যেকোনও তরকারিতে একটু ধনে পাতা না
দিলে হয় না। কিন্তু সুস্বাদু ধনেপাতার বিভিন্ন
ওষধি গুণ থাকার পাশাপাশি কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। খাবারের স্বাদ
বাড়ালেও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক সময় ভয়ানক ক্ষতিকর হতে পারে এই ধনে পাতা। আসুন
জেনে নেই ধনে পাতার সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিকগুলো।
১) শ্বাসকষ্ট: শ্বাসকষ্টের রোগীদের ধনেপাতা খাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেন চিকিত্সকরা।
কেননা এটি শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা করে। যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা সৃষ্টি
হতে পারে। শ্বাসকষ্টের রোগীরা ধনেপাতা খেলে ছোট ছোট নিঃশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি
হয়।
২) ভ্রূণের ক্ষতি: নারীদের
গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক।
ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান নারীদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে।
যার ফলে নারীদের বাচ্চাধারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়। বাচ্চাধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের
মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
৩) লো ব্লাড প্রেশার: অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে হৃৎপিন্ড ক্ষতিগ্রস্ত
হয়। এটি নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। চিকিত্সকরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ধনেপাতা
খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে অতিরিক্ত খেলে সেটা নিম্ন রক্তচাপের সৃষ্টি করে। এছাড়া
এটি মাথা ব্যথারও কারণ হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন? এইগুলি খেলেই মিটবে সমস্যা
৪) লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট: অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে
থাকে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে
ফেলে। এছাড়া এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। কিন্তু দেহের
মধ্যে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।
৫) পেটের পীড়া:
স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে। কিন্তু
বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে পাকস্থলীর হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে। গবেষণা বলছে, সপ্তাহে ২০০ গ্রামের বেশি ধনেপাতা খেলে তা গ্যাসের ব্যথা, পেটে ব্যথা, পেট ফোলা, বমি হওয়া এমনকি ডায়রিয়ার কারণ হতে
পারে।
ডায়াবেটিস থেকে ইউরিক অ্যাসিড, এক নিমেষে দূর করবে এই চেনা পাতা
৬) বুকে ব্যথা: অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে বুকে ব্যথার মতো জটিল সমস্যা
দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও
করে। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম পরিমাণে ধনেপাতা খেতে পারেন।
৭) ত্বকে ভিটামিন ঘাটতি ও ক্যান্সার: সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি
অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে।
কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না।
ফলে ত্বক ভিটামিন ‘কে’ থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকে ক্যান্সারও তৈরি করে থাকে।
৮) অ্যালার্জি: ধনেপাতার
প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে
থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে অ্যালার্জীর
তৈরি হয়। এই অ্যালার্জীর ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র্যাশ ওঠা ইত্যাদি সমস্যা তৈরি করে।
৯) মুখ ব্যথা: অতিরিক্ত
ধনেপাতা খাওয়ার আর একটি ক্ষতিকর দিক হল মুখে ব্যথা হওয়া। ধনেপাতায় বিভিন্ন এসিডিক
উপাদান রয়েছে, যা ত্বককে সংবেদনশীল
করে থাকে। পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হওয়া। সারা মুখ লালও হয়ে যেতে পারে।
