আটের দশকে একজন অভিনেত্রী চলচ্চিত্র
জগতে এসেছিলেন। এসেই বেশ জনপ্রিয়তা পান তিনি। জনপ্রিয়তা পাওয়ার কারণ তাঁর
অভিনয় ক্ষমতা যত না ছিল তার থেকে ঢের বেশি ছিল সৌন্দর্য। এই অভিনেত্রীর নাম ছিল
সোনা মাস্তান মির্জা। আসল নাম শাহজাহান বেগম হলেও তিনি সোনা নামেই অধিক পরিচিত
ছিলেন। সোনা ‘আদমখোর’, ‘বিবি কিরায়ে’র মতো বহু
কম বাজেটের ছবিতে কাজ করেছেন। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল সোনা দেখতে ছিলেন ভারতের
মেরিলিন মুনরো মধুবালার মতো। তাঁর হাসিতে ছিল মধুবালার ছাপ, চেহারায় অনন্য সুন্দরী অভিনেত্রীর সৌন্দর্য।
সোনা মাস্তান মির্জা আরও একটি কারণে
জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন মুম্বইয়ের ডন হাজি মাস্তানের দ্বিতীয়া স্ত্রী।
ছয় থেকে আটের দশক পর্যন্ত হাজি রূপনগরীতে রাজত্ব করেছেন। হাজি মাস্তানকে সবাই ভয়
পেত,
সে সাধারণ মানুষ হোক বা চলচ্চিত্র তারকা। তিনি সেই সময়
চলচ্চিত্রেও অর্থ বিনিয়োগ করতেন। অনলাইন মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, হাজি মাস্তান মধুবালার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তিনি
চেয়েছিলেন মধুবালা তাঁর স্ত্রী হন। তাঁর জন্য চেষ্টার কসুর করেননি হাজি। তবে সব
চেষ্টায় ব্যর্থ হয়। ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে মধুবালা মারা গেলে তিনি ভেঙে পড়েন।
এই শোক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যখন হাজি মাস্তান প্রবলভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন সেই সময় তিনি জানতে পারলেন যে মধুবালার
মতো দেখতে একটি মেয়ে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করেছেন। সেই মেয়েটি ছিলেন সোনা।
দেরি না করে হাজি মাস্তান সোনার ছবির সেটে যেতে শুরু করেন এবং বিয়ের প্রস্তাব দেন।
মাস্তানকে ভাল লেগেছিল সোনারও, তাই তিনিও রাজি হয়ে যান। একসময় তাঁদের বিয়েও হয়। বিয়ের পর
চলচ্চিত্র জগৎকে বিদায় জানান সোনা।
আরও পড়ুন: জেনে নিন কেন লোকসভায় ৪২০ নম্বর আসন নেই
আরও পড়ুন: ক্রিকেট ইতিহাসের সেই খেলোয়াড় যিনি ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তানের হয়েও খেলেছেন ক্রিকেট
সোনা হাজি মাস্তানের দ্বিতীয় স্ত্রী
ছিলেন। ১৯৯৪ সালে হাজি মাস্তান মারা যান, তারপরে সোনা সম্পূর্ণ একা ছিলেন। চলে গিয়েছিলেন বিস্মৃতির অন্তরালে। ২০১৪ সালে
সোনা মির্জা মাস্তান মারা যান। এর কয়েক বছর পরে তাঁর নাম আবার শিরোনামে আসে।
হাসিন মির্জা নামে ৩২ বছর বয়সী এক মহিলা দাবি করেছিলেন যে তিনি সোনা এবং হাজি
মাস্তানের মেয়ে। তবে হাসিন এও বলেছিলেন যে তিনি শুধু সোনার মেয়ে, হাজি মাস্তান তাঁর বাবা ছিলেন না। হাজি তাঁকে শুধু বড়
করেছেন। মা সোনার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন হাসিন। তাঁর দাবি ছিল সোনা জোর
করে তাঁকে নাসির হুসেন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন, যিনি হাসিনের উপর যৌন নির্যাতন করেছিলেন। হাসিনের বক্তব্য ছিল, জুহুতে একটি বাড়ি হাজি মাস্তান তাঁর নামে করে গিয়েছেন।
বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালতে গরায়। সেখানেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা
নেওয়া হয়।