বিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে চোর-ডাকাতের উপদ্রপ ছিল। তৎকালীন সময়ে নিজেদের
মূল্যবান সম্পদ লুকিয়ে রাখার জন্য বাড়িতে কিংবা ঘরের মধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় গোপন কুঠুরি
বানিয়ে রাখা হত। ঠিক তেমনই একটি পন্থা কাজে লাগিয়ে ফিফা বিশ্বকাপের ট্রফি চুরি হওয়া
থেকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ইতালির অট্টরিনো বারেসি। জুতোর বাক্সের মধ্যে প্রায় ১২টা বছর
বন্দি করে রেখে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপ ট্রফি। যে ঘটনা আজও অনেকের কাছেই অজানা।
১৯৩৪ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইতালিতে। সে বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে
পারেনি বারেসির দেশ। তবে এর পরের বছরই নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছিলেন বারেসি’রা।
ফলস্বরূপ, বিশ্বকাপের ট্রফিও জিতেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এর পরই যেন বিরাট ধ্বংস লীলা
শুরু হল পৃথিবীর বুকে। ১৯৩৯ সালে বেজে গেল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা।
তৎকালীন সময়, স্বৈরাচারী জার্মান শাসক হিটলার এবং তাঁর সেনাবাহিনীর ভয়ে
কাঁপত গোটা বিশ্ববাসী। তখনকার সময় চুরি-ডাকাতি, খুন এসবই ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। উল্লেখ্য,
তখনকার সময়ে বিশ্বকাপের পরিচিতি ছিল 'জুলে রিমে কাপ' নামে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের
কারণে দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর বন্ধ থাকে এই ফুটবল বিশ্বকাপ। তাই এই পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্বকাপের
ট্রফি কীভাবে লুকিয়ে রাখবেন তা নিয়েই গভীর চিন্তায় ছিলেন বারেসি।
আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2022: বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর সতীর্থদের উজ্জীবিত করলেন রোনাল্ডো
আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2022: চোট পাওয়া লুকাকুকে নিয়েই বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বেলজিয়াম
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই হত্যালীলা শুরু করে দিয়েছিল হিটলারের
সেনাবাহিনী। যার জেরে সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল। এই কঠিন পরিস্থিতির
মধ্যেও শুধুমাত্র ট্রফি বাঁচানোটাই প্রধান লক্ষ্য হয়ে গিয়েছিল বারেসির। একদিন মাথা
খাটিয়ে দারুন বুদ্ধি বের করলেন বিশ্বকাপজয়ী ইতালির ফুটবলার। রোমের একটি ব্যাঙ্ক থেকে
ট্রফিটি নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি এবং সেটিকে জুতোর বাক্সের ভিতর পুড়ে বিছানার তোলার
রেখে দেন বারেসি। এই ভাবেই কাটে ১২টা বছর! পরবর্তী কালে (১৯৫০ সাল) ফের যখন বিশ্বকাপের
আসর বসল, তখন নির্দিষ্ট জায়গায় ট্রফিটি ফিরিয়ে দিলেন তিনি। যে ঘটনা আজও অবাক করে দেয়
ফুটবলপ্রেমীদের।