ভারত ছাড়া ১৫ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা
এবং তানজানিয়াতে ইঞ্জিনিয়ার দিবস হিসাবে পালিত হয়। আজ আমরা জানব ভারতের প্রথম
মহিলা ইঞ্জিনিয়ারের কথা, যিনি মাত্র ১৮ বছর
বয়সে সিঙ্গল মাদার হয়েও ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন। ভারতের প্রথম মহিলা
ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন আয়ালাসোমায়াজুলা ললিতা (এ ললিতা)। তিনি ১৯১৯ সালের ২৭ আগস্ট
চেন্নাইতে জন্মগ্রহণ করেন। ললিতার বাবার নাম ছিল পাপ্পু সুব্বা রাও, যিনি নিজে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যাপক ছিলেন।
সাত ভাইবোনের মধ্যে ললিতা ছিলেন পঞ্চম সন্তান। তখন মেয়েদের শুধুমাত্র প্রাথমিক
জ্ঞানের জন্য পড়ানো হত, তাই ললিতাকেও
ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়ানো হয়। কিন্তু বিয়ের পর তিনি সংগ্রাম করে
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে ললিতার বিয়ে
হয়। তাঁর বাবা-মা শিক্ষায় দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন এবং জোর দিয়েছিলেন যে তিনি
বিয়ের পরেও পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন। ১৮ বছর বয়সে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার
চার মাস পর ললিতার স্বামী মারা যান। সেই সময়ে ভারতীয় সমাজে বিধবাদের সঙ্গে ভাল
ব্যবহার করা হত না, তাই ললিতা নিজেকে
এবং মেয়েকে সুন্দর জীবন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ললিতা কুইন মেরি কলেজ থেকে প্রথম
বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেন। এরপর তিনি কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং, গিন্ডি, মাদ্রাজ
ইউনিভার্সিটিতে (সিইজি) চার বছর ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন।
আরও পড়ুন: Subhas Chandra Bose: জানেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কী খেতে বেশি ভালবাসতেন
আরও পড়ুন: Netaji: নেতাজিই ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, লেখা হতে পারে নতুন ইতিহাস
কলেজ থেকে পাশ করার পর, তিনি বিহারের জামালপুরে একটি রেলওয়ে ওয়ার্কশপে ইন্টার্নশিপ
করেন এবং তারপর ভারতের সেন্ট্রাল স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজেশন সিমলায়
ইঞ্জিনিয়ারিং সহকারি হিসাবে কাজ করেন। পরে তিনি কলকাতার অ্যাসোসিয়েটেড
ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজে (AEI) চলে এসেছিলেন।
ভারতে মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায়ার
কৃতিত্বকে স্বীকৃতি ও সম্মান জানাতে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে জাতীয় প্রকৌশলী দিবস
পালিত হয়। ১৮৬১ সালে কর্ণাটকের মুদ্দনাহল্লি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি।
মোক্ষগুণ্ডম তাঁর নিজ শহরে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেন এবং পরে মাদ্রাজ
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। যাইহোক, তিনি স্নাতকের পর তার কর্মজীবনের পথ পরিবর্তন করেন এবং
পুনের কলেজ অফ সায়েন্সে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়ন করেন। ১৮৮৩ সালে অনুষ্ঠিত
পরীক্ষায় প্রথম হন মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায়ার। ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে তিনি অনেক
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প সম্পন্ন করেছিলেন। তিনি স্বয়ংক্রিয় অটোমেটিক ডিজাইন করে তা
পেটেন্ট করেছিলেন, যা পুনের
খাদকওয়াসলা জলাধারে ১৯০৩ সালে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছিল। মহীশূরে কৃষ্ণ
রাজা সাগর বাঁধ নির্মাণে তিনি প্রধান ইঞ্জিনিয়ারের ভূমিকা পালন করেন। মোক্ষগুণ্ডম
বিশ্বেশ্বরায়ার হায়দ্রাবাদের বন্যা সুরক্ষা ব্যবস্থার নকশা করেছিলেন।