোনার খনি। কর্নাটকে তোমরা ক্ষমতায়। হিমাচলে কাদের সরকার? তামিলনাড়ুতে যৌথ ভাবে সরকারে। আমরা একটা রাজ্যে। আমরা করি
না বলে আমাদের বলে।’’
মমতা বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের টাকা দেয়নি বিজেপি। মা-বোনদের সাম্মানিক
দিল না। আজ বলছে, তিন মাস পর
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার তুলে দেব। এত বড় সাহস? আমার ইচ্ছা হলে অন্য ভাষায় আক্রমণ করতাম। তোমাদের মতো নই। তাকালে মনে হয় কেউটে
সাপের আগুন বার হচ্ছে। এমন দল তোমরা। সারা দিন গালাগালি দাও।’’
মমতা বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘‘রাজবংশী, জনজাতি, সংখ্যালঘুদের জন্য কী করেছ? মণিপুরে গির্জা ভেঙেছো। মন্দির ভেঙে এনআইএকে ডেকে আনো। ’’
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কটাক্ষ করলেন মমতা।
জানালেন,
ডায়াবিটিস, যক্ষ্মার ওষুধের
দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকেরা আন্দোলন করছিলেন, রাস্তা কেটে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এনআরসি নিয়ে দিল্লিতে ক’জন মারা গিয়েছেন, জানেন? নালা লাল হয়ে
গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশেও মারা গিয়েছে।’’
মমতা বলেন, ‘‘সন্দেশখালির মহিলারা খারাপ রয়েছে বলে কেঁদে বেড়াচ্ছে।
গুজরাতের নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন খুন হয়েছে। কী করেছ? কুস্তিগীরের অপমান নিয়ে কী করেছ? সন্দেশখালির ঘটনা পরিকল্পিত রচনা।’’
মমতা বলেন, ‘‘বলছে বোমা ফাটাবে। বোমা কী? ২৬ হাজার লোকের চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। মানুষের জীবনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার
নাম বোমা। কোর্ট কী রায় দেবে আগে জানলি কী ভাবে? সোমবার রায় দেবে, শনিবার জানলি কী
ভাবে?
যদি রায় নিজেরা লিখে না দিস?’’