জীবনযাপনের জন্য অর্থ হল অন্যতম অপরিহার্য
উপাদান। কারণ টাকা ছাড়া জীবনে চলা অসম্ভব। আর টাকা রোজগার করতে গেলে কাজ করতে হবে। আর পেশাদার জীবন বড় সমস্যার! কাজ
করতে গেলে অনেক কিছুই সহ্য করতে হয়। মেনে চলতে হয় বিভিন্ন
নিয়ম। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে কাজ হয়ে উঠেছে ২৪ ঘন্টার। এক্ষেত্রে রোটেশনাল শিফটে কাজ চলে। এই ধরনের চাকরির ক্ষেত্রে
সপ্তাহের কিছু নির্দিষ্ট দিন মর্নিং থাকে তো কিছু দিন থাকে নাইট। এই ধরনের কাজের
আওতায় পুলিস, আইটি কর্মী, চিকিৎসক,
সাংবাদিক, সিকিউরিটি গার্ড সহ কিছু
পেশার ব্যক্তিরা রয়েছেন।
এইখানেই শুরু হয় সমস্যা
কারণ আপনার শরীর এই কাজের শিফট নাও বুঝতে পারে। কারণ শরীরের
তো নিয়মিত ৭ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন। আর এরফলেই জাপ্টে ধরে অনিদ্রা। এছাড়াও নিয়মিত ঘুমের ঘাটতি হলে ডায়াবিটিস, ব্লাড
প্রেশার, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, অবসাদ,
উৎকণ্ঠার মতো সমস্যা জীবনে ঝামেলা তৈরি করতে পারে। তাই রোটেশনাল
শিফটে কাজ করা ব্যক্তিদের ৭ ঘণ্টার শান্তির ঘুম পেতে এই কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হবে-
১) আপনার শিফট যখনই শেষ হোক না কেন, তারপর ঘুমানোর
চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে সকাল, বিকাল
দেখলে হবে না। রাতে শিফট করে সকালে ঘুমাতে গেলে ঘরের দরজা, জানলা বন্ধ করে দিন। চেষ্টা করুন যাতে চোখে কম
আলো পড়ে। এছাড়া চোখে আই মাস্কও ব্যবহার করতে পারেন। আই মাস্ক পরলে চোখে আলো যায়
না। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে না।
২) ঘরে আওয়াজ ঢুকলে ঘুম হবে না। এমনিতেই আপনি অসময়ে ঘুমাচ্ছেন, তারপর যদি আবার কানে আওয়াজ যায়, তবে ঘুমের ব্যঘাত
ঘটবেই। এই পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করার জন্য নিস্তব্ধতা খুঁজতে
হবে। চেষ্টা করুন শোয়ার ঘরের দরজা বন্ধ রাখার। সেই ঘরে যাতে আওয়াজ না ঢোকে তা
নিশ্চিত করতে হবে। দেখবেন, তাহলেই ঘুম আসছে সহজে।
৩) ঘুম সুখের অনুভূতি এনে দেয়। তাই ভালো ঘুমের জন্য আমাদেরও একটু খাটতে
হবে। সেক্ষেত্রে ঘুমের সময় ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক হওয়া চাই। খুব ঠান্ডা বা খুব
গরম কোনওটাই ঘুমের জন্য সহায়ক নয়। বরং ঠান্ডা ও গরমের মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকা
দরকার। তবে আসল কথা হল, আপনি কোন তাপমাত্রায় স্বাচ্ছন্দ,
ঘরের তাপমাত্রা সেই অনুযায়ী থাকলেই আপনার সহজে ঘুম আসবে।
৪) অনেকেই নাইট শিফট সেরে এসে খুবই ক্লান্ত হয়ে
পড়েন। বাড়ি এসেই সোজা বিছানায় চলে যান। এটা কিন্তু ভুল অভ্যাস। বরং বাড়ি এসে
ফ্রেস হয়ে নিন। চোখ-মুখে জল দিন। তারপর কিছুটা সময় বসুন। এরপর কিছু একটা হালকা
খাবার খেয়ে ঘুমাতে যান। মনে রাখবেন, ঘুমের আগে পেট ভরে খাবার খেয়ে কোনও লাভ নেই। এতে সমস্যা হয়। বরং হালকা
কিছু খান। তারপর ঘুমাতে যান।
৫) ১ দিন নাইট, ১ দিন ডে করার তুলনায়, টানা ডে বা নাইট শিফট করা ভালো। কারণ এতে শরীর সময়ের সঙ্গে নিজেকে
মানিয়ে নেওয়ার সময় পায়। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা কম থাকে। আর একদিন নাইট, একদিন ডে করলে শরীর বুঝতেই
পারে না আপনি কী চাইছেন। ফলে সমস্যা দেখা দেয়।