বয়স ৪০ পেরোতেই অনিয়মিত মাসিকের সমস্যায় ভুগছেন। কোনও মতেই ঋতুচক্র সময় মতো হচ্ছে না। কখনও মাসে ঠিকমতো রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আবার কোনও মাসে দু’দিনেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পিরিয়ড। আবার কখনও মাসের মাঝখানে ‘স্পটিং’ হচ্ছে। অর্থাৎ, ফোঁটা ফোঁটা রক্তপাত। ঋতুস্রাবের এমন সমস্যা মাঝ বয়সে এসে কেন হচ্ছে? এই প্রশ্ন নিশ্চয়ই আপনার মনেও এসেছে। এর কিন্তু দু’টি কারণ হতে পারে। যেহেতু আপনি মেনোপজের দিকে এগোচ্ছেন, সেখানে ঋতুচক্রে ছন্দপতন হতে পারে। অথবা, আপনি জরায়ু মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত।

মহিলাদের মধ্যে যে সব ক্যান্সারের সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তার মধ্যে রয়েছে এই জরায়ু মুখের ক্যান্সার। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মহিলা এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। মূলত হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি)-এর আক্রমণেই এই ক্যান্সার হয়। অসুরক্ষিত যৌন মিলন থেকেই এই ভাইরাস নারী দেহে প্রবেশ করে। সার্ভিক্যাল ক্যান্সার কিন্তু প্রতিরোধযোগ্য। এর উপসর্গগুলো এড়িয়ে গেলেই মুশকিল।

অধিকাংশ মহিলাই যৌন সমস্যা নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করতে ভয় পান। যৌনাঙ্গে কোনও সমস্যা তৈরি হয়েছে কি না, যৌন মিলনের সময় ব্যথা, জ্বালাভাবের মতো সমস্যাগুলো মহিলারাই এড়িয়ে যান। আর এগুলোই জানান দেয় যে, আপনি সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা। এছাড়া অনিয়মিত ঋতুস্রাবও সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। মেনোপজের দোরগোড়ায় পৌঁছালে পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে যায়। একইসঙ্গে, এই বয়সকালেই সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তাই যৌনাঙ্গে ব্যথা হোক বা অনিয়মিত ঋতুস্রাব, কোনও উপসর্গকেই এড়িয়ে যাবেন না।

কাদের মধ্যে সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি:

কম বয়সে বিয়ে হলে, খুব কম বয়স থেকে যৌন মিলনে লিপ্ত হলে, একাধিক যৌন সঙ্গী থাকলে, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে গর্ভনিরোধক পিল খেলে, অতিরিক্ত ধূমপান, একাধিকবার গর্ভবতী, ঋতুস্রাবের সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখলে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে আপনি সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। কিংবা আপনি যৌন সঙ্গীর দেহে এইচপিভি ভাইরাস থাকলে, সেখান থেকেও আপনি সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন।

সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের উপসর্গ:

পেলভিকে ব্যথার সঙ্গে রক্তপাত, অনিয়মিত ঋতুস্রাব, রক্তক্ষরণে দুর্গন্ধ সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের লক্ষণ। এছাড়া মধ্যবয়সে এসে যদি অস্বাভাবিক সাদা স্রাব নির্গত হয়, চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এছাড়া যৌন মিলনের সময় যদি অস্বাভাবিক ব্যথা-যন্ত্রণা হয় এটা জরায়ু মুখের ক্যান্সার হতে পারে।