‘বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি...’
সৃষ্টির আদিকাল থেকে বিশ্বে এমন বহু কিছু গড়ে উঠেছে যার
সম্পর্কে আমরা জানিই না। আবার এমন অনেক জায়গা রয়েছে যার রহস্য কোনওদিন কেউ উদ্ঘাটন
করতে পারেনি। আজ জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের তেমনই কয়েকটি রহস্যজনক স্থানের কথা।
উলুরু, অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার উলুরু (আয়ার্স রক) যেন অ্যাডভেঞ্চারের অপর
নাম। বারবার অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মানুষ তো বটেই, ভ্রমণার্থীদেরও মুগ্ধ
করেছে সে। এই স্থান আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের আদি নিবাস। উলুরু মূলত বেলেপাথর
নির্মিত একটি বিশাল ব্লক যা কচ্ছপের খোলসের মতো দেখতে। এটি দেখতে প্রতি বছর হাজার
হাজার মানুষ ভিড় করে। উলুরু প্রাকঐতিহাসিক যুগে সৃষ্টি কীনা জানার জন্য ঐতিহাসিকরা
এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ব্যানফ স্প্রিংস হোটেল, কানাডা
এই বিখ্যাত হোটেলটি আবার ভূতের হোটেল বলে কুখ্যাত।
স্থানীয়দের মতে, ব্যানফ স্প্রিংস হোটেলের ৮৭৩ নম্বর ঘরে
একটি পরিবারকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছিল। তাঁদের আত্মা নাকি এখন ঘোরাফেরা করে
হোটেলেই। অনেকে আবার বেশ কয়েকজন কেয়ারটেকারদেরও নাকি দেখতে পান যারা আচমকা অদৃশ্য
হয়ে যায়।
স্টোনহেঞ্জ, ইংল্যান্ড
স্টোনহেঞ্জ হল ইংল্যান্ডের একটি ৫০০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন
কাঠামো যা দীর্ঘকাল ধরে রহস্য ছড়িয়ে রয়েছে। এটি মূলত ব্লু স্টোন দিয়ে তৈরি
বিশালাকার মেগালিথ পাথরের একটি বৃত্তাকার ক্লাস্টার। বলা হয় এই ব্লু স্টোন
শুধুমাত্র পেমব্রোকেশায়ারের প্রেসেলি পাহাড়ে পাওয়া যায়, যা ওয়েলসের প্রায় ৩২২ কিলোমিটার দূরে। সুতরাং, এখানে
রহস্য হল কিভাবে নব্য প্রস্তর যুগের লোকেরা এত বড় পাথর সমস্ত পথ পরিবহণ করেছিল
এবং এটি তৈরি করার তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল? উত্তর মেলেনি আজও।
আরও পড়ুন: শহরের কোলাহল থেকে সরে গিয়ে নববর্ষের ছুটিতে নিভৃতে একটু সময় কাটানোর মোক্ষম স্থান এটি
আরও পড়ুন: প্রায় দশ বছরের পর্যটক সংখ্যা কে ছাপিয়ে এবারে রেকর্ড সংখ্যক ভিড় কাশ্মীরে
রোজওয়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
নিউ মেক্সিকোর রোজওয়েল হল এলিয়েন তত্ত্বের একটি কেন্দ্র।
১৯৪৭ সালে এই ছোট মার্কিন শহরটি শিরোনামে এসেছিল একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এই
শহরের একজন খামার কর্মী স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন যে তিনি একটি উড়ন্ত
সসার দুর্ঘটনার ধ্বংসাবশেষে হোঁচট খেয়েছেন।
কোডিনহি- যমজদের গ্রাম
ভারতে অবস্থিত এই গ্রামের ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারেনি।
কোডিনহি হল কেরালার একটি ছোট্ট গ্রাম। কালিকট থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে এর
অবস্থান। এই সুন্দর দক্ষিণ ভারতীয় গ্রামটিতে প্রায় ২০০০ পরিবার বাস করে এবং
প্রায় প্রতিটি পরিবারে অন্তত কেউ না কেউ একবার যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
গ্রামটি ১৯৪৯ সাল থেকে যমজ জন্মের জন্য বিখ্যাত! কোনও চিকিৎসক বা বিজ্ঞানী এর
সমাধান করতে পারেননি।
কামাখ্যা দেবী মন্দির, ভারত
কামাখ্যা দেবী উত্তর-পূর্ব ভারতের অসম রাজ্যে অবস্থিত।
পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই মন্দিরের সৌন্দর্য্য অবর্ণনীয়। ভারতের শক্তিপীঠগুলির
মধ্যে এটি একটি। এখানে কালীপূজো হয়। জনশ্রুতি, সতীর যোনি এখানে পড়েছিল
বলেই গড়ে উঠেছিল কামাখ্যা মন্দির। প্রতি বছর, একটি নির্দিষ্ট
মাসের তিন দিন মন্দিরে একটি অত্যন্ত রহস্যময় ঘটনা ঘটে। বিশ্বাস করা হয় যে,
এই সময়টায় দেবী তাঁর রজঃকালীন সময়ের মধ্য দিয়ে যান। রজঃরক্তের ফলে
মন্দিরের কাছে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের জল লোহিতবর্ণ হয়ে যায়।
হাইগেট কবরস্থান, ইংল্যান্ড
লন্ডনের হাইগেট কবরস্থান অবশ্যই সাহসী মানুষের জন্যই।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, সূর্যাস্তের পর রক্তচোষা ভ্যাম্পায়াররা
এখানে লুকিয়ে থাকে। কিন্তু ভিতরে যাওয়ার সাহস করে কেউই কোনওদিন যাননি, তাই সত্য আসলে কী তা সামনেও আসেনি।
গ্রেট ব্লু হোল, বেলিজ
গ্রেট ব্লু হোল দীর্ঘকাল ধরে তার নানাবিধ ঘটনার জন্য
ডুবুরি এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের আকৃষ্ট করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম সিঙ্কহোলটির
গভীরতা ১০০০ ফুট এবং ৪০০ ফুট। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় এবং অনাবিষ্কৃত
আন্ডারওয়াটার সাইটগুলির মধ্যে একটি।
ডেভিলস ব্রিজ, জার্মানি
জার্মানির ডেভিলস ব্রিজ দেখলে মনে হবে এ যেন এক অন্য
বিশ্ব। অর্ধবৃত্তাকার সেতুটি এতটাই অবিশ্বাস্যরকমের সুন্দর যে মানুষ বলে যে এটি
শয়তান নিজেই তৈরি করেছিল। নামকরণের এটাই একমাত্র কারণ। এছাড়া এখানে বেশ কিছু
অতিপ্রাকৃত ঘটনারও খবর পাওয়া গিয়েছে।
ক্রুকড ফরেস্ট, পোল্যান্ড
এই বনে ৪০০টি পাইন গাছ রয়েছে, যা অদ্ভুতভাবে বাঁকানো। এর কান্ড কিছু না হলেও ৯০ ডিগ্রি ঘোরানো। এই
অস্বাভাবিক ঘটনার কারণ কী তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে।