ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হল আর্জেন্টিনা। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় দুরন্ত পারফরম্যান্স করলেন লিওনেল মেসি। তিন বার এগিয়ে গিয়েও ড্র হল ম্যাচ। ফ্রান্সকে কার্যত একাই টানলেন কিলিয়ন এমবাপে। চার গোল মারলেন ফরাসি তারকা। হ্যাটট্রিক করলেন মেসি। কিন্তু এই দিন এমবাপের লড়াই বৃথা গেল ইমিলিয়ানো মার্টিনেজের সামনে। টাইব্রেকারে তাঁর দুরন্ত সেভের মাধ্যমেই তৃতীয়বারের জন্য বিশ্বকাপ জিতল আর্জেন্টিনা। ট্রাইব্রেকারে রুদ্ধশ্বাস ফাইনালের ফলাফল হল ৩(৪)-৩(২) গোলের।
প্রথমার্ধে দুরন্ত পারফরম্যান্স করল আর্জেন্টিনা। মাঠের একদিক থেকে অন্যদিকে নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া নেওয়া করতে দেখা গেল আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের। এই সুবাদে প্রথমার্ধে কার্যত নিষ্ক্রিয় দেখাল কিলিয়ন এমবাপে-অলিভার জিরুড'দের। এই অর্ধে মাত্র একটি গোলমুখী আক্রমণ করল ফ্রান্স। বক্সের সামনে থেকে ফ্রি কিক পাওয়া বলে হেড বাইরে মারলেন জিরুড। অন্যদিকে বলদখলের লড়াই থেকে শুরু করে গোলমুখী আক্রমণ সমস্ত দিক থেকেই প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকল আর্জেন্টিনা।
২৩ মিনিটের মাথায় ওসমানে ডিম্বলে ডি মারিয়া'কে বক্সের ভিতর ফাউল করেই ফ্রান্সের বিপদ ডেকে আনেন। পেনাল্টি থেকে আর্জেন্টিনা'কে এক গোলে এগিয়ে দিলেন মেসি(১-০)। ৩৬ মিনিটের মাথায় ব্যাবধান দ্বিগুন করে আর্জেন্টিনা। প্রতি আক্রমণের সময় বক্সের ভিতর থেকে ম্যাক আলিস্টারের বাড়ানো বলে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করলেন আঞ্জেল ডি মারিয়া(২-০)। বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করে আবেগী হয়ে পড়েন তিনি। কাঁদতেও দেখা যায় তাঁকে। প্রথমার্ধে মেসিদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সামনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি ফ্রান্স। এই সুবাদে ২-০ এগিয়ে বিরতিতে ফেরে আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। তবে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্ষণাত্মক ছন্দে চলে যান আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা। ৭৫ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচের হাল ধরে রেখেছিলেন মেসি-ডি পল'রা। কিন্তু ৮০ মিনিটের পর আচমকাই ঝড় তোলেন এমবাপে। দুই মিনিটের মধ্যে আর্জেন্টিনার দুই গোলের লিড ভেঙে দেয় ফ্রান্স। পেনাল্টি থেকে গোল ২-১ করেন এমবাপে। ৮১ মিনিট নাগাদ সমতা ফেরান তিনি। বক্সের ভিতর থেকে দুরন্ত ভলি মেরে গোল দেন ফরাসি তারকা(২-২)। এর পর অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। এই পর্বে ফের একবার আর্জেন্টিনা'কে এগিয়ে দেন মেসি(৩-২)। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের শেষ লগ্নে ফের সমতা ফেরান এমবাপে। এই সুবাদে ম্যাচের ফলাফল দাঁড়ায় ৩-৩ গোলের। এর পর ট্রাইব্রেকারে বাজিমাত করেন আর্জেন্টিনার রক্ষণ দুর্গের শেষ প্রহরী ইমিলিয়ানো মার্টিনেজ। একটি দুরন্ত সেভ দেন তিনি। অন্য একটি শট বাইরে মারেন ফরাসি ফুটবলার। এই সুবাদে ম্যাচের হয় ৩(৪)-৩(২) গোলের। ট্রাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জয় করল আর্জেন্টিনা। ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালের পর ফের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেল দিয়েগো মারাদোনা'র দেশ।