অপেক্ষার আর মাত্র সাত দিন। আগামী ২০ নভেম্বর থেকে ঢাকে কাঠি পড়বে ফিফা
বিশ্বকাপের। ফুটবলের মহাযুদ্ধকে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই সমর্থকদের উন্মাদনা নজর কেড়েছে ক্রীড়ামহলের।
ফুটবলপ্রেমীদের বিভিন্ন কীর্তি ইতিমধ্যেই জায়গা পেয়েছে শিরোনামে। তবে কাতারে বিশ্বকাপ
শুরুর আগে সেরা পাঁচ মহারথী'কে দেখে নিন, যাঁরা আজও ফুটবল বিশ্বের নক্ষত্র হিসেবে পরিচিত।
পেলে-
সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার পেলে। বিশ্বের একমাত্র ফুটবলার
হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জিতেছেন তিনি। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েলসের
বিপক্ষে করা পেলের একমাত্র গোলে ভর করে সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল ব্রাজিল। এটিই ছিল
এই ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের প্রথম বিশ্বকাপ গোল। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্ব কনিষ্ঠ ফুটবলার
হিসেবে (১৭ বছর ২৩৯ দিন) এই গোলটি করেছিলেন পেলে। ১৯৬২ সালে চিলি বিশ্বকাপ এবং ১৯৭০
সালে মেক্সিকো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে বিরাট অবদান রয়েছে তাঁর। দেশের জার্সিতে
৯২ ম্যাচে ৭৭টি গোল করেছেন কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান তারকা।
আরও পড়ুন: ISL 2022-23: সুনীল ছেত্রীর দলকে তাদেরই ঘরের মাঠে গিয়ে হারিয়ে এল ইস্টবেঙ্গল
আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2022: বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল আর্জেন্টিনা, মেসি ছাড়াও কারা সুযোগ পেলেন দেখে নিন
দিয়েগো মারাদোনা-
সমর্থকদের কাছে 'এল পিবে দে অরো (সোনালী বালক)' নামে পরিচিত ছিলেন মারাদোনা।
আর্জেন্টিনার হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৯১ ম্যাচে ৩৪টি গোল করেছেন। আর্জেন্টিনার হয়ে
৪টি বিশ্বকাপ (১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯০ এবং ১৯৯৪) খেলেছেন ফুটবল সম্রাট। ১৯৮৬সালে বিশ্বকাপের
কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় পায় আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচে দুটি
গোলই করেন মারাদোনা। যা এখনও রোমাঞ্চিত স্মৃতি হয়ে রয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের। এই ম্যাচে
তাঁর প্রথম গোলটি ছিল 'হ্যান্ড অফ গড' নামে পরিচিত। অপর গোলটি, গোলপোস্টের প্রায় ৬০ মিটার দূর থেকে ড্রিবলিং করে
পাঁচজন ইংরেজ রক্ষণভাগের খেলোয়াড়কে কাটিয়ে গোলটি করেছিলেন বিশ্বফুটবলের অন্যতম সেরা
নক্ষত্র। যা আজও শতাব্দীর সেরা গোল হিসেবে মানেন কিংবদন্তি ফুটবল তারকারা।
জোহান ক্রুইফ-
তিন বারের ব্যালন ডি'অর জয়ী এই ডাচ ফুটবলার বিশ্বকাপে প্রায় সকলের নজর
কেড়ে ছিলেন।নেদারল্যান্ডের হয়ে ৪৮ ম্যাচে ৩৩টি গোল করেছেন ক্রুইফ। তাঁর কাঁধে ভর দিয়েই
নেদারল্যান্ডস ১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল নেদারল্যান্ডস। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে
সে বার জোড়া গোলের পাশাপাশি তৎকালীন চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকেও ছিটকে দিয়েছিলেন তিনি।
তবে দুভাগ্যবশত ৭৪-এর বিশ্বকাপে ট্রফি জিততে পারেননি ক্রুইফ। সেবার নেদারল্যান্ডসকে
হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল জার্মানি।
ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার-
জার্মানির কিংবদন্তি এই ফুটবলার দুই ভূমিকাতেই বিশ্বকাপ জিতেছেন।প্ৰথমে
খেলোয়াড় হিসেবে এবং পরে কোচ হিসেবে। ১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপ জয়ী জার্মান দলের অধিনায়ক
ছিলেন তিনি। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেই কী ভাবে গোল করে দলকে এগিয়ে দিতে হয়, তা খুব ভাল
জানতেন বেকেনবাওয়ার। জার্মানির রক্ষণ ভাগকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি দেশের হয়ে ১০৩
ম্যাচে ১৪ গোল করেছিলেন তিনি। দিদিয়ের দেশচ্যাম্পস এবং মারিয়ো জাগালো ছাড়া তৃতীয়
ব্যক্তি হিসেবে দুই ভূমিকায় বিশ্বকাপ জেতার নজির রয়েছে তাঁর।
রোনাল্ডো-
যে বয়সে অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চমাধ্যমিক পাস করে না, সেই বয়সে (১৭
বছর) ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জিতে দেখিয়ে ছিলেন রোনাল্ডো। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপের ট্রফি
হাতে তুলেছিলেন 'দ্য ফেনোমেনন'। চার বছর পর ব্রাজিলকে ফাইনালে নিয়ে গিয়ে টুর্নামেন্টের
সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন তিনি। ২০০২ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে নায়ক ছিলেন
রোনাল্ডোই, ফাইনালে জোড়া গোল করেছিলেন কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার। দেশের হয়ে ১৫টি
গোল করে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন তিনি। দেশের জার্সিতে
৯৮ ম্যাচে ৬২টি গোল করেছেন রোনাল্ডো।