কলকাতা লিগে দ্বিতীয় বার হার হজম করল মোহনবাগান। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে সার্দান সমিতির পর ডায়মণ্ড হারবার এফসি’র বিরুদ্ধেও পর্যদুস্ত হল সবুজ-মেরুন
ব্রিগেড। ৩৬ সেকেন্ডে সুপ্রিয় পণ্ডিতের করা
গোলেই ম্যাচ হারতে হল মোহনবাগান’কে।
ম্যাচ শুরুর প্রথম মিনিটেই আকস্মিক
গোল হজম করে হতবুদ্ধি হয়ে যায় তরুণ বাগান ফুটবলাররা। ধীরে ধীরে সেখান থেকে বেরিয়ে
ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালায় তাঁরা। বড় দল পিছিয়ে পড়লেও আত্মবিশ্বাসী থাকে ফিরে
এসে ম্যাচের রাশ হাতে তুলে নেওয়ার। মোহনবাগান ফুটবলারদেরও হয়তো সেটাই মানসিকতা ছিল
কিন্তু অনেকটা আত্মতুষ্টি এবং সুপার সিক্সে পৌঁছে যাওয়ার ফলে গা ছাড়া খেলা
মোহনবাগানকে ম্যাচে ফিরতে দিল না।
ম্যাচে ফেরার সুযোগ একাধিক বার
পেয়েছিল মোহনবাগান। ৩৫ মিনিটে পর পর দু’টি হলুদ
কার্ড দেখে ডায়মণ্ড হারবারের অয়ন মণ্ডল মাঠের বাইরে চলে যাওযার পর ৬৫ মিনিট দশ
জনের প্রতিপক্ষকে পেয়েছিল কিন্তু সেটাকেও কাজে লাগাতে পারল না। এ দিন রেফারি তন্ময়
ধর ৯ মিনিট অতিরিক্ত সময় খেলিয়েছিলেন। বল পজিশনের নিরিখে এগিয়ে ছিল সবুজ-মেরুন, তারা বারবার আক্রমণও তুলে এনেছে কিন্তু কোনও আক্রমণের
মধ্যেই গোলের ঠিকানা ছিল না। এ দিন মোহনবাগানের খেলার মতোই জঘন্য ছিল তন্ময় ধরের
রেফারিং। ম্যাচের মধ্যে অজস্র ভুল সিদ্ধান্ত, অকারণে কার্ড দেখানোর বহর দেখে মনে হচ্ছিল কার্ড দেখানোর জন্য শুধু তাঁর মুখে
বাঁশি তুলে দেওয়া হয়েছে। দু’টো হলুদ কার্ড
দেখিয়ে যে লাল কার্ড দেখাতে হবে অয়ন মণ্ডলকে সেটাও বেমালুম ভুলে যান। ওই অবস্থাতেই
শুরু করে দেন ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত লাইন্স ম্যান মাঠে এসে তন্ময়কে লাল কার্ড দেখানোর
কথা মনে করান।
মোহনবাগানকে সমতায় ফেরানোর সেরা
সুযোগ এ দিন পেয়েছিলেন সদ্য জাতীয় দলের শিবির থেকে ফিরে ক্লাবের জার্সি গায়ে
চালানো সুহেল ভাট। তিন কাঠি ফাঁকা পেয়েও কাঙ্খিত গোল করতে পারলেন না এই ফুটবলার।
বিক্রমজিৎ সিং-এর গোললাইন সেভ ডায়মণ্ড হারবারের ডিফেন্সে ফাটল ধরতে দেয়নি। ধারে
এবং ভারে মোহনবাগান এগিয়ে থাকলেও পুরো ম্যাচে কখনওই স্রেফ ডিফেন্স নির্ভর ফুটবল
খেলেনি ডায়মণ্ড, দশ জনে হয়ে যাওয়ার পরেও সুযোগ পেলেই
আক্রমণে উঠেছে কিবু ভিকুনার দল। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে পাওয়ার ফুটবলেরে উপরই জোর
দিয়েছিল অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যে সংমিশ্রণে দারুণ ভাবে তৈরি এই দল।
ডায়মণ্ড হারবারের এই জয়কে কোনও ভাবেই
অঘটন বলা যাবে না। এর আগে মহমেডান স্পোর্টিং-কে তারা পরাজিত করেছে লিগে।
সাসপেন্সনের কারণে এই ম্যাচে সাইড লাইনে ছিলেন না বাস্তব রায়। তাঁর পরিবর্তে
সহকারী কোচ বিশ্বজিৎ ঘোষাল দলকে খেলান। এই হারের পর বিশ্বজিতের বক্তব্য, “৩৬ সেকেন্ডে
ডায়মণ্ড হারবারের করা গোলটাই পুরো ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছে। এর সঙ্গে ছেলেদের
মধ্যে হয়তো আত্মতুষ্টিও কাজ করেছিল। এক-একটা দিন এ’রকম যায়। আমি কাউকে আড়াল করতে চাই না। এটা ঠিক যে আমার ছেলেরা ভাল খেলতে
পারেনি।"
Asia Cup 2023: ৫০ রানেই থেমে গেল শ্রীলঙ্কা, রোহিত'দের চ্যাম্পিয়ন হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা
Asia Cup 2023: ফাইনালে আগুন ঝরাচ্ছেন সিরাজ, ১০ ওভারের মধ্যেই ব্যাকফুটে শ্রীলঙ্কা
নৈহাটি স্টেডিয়ামে মোহনবাগানকে
হারানোর পর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই নির্লিপ্ত কিবু ভিকুনা। মোহনবাগানকে আই লিগ
চ্যাম্পিয়ন করা কোচ বলেন, “এখনই চ্যাম্পিয়নশিপ
নিয়ে কিছু ভাবছি না। ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই। প্রতিটা ম্যাচই আমাদের জিততে হবে।” পাশাপাশি মোহনবাগানকে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করার পর তাঁর চাকরি
চলে গেলেও সবুজ-মেরুনের বিরুদ্ধে এই জয়কে বদলার ম্যাচ বলতে তিনি নারাজ। ভিকুনা
বলেছেন,
“মোহনবাগানের সঙ্গে কখনও বদলা হয় না। আমায়
মোহনবাগান সমর্থকেরাও ভালবাসেন। এই ক্লাবের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল।” নিজের দল জয় পেলেও রেফারিং-এর মান নিয়ে যথেষ্ট বিরক্ত ছিলেন
ভিকুনা। সরাসরি কিছু না বললেও নিম্নমানের রেফারিং-এ যে তিনি বিরক্ত তার স্পষ্ট ছাপ
ছিল তাঁর চোখে-মুখে।