আপনি নিশ্চয় সর্বত্র পড়েছেন যে বা শুনেছেন যে সীতার স্বয়ম্বর হয়েছিল। কিন্তু শ্রী রামচরিত মানস ও বাল্মীকি রামায়ণের কিছু পর্ব নিয়ে মতভেদ রয়েছে। বাল্মীকি রামায়ণে সীতার স্বয়ম্বরের কোনও বর্ণনা নেই। তাঁর মতে, একবার রাম ও লক্ষ্মণ ঋষি বিশ্বামিত্রের সাথে মিথিলায় এসেছিলেন। যেখানে বিশ্বামিত্র রাজা জনককে শিবের ধনুক অর্থাৎ হরধনু দেখাতে বলেছিলেন। তারপর শ্রীরাম সেই ধনুকটি তুলে নিলেন এবং অর্পণ করার সময় তা ভেঙে গেল। তারপর রাজা জনক বিশ্বামিত্রকে অনুরোধ করলেন তাঁর কন্যা সীতাকে ভগবান রামের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য, কারণ রাজা জনক প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে যিনি হরধনু ভঙ্গ করতে পারবেন তার সাথেই তিনি কন্যা সীতার বিবাহ দেবেন।

বাল্মীকি রামায়ণ অনুসারে, সীতার বিবাহের সময় লক্ষ্মণ ও পরশুরামের মধ্যে কোনও বিবাদ ছিল না। এই রামায়ণ অনুসারে, শ্রী রাম যখন সীতাকে বিয়ে করে অযোধ্যায় ফিরছিলেন, পথে তিনি পরশুরামের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি শ্রী রামকে তার ধনুকে তির নিক্ষেপ করতে বললেন। শ্রীরাম ধনুকে তির নিক্ষেপ করলে তিনি কারও সাথে তর্ক না করে চলে যান।  

একবার নন্দীকে দেখে রাবণ তাঁর রূপ দেখে হেসে তাঁকে বানরমুখো বলে ডাকেন। তখন নন্দী রাবণকে অভিশাপ দেন যে, বানরদের কারণেই তুমি ধ্বংস হবে।

যেদিন রাবণ সীতাকে অপহরণ করে অশোকবনে নিয়ে আসেন। সেই রাতেই ভগবান ব্রহ্মার আদেশে দেবরাজ ইন্দ্র সীতার জন্য ক্ষীর নিয়ে আসেন। প্রথমে ইন্দ্র অশোকবনের সমস্ত রাক্ষসকে মন্ত্রমুগ্ধ করে ঘুমিয়ে দেন। এরপর মা সীতাকে ক্ষীর নিবেদন করা হয়। তা খেয়ে সীতার ক্ষুধা ও তৃষ্ণা মিটে গেল।

রামায়ণ অনুসারে, সমুদ্রের উপর সেতু তৈরি করতে সময় লেগেছিল ৫ দিন। প্রথম দিনে বানররা ১৪টি যোজন, দ্বিতীয় দিনে ২০টি যোজন, তৃতীয় দিনে ২১টি যোজন, চতুর্থ দিনে ২২টি যোজন এবং পঞ্চম দিনে ২৩টি যোজনে সেতুটি তৈরি করে। এভাবে সমুদ্রের উপর মোট ১০০ যোজন দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। এই সেতুটি ১০ ​​যোজন চওড়া ছিল।

রামায়ণ অনুসারে, রাবণের বোন শূর্পণখাও দাদার সর্বনাশ চেয়েছিলেন, শূর্পণখার স্বামীর নাম ছিল বিদ্যুৎজীব। তিনি কালকেয় নামে এক রাজার সেনাপতি ছিলেন। রাবণ যখন বিশ্বজয়ের নামেন, তখন তিনি কালকেয়ের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন। সেই যুদ্ধে রাবণও বিদ্যুৎজীবকে হত্যা করেছিলেন। তখন শূর্পনখা মনে মনে রাবণকে অভিশাপ দেন যে, আমার কারণে তোমার সর্বনাশ হবে।