‘নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান; বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান’-অতুল প্রসাদ সেনে’র লেখা এই দুই পঙক্তি যথেষ্ট
ভারতের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য’কে বোঝাতে।
দেশের অন্যত্রের মতোই ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী কলকাতা
যুগের পর যুগ সম্প্রীতি’র বার্তা দিয়ে এসেছে, দিশা দেখিয়েছে দেশকে। কলকাতার সেই ঐতিহ্য আজও অটুট। এখানে ভিন্ন ধর্মের,
ভিন্ন ভাষাভাষির মানুষ যেমন দুর্গাপুজো’কে সেলিব্রেট
করে তেমনই আপন করে নেয় ইদ বা ক্রিসমাস’কে। ব্যতিক্রম নন
ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম নক্ষত্র মেহতাব হোসেন।
ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানে দাপটের সঙ্গে খেলা এই বঙ্গতনয়ের
কাছে দুর্গা পুজো মানেই ছোট বেলার ফেলে আসা স্মৃতিবিজারিত ইতিহাসের পাতা উল্টে
পাল্টে দেখা এবং পুজোর সময়ে বাড়িতে থাকলে পরিবারের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠা।
ভারতীয় দল এবং ক্লাব ফুটবলের দৌলতে পুজোর সময়ে যৌবনের
অধিকাংশটাই ভিকি’র কেটেছে বাংলার বাইরে। শেষ ১৫-১৬ বছর কখনও
আই লিগ, কখনও আইএসএল, কখনও ফেডারেশন
কাপ আবার কখনও ভারতের জার্সিতে নিজের দায়িত্ব সামলাতে তিলোত্তমা থেকে পুজোর
দিনগুলিতে বহু দূরেই থেকেছেন। তবে, ব্যস্ততা গ্রাস করার আগে
দুর্গা পুজো’কে ইদের মতোই সেলিব্রেট করতেন এই তারকা।
আরও পড়ুন: ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য কোচের নাম ঘোষণা করল আইএফএ
আরও পড়ুন: ইনসাইড স্পোর্টসের সম্মান জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাবে একই মঞ্চে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান
Sportsnscreen- এর সঙ্গে আড্ডায় ছোট বেলার সেই ফেলে আসা
দিনগুলোই আবার জীবন্ত করলেন একদা ইস্ট-মোহনের মাঝমাঠের হৃদপিণ্ড। তাঁর কথায়,
“ছোট বেলায় কোচের হাত ধরে ঠাকুর দেখতে যেতাম, একটু
যখন বড় হলাম তখন বন্ধুদের সঙ্গে যেতাম। এখনকার ছেলে-মেয়েদের মতো অত টাকা থাকত না
আমাদের হাতে। বাড়ি থেকে দশ টাকা দিত, সেই সময়ে এই দশ টাকার
মূল্য অনেকটাই। সেটা আলাদাই আনন্দ ছিল। তিলোত্তমার আনন্দিতার আগমনের স্বাদ পাই না বহুদিন।”
বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে অনেকেই বিভিন্ন
রকম মজা করেন, দুষ্টুমিও কম হয় না। মেহতাবের জীবনেও সেই রকম ঘটনা
রয়েছে। তাঁর কথায়, “দল বেঁধে পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে বেড়িয়ে
কখনও বাসে উঠে ভাড়া না দেওয়া, কখনও এক গেট থেকে উঠে অপর গেট
দিয়ে নেমে যাওয়া, ওই দশ টাকা থেকে কিছু কিছু করে টাকা
বাঁচাতে এমনটা করতে হত। তখন এই ব্যপারটা ছিল। এখনও মনে আছে একবার লেবুতলা পার্কে
ঠাকুর দেখতে গিয়ে ভিতরে আর ঢুকতে পারছি না, এত ভিড়! এর পর
যখন বড় হলাম তখন অধিকাংশ সময়টাই থাকতাম বাইরে, কলকাতায়
থাকলেও পরে গাড়ি করে বেরোতাম। ছোট বেলার ওই দিনগুলো প্রচণ্ড মিস করি।”
২০১৮-তে পেশাদর ফুটবল’কে বিদায় জানানো মেহতাব
অবসর ভেঙে ফিরে এসেছেন ফুটবলে। মধ্যপ্রদেশের দল মদন মহারাজ এফসি’র টেকনিক্যাল হেড এবং ফুটবলার, উভয় দায়িত্বেই রয়েছেন
এই মিডফিল্ড জেনারেল।