বাঙালির আগ্নেয়গিরি দর্শনের শখ প্রথম জাগিয়ে গিয়েছিলেন সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ‘চাঁদের পাহাড়’-এ
বঙ্গদেশের এক এঁদো গ্রামের যুবক শঙ্করের দেখা ওলডোনিও লেঙ্গাই যা
কীনা অগ্নিদেবের শয্যাম, তাকে কোন বাঙালি পাঠক ভুলতে
পেরেছে! যতবার ‘চাঁদের পাহাড়’ পড়া যায়,
ততবার প্রতিটি বাঙালি তাঁর সঙ্গে ভ্রমণ করে আসেন সুদূর আফ্রিকায় দূর থেকে
দূরান্তরে। কিন্তু বহু মানুষেরই অদম্য ইচ্ছা রয়েছে চাক্ষুষ সক্রিয় আগ্নেয়গিরি দেখার। বহু
আগ্নেয়গিরি রয়েছে সেগুলি সক্রিয় হল সেখানে চাক্ষুষ দেখার অনুমতি দেয় না সরকার।
কিন্তু বেশ কয়েকটি আগ্নেয়গিরি রয়েছে যেখানে গেলে চাক্ষুষ দর্শন করা যাবে
প্রকৃতির দৃশ্য।
১) তান্না
দ্বীপ আগ্নেয়গিরি - এই আগ্নেয়গিরির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়
ভানুয়াতুয়ে। এখানে পাহাড়ের বুক চিরে লাল ও কমলা লাভা উদগীরণ নিঃসৃত হয়। এই
অপার্থিব প্রাকৃতিক মহিমা চাক্ষুষ দর্শন করতে বছরের প্রতিদিনই ভিড় জমে
আগ্নেয়গিরির পাদদেশে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে অঞ্চলটিকে নিরাপত্তার মোড়কে ঘিরে
দেওয়ার কারনে এখানে পর্যটকরা নিঃসন্দেহে অ্যাডভেঞ্চার উপভোগ করতে পারে সম্পূর্ণ
নিরাপদে।
২) স্ট্রোম্বলি- অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে একটি হলো
স্ট্রোম্বলি আগ্নেয়গিরি। এটি মূলত ইতালিতে অবস্থিত। ১৯৩২ সাল থেকে সিসিলিতে
অগ্নুত্পাত ঘটিয়ে আসছে আগ্নেয়গিরিটি। তবে এর বিশেষত্ব হচ্ছে মধ্যরাতেও নিজের
ভেতর থেকে তরল জ্বলন্ত লাভা উদগীরণ করতে পারে। যার কারণে এটিকে ভূমধ্যসাগরের
বাতিঘর বলা হয়ে থাকে। এই অপার দৃশ্য দেখতে ভিড় জমায় পর্যটকেরা।
৩) লাতাকুঙ্গা- অন্যান্য সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে হয়
ইকুয়েডর মালভূমিতে অবস্থিত রয়েছে লাতাকুঙ্গা আগ্নেয়গিরি। এই আগ্নেয়গিরির
কোটোপ্যাক্সি দেখার জন্য একটি লঞ্চ প্যাডের ব্যবস্থা রয়েছে। গভীর সমুদ্রের গর্ভে
শঙ্কু আকৃতির দেহাকৃতি নিয়ে অবস্থান করে এই আগ্নেয়গিরিটি।
৪) মাউন্ট মেয়ন - এই আগ্নেয়গিরি দেখতে পর্যটকদের ভিড় জমায়
ফিলিপাইন্সে। ১৯৩৮ সালে এটিকে উদ্যান বলে ঘোষণা করেছিল সরকার। মাউন্ট মেয়ন
আগ্নেয়গিরিকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিখুঁত আগ্নেয়গিরি বলা হয়। এখানে পর্যটকদের
অ্যাডভেঞ্চার দ্বিগুণ করার জন্য ট্রেকিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
৫) মাউন্ট টাইডে - স্পেনের টেনেরিফের ক্যানারিয়ান দ্বীপে
অবস্থান করছে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট টাইড। ২০০৭ সালে আগ্নেয়গিরিটি ইউনেস্কো
ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অ্যাখ্যা পায়। এছাড়াও স্পেনের সর্ববৃহৎ শৃঙ্গ নামেও পরিচিত।
কার্যত পর্যটকদের জন্য নিরাপদ হাওয়ায় ঢল নামে পর্যটকদের।