প্রায় দুশো বছর ভারতের বুকে রাজত্ব করেছে ব্রিটিশরা। দেশের
পরাধীনতার শৃংখলমোচনে প্রাণ দিয়েছে হাজার হাজার বিপ্লবী। ঔপনিবেশিক ভারতে বেশ কিছু
স্থাপত্য গড়ে উঠেছিল যা আজও দর্শনীয়। এই ব্রিটিশ শাসিত ভারতেই গড়ে উঠেছিল এশিয়ার
প্রথম হোটেল। তাও আবার খাস কলকাতার বুকে।
কলকাতার ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল শুধু তিলোত্তমার নয়, সমগ্র ভারতের জন্য গর্বের বিষয়। হোটেলের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম
অ্যাকাউন্ট অনুসারে, এটি ১৮৪০ সালে ডেভিড উইলসন তৈরি
করেছিলেন। ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল এশিয়ার প্রাচীনতম হোটেল যেটি সেই সময় চুটিয়ে
ব্যবসা শুরু করেছিল। ডেভিড উইলসন যখন হোটেলটি তৈরি করেন, তখন
জর্জ ইডেনের সম্মানে এর নাম রাখা হয় অকল্যান্ড হোটেল। সেই সময় জর্জ ইডেন
অকল্যান্ড ছিলেন ভারতের গভর্নর জেনারেল।
হোটেলটি শুরু হয়েছিল ১০০টি কক্ষ নিয়ে। একটি ডিপার্টমেন্টাল
স্টোর নিয়ে শুরু হয়েছিল। ১৮৬০ সালে হোটেলটি আরও বড় করা হয়। তখনই ললিত গ্রেট
ইস্টার্ন হোটেলের ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির নাম ডি উইলসন অ্যান্ড কোম্পানির পরিবর্তে
হয় গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল ওয়াইন অ্যান্ড জেনারেল পারভিং কোম্পানি। আরেকটি মজার
তথ্য হল যে এটিই প্রথম হোটেল যেখানে ১৮৫৯ সালে প্রথমবারের জন্য কর্তৃপক্ষ ভারতীয়
পরিচালনা পর্ষদ নিযুক্ত করেছিল।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: পাত্র-পাত্রীর অমতে রেজিস্ট্রি করে বিয়েও বেআইনী, জানাল কলকাতা হাইকোর্ট
আরও পড়ুন: সাবধান! করোনার চতুর্থ ঢেউ আসার আগে এই উপসর্গগুলি দেখে সতর্ক হয়ে যান
১৮৮৩ সালে হোটেলটিতে বিদ্যুৎ আসে। ১৯১৫ সালে হোটেলটির নাম
পরিবর্তন করে গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল করা হয়। সেই সময়ে প্রায়ই এটিকে ‘প্রাচ্যের
রত্ন’ নামে উল্লেখ করা হত। গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলের নাম বিখ্যাত লেখক এবং কবি
রুডইয়ার্ড কিপলিং তাঁর ছোট গল্প ‘সিটি অফ ড্রেডফুল নাইটস’-এও উল্লেখ করেছেন।
সাতের দশকে গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলের ব্যবস্থাপনার ভার রাজ্য
সরকার নিজের হাতে তুলে নেয়। ৩০ বছর সেই দায়িত্ব পালন করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
অবশেষে ২০০৫ সালে হোটেলটি ললিত সুরি হসপিটালিটি গ্রুপের কাছে বিক্রি করা হয়।
সংস্কার কার্যের জন্য সেই বছর হোটেলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখনও পর্যন্ত এটিই ছিল
এশিয়ার প্রথম দীর্ঘতম হোটেল।