বাংলা বছরের প্রথম দিন পরিচিত পয়লা বৈশাখ নামে। এই দিন থেকে শুরু হয়
নববর্ষ। এই বছর ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে পয়লা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ পশ্চিমবঙ্গ ও
বাংলাদেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বের বাঙালিদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। উৎসবটি
বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম দিনটিকে চিহ্নিত করে। পয়লা বৈশাখের ইতিহাস ষোড়শ শতাব্দীতে মুঘল যুগ থেকে শুরু হয় বলে মনে
করা হয়, যখন সম্রাট আকবর ফসল কাটার
মরশুমের উপর ভিত্তি করে একটি নতুন কর ব্যবস্থা চালু করেন।
পয়লা বৈশাখের দিন কেন গায়ে দেওয়া হয় নতুন বস্ত্র
আকবর মুঘল ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন, যা ছিল ইসলামি ও হিন্দু ক্যালেন্ডারের সমন্বয়।
বাংলা ক্যালেন্ডারের সঙ্গে আর্থিক বছর মিলিয়ে দেওয়ার আকবরের সিদ্ধান্ত পরবর্তীকালে
উৎসবে পরিণত হয়। প্রথমে আকবরের পঞ্জিকার নাম ছিল 'তারিখ-এ-এলাহি'। এই পঞ্জিকায় মাসগুলো ছিল আর্বাদিন, কার্দিন,
বিসুয়া, তীর এমন নামে। তবে ঠিক কখন যে এই নাম
পরিবর্তন হয়ে বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়,
শ্রাবণ হল তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারে না। মনে করা হয় বাংলা বারো
মাসের নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন নক্ষত্র থেকে। যেমন বিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ,
জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র থেকে জ্যৈষ্ঠ, আষাড়া নক্ষত্র
থেকে আষাঢ়, শ্রবনা নক্ষত্র থেকে শ্রাবণ, ভাদ্রপদ থেকে ভাদ্র, অশ্বিনী থেকে আশ্বিন, কৃত্তিকা থেকে কার্তিক, মৃগশিরা থেকে অগ্রহায়ণ,
পুষ্যা থেকে পৌষ, মঘা থেকে মাঘ, ফাল্গুনী থেকে ফাল্গুন ও চিত্রা থেকে চৈত্র। আকবরের আমলে প্রত্যেকে চৈত্র
মাসের শেষ দিনের মধ্যে সব খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে
বাধ্য থাকত। এর পরের দিন পয়লা বৈশাখে জমিদাররা প্রজাদের মিষ্টান্ন বিতরণ করতেন,
আপ্যায়ন করতেন।
পয়লা বৈশাখের ছুটি কবে? কী বলছে রাজ্য সরকার
অনেক ইতিহাসবিদ দাবি করেন, গৌড়বঙ্গের রাজা
শশাঙ্কের রাজত্বকালে বঙ্গাব্দের উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করা হয়। ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দে
কর্ণসুবর্ণর সিংহাসনে বসেন শশাঙ্ক। সেই রাজ্যাভিষেকের বছর থেকেই অব্দ বা বৎসর গণনা
করা হয়, সেটাই আসলে বঙ্গাব্দ।