গ্রীষ্মের পাশাপাশি শীতকালেও কি আটা, সিদ্ধ ডাল, কাটা শাকসবজি, ফল ও মাছ, দুধ-মাখন ও পনির ইত্যাদি ফ্রিজে রাখেন। আমরা ফ্রিজে জিনিস রাখি কারণ এর ভিতরে তাপমাত্রা কম থাকায় এতে ব্যাকটেরিয়া জন্মায় না। এই কারণে ফ্রিজে রাখা খাবার একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিরাপদ থাকে। জেনে নিন এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো।

ফ্রিজের যে তাকে রান্না জিনিস রাখছেন সেখানে কাঁচা জিনিস রাখবেন না। দুটি আলাদা তাকে রাখুন। নাহলে কাঁচা শাক সবজিতে থাকা ব্যাকটেরিয়া রান্না করা খাবারে গিয়ে রান্না নষ্ট করতে পারে।

রান্না করা খাবার স্টিলের টিফিনবক্সে রাখা সবচেয়ে নিরাপদ।

ফ্রিজে সবচেয়ে নিচের তাকটি বাকিগুলোর থেকে ঠান্ডা। রেফ্রিজারেটিং চেম্বারের গড় তাপমাত্রা +৩ ডিগ্রি থেকে +৬ ডিগ্রি পর্যন্ত। তাই যেমন সামগ্রী সেই বুঝে তাপমাত্রা তুলুন।

আটা-ময়দা মেখে ফ্রিজে রাখা ভুল। যখন আটায় জল যোগ করি, তখন এর ভিতরে একটি রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। তাই আটা মাখার সঙ্গে সঙ্গেই রুটি তৈরি করতে হবে। যখন আমরা ময়দা ফ্রিজে রাখি, তখন এতে উপস্থিত রশ্মি ময়দায় চলে যায়, যা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। এতে আটা-ময়দা কালো হয়ে যায় এবং এর রুটিও শক্ত হয়ে যায়।

দুধে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই বেশিক্ষণ ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। কৌটোজাত দুধের (টেট্রা প্যাক) মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ রয়েছে, তা পরীক্ষা করতে থাকুন। দুধের কৌটো খোলা থাকলে তবে অবিলম্বে এটি ব্যবহার করুন।

১৫ দিনের বেশি ফ্রিজে মাখন রাখবেন না। ফ্রিজে রাখার জন্য এটি প্লাস্টিকের মধ্যে ভালভাবে প্যাক করুন। খাওয়ার ১৫ মিনিট আগে ফ্রিজ থেকে বের করে রাখুন।

ভিনিগার, তেল, চিনিসহ অনেক কিছু মেয়োনিজে মেশানো হয়। অবিলম্বে এটি ব্যবহার করুন এবং ফ্রিজে রাখুন। আট ঘণ্টা ফ্রিজের বাইরে থাকলে আবার ভেতরে রাখা নিরাপদ নয়।

আরও পড়ুন: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে যাচ্ছে, সমস্যা দূর হবে এই উপায়ে

আরও পড়ুন: শ্যাম্পু ছাড়া চুল ধুলেও পাবেন উপকার

পাউরুটি কখনওই ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। এটি শুকিয়ে যায় এবং এর স্বাদ নষ্ট করে। চার দিনের মধ্যে পাউরুটি খেয়ে ফেলা উচিৎ।

মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ পরীক্ষা করার পরেই প্যাকেটজাত জুস পান করুন। যদি প্যাকেটটি খোলা হয়ে থাকে তবে এটি ৬ দিনের মধ্যে শেষ করুন।

আলুতে উপস্থিত স্টার্চ ফ্রিজের তাপমাত্রার কারণে ভেঙে যায়। এতে আলু মিষ্টি হয়। ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির মতে, আলু এমন একটি খাদ্য উপাদান, যা ভুল করেও ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। আলু রান্না করলে অ্যাক্রিলামাইড নামের ক্ষতিকর রাসায়নিক নিঃসৃত হয়। এটি স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।

ফ্রিজে রাখলে টমেটোর বাইরের ত্বক নষ্ট হয়ে যায়। এটি এর স্বাদ প্রভাবিত হয়। টমেটো বেশি পেকে গেলে দুই দিন ফ্রিজে রাখা যায়। টমেটো সংরক্ষণ করতে, একটি কাগজের ব্যাগে রাখুন।

পেঁয়াজ ফ্রিজে বা প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা উচিত নয়। ফ্রিজে রাখলে পেঁয়াজ নরম ও অকেজো হয়ে যায়। এটি সূর্যালোক থেকে রক্ষা করা উচিত এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রা সহ একটি জায়গায় রাখা উচিত।

রান্না করা ভাত ফ্রিজে রাখার দুই দিনের মধ্যে খেতে হবে। খাওয়ার আগে কিছু সময় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে। এর পর গরম করে খেতে হবে।

ফ্রিজে রাখার পর রুটি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যদি বেশি রুটি হয়, তবে ফ্রিজে রাখার ৮ ঘন্টার মধ্যে খেয়ে ফেলুন।

ডালের পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে তাজা খেতে হবে। ডাল বেশি থাকলে ফ্রিজে রাখুন, তবে দ্বিতীয় দিনের মধ্যেই শেষ করুন।

কাটা ফল ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। এতে আপনার স্বাস্থ্য নষ্ট হতে পারে।