মুখমণ্ডল সুন্দর করার জন্য কসমেটিক
সার্জারি হোক, সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে
সন্তানের জন্ম হোক বা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে কারও শরীর থেকে বাদ যাওয়া অঙ্গ আবার দেহের সঙ্গে যুক্ত করা- চিকিৎসা বিজ্ঞানের
উন্নতির কারণে এই সবকিছুই সম্ভব হয়েছে। কিন্তু আজ আমরা আপনাকে বলতে চাই যে ভারতে
এমন একটি বই ছিল, যেখানে একজন মহর্ষি
সবচেয়ে কঠিন অপারেশন করার সমস্ত উপায় বলেছিলেন। আর সেই বইয়ের ভিত্তিতে সারা
পৃথিবী শিখেছে অস্ত্রোপচার। এই গ্রন্থের নাম সুশ্রুত সংহিতা এবং মহর্ষি সুশ্রুত
পৃথিবীর প্রথম শল্যচিকিৎসক। সুশ্রুতকে সার্জারির জনক বলা হয়।
গ্রিস এবং আমেরিকার মতো দেশগুলি
বর্তমানে অন্যদেরকে প্লাস্টিক সার্জারি থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞান পর্যন্ত প্রায়
প্রতিটি নতুন প্রযুক্তি তাদের নিজস্ব হিসাবে শেখাচ্ছে, তবে ভারত এখন বিশ্বকে ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের বিশ্বকোষের
সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চায় এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের সবচেয়ে কঠিন প্রযুক্তির
জনক। মহর্ষি সুশ্রুত কাশীতে ছিন্ন নাক দেহের সঙ্গে সংযুক্ত করেছিলেন। ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে যে ৩০০০ বছর আগে কাশীতে বিশ্বের
প্রথম প্লাস্টিক সার্জারি হয়েছিল। এক ব্যক্তি ছিন্ন নাক নিয়ে মহর্ষি সুশ্রুতের
কাছে আসেন। প্রথমে সুশ্রুত লোকটিকে কিছু নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করিয়েছিলেন যাতে
সে ব্যথা অনুভব না করে। তারপর কপালের থেকে চামড়ার অংশ নিয়ে নাকের আকৃতি বুঝে
সেলাই করে নাক তৈরি করে দেন। এটি সুশ্রুত সংহিতায়ও লিপিবদ্ধ আছে যে তিনি ১২৫টি
বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের যন্ত্র ব্যবহার করেছিলেন। তিনি ছুরি, সুঁচ, চিমটে ইত্যাদি
বিভিন্ন যন্ত্র জলে ফুঁটিয়ে ব্যবহার করতেন। সুশ্রুত সংহিতার ১৮৪টি অধ্যায় রয়েছে, যাতে ১১২০টি রোগের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: Subhas Chandra Bose: জানেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কী খেতে বেশি ভালবাসতেন
আরও পড়ুন: Netaji: নেতাজিই ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, লেখা হতে পারে নতুন ইতিহাস
মহর্ষি সুশ্রুত ৩০০ ধরণের
অস্ত্রোপচার করতেন, যার মধ্যে নাক এবং
কানের অস্ত্রোপচার ছিল প্রধান। তিনি এই অস্ত্রোপচারে ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ। এ ছাড়া
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তানের জন্মদান, অ্যানাস্থেশিয়ার সঠিক ডোজ সম্পর্কে তার অনেক জ্ঞান ছিল। মহর্ষি সুশ্রুত তাঁর
শিষ্যদের শেখানোর জন্য ফল, শাকসবজি এবং মোমের
মূর্তি ব্যবহার করতেন। পরে, তিনি নিজেই
মৃতদেহের অস্ত্রোপচার শিখেছিলেন এবং তারপরে তা নিজের ছাত্রদের শিখিয়েছিলেন।