মহালয়ায় ‘মহিষাসুরমর্দিণী’ মানেই চোখের সামনে
ভেসে ওঠে কালজয়ী ত্রয়ীর নাম। গ্রন্থনা ও শ্লোকপাঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, সঙ্গীত পরিচালনায়
পঙ্কজ মল্লিকের পাশাপাশি সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাণীকুমারও। তিনি ছিলেন খোদ হাওড়ার
বাসিন্দা।
বাণীকুমারের আসল নাম বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য।
১৯০৭ সালের ২৩ নভেম্বর হাওড়ার কানপুর গ্রামের
মামারবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন ইনি। বাণীকুমারের পৈতৃক ভিটে ছিল হুগলির আঁটপুরে। তাঁর
বাবা বিধুভূষণ ভট্টাচার্য ছিলেন একাধারে ঐতিহাসিক ও সংস্কৃতজ্ঞ। মা অপর্ণা দেবী। দম্পতির
চার পুত্র-কন্যার মধ্যে জ্যেষ্ঠ সন্তান ছিলেন বাণীকুমার ওরফে বৈদ্যনাথ। প্রথমে হাওড়া
জেলা স্কুল, তারপর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণিতে ইংরেজি বিভাগে স্নাতক হন
তিনি। বাবা, পিতামহ সবারই ছিল সংস্কৃতে অগাধ পান্ডিত্য। তাই ভোলেননি শিকড়ের টান। ইংরেজি
নিয়ে পড়াশোনা করলেও সংস্কৃতেও ছিল তাঁর অগাধ ব্যুত্পত্তি। সংস্কৃত নিয়ে গবেষণা করে
‘কাব্যসরস্বতী’ উপাধি লাভ করেন বাণীকুমার। হাওড়া জেলা স্কুলের শিক্ষক করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়ের
অনুপ্রেরণায় কাব্য রচনা শুরু বাণীকুমারের।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2022: কালী আরাধনায় ফিরল কপাল, শুরু হল দুর্গাপুজো
আরও পড়ুন: Durga Puja 2022: এই বাড়ির শারদোত্সবে মহিলারা শেষে নয়, পুরুষের আগে খেতে বসেন
পরবর্তীকালে হাওড়ার কাসুন্দিয়ার সুবল কোলে
লেনে বাণীকুমার জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন। বেশ কয়েক বছর আগে খুরুট বারোয়ারির কাছে
বাণীকুমারের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। স্থানীয় প্রবীণদের বক্তব্য, মহালয়ায় সেই
মূর্তিতে মাল্যদান করা হলেও সারাবছর তা পড়ে থাকে অনাদরে, অবহেলায়, বিস্মৃতির আড়ালে।
তাঁদের আক্ষেপ, হাওড়া জেলার নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না যে ‘মহিষাসুরমর্দিণী’র
অন্যতম কারিগর বাণীকুমার এই জেলারই বাসিন্দা।