সোমবার মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে প্রয়াত
হয়েছেন অভিনেতা গুফি পেন্টাল। অনেক ধারাবাহিক
ও চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু একটি
ভূমিকার কারণে তাঁকে পড়তে হয়েছে জনগণের
রোষের মুখে।
আও পড়ুন: সুপারির ৫টি কৌশল নিমেষে অশান্তিমুক্ত করবে আপনাকে
অভিনয় জগতে
প্রবেশের আগে গুফি চাকরি করতেন সেনাবাহিনীতে।
১৯৬২ সালে শুরু হয় ভারত-চিন যুদ্ধ। সেই সময় কলেজ ছাত্রদের সৈন্যবাহিনীতে নিয়োগ করা হচ্ছিল। গুফিও দেশের স্বার্থে যোগ দেন সেনায়।
আও পড়ুন: কম সময়ে চটজলদি বানিয়ে ফেলুন দুধ শুক্তো
যুদ্ধের সময়,
তাঁকে চিন সীমান্তে পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল।
সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা সৈন্যদের তখন বিনোদনের জন্য কোনও মাধ্যম ছিল না,
সেইজন্য সৈন্যরা
নিজেরাই নাটক করতেন। প্রায়ই অনুষ্ঠিত হত রামলিলা, তাতে গুফি পেন্টাল
মাতা সীতার ভূমিকায় অভিনয় করতেন।
সেই সময় থেকেই গুফির অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মাতে
থাকে। ৬২’র ভারত-চিন যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তিনি
সেনাবাহিনী ছেড়ে অভিনয়ে কেরিয়ার গড়ার
সিদ্ধান্ত নেন। তারপরের পর্বে মুম্বাইযাত্রা এবং অভিনয়ের সুযোগ আসা। গুফি
পেন্টাল প্রথম ধারাবাহিকে কাজ করেন।
এর মধ্যেই তাঁর হাতে এসে যায়
সুবর্ণ সুযোগ। বি আর চোপড়া সিদ্ধান্ত নেন তিনি মহাভারত
করবেন। গুফি সেখানে যোগ দেন কাস্টিং ডিরেক্টর হিসেবে।
এদিকে স্ক্রিপ্ট রাইটার রাহি মাসুম রাজা মহাভারতে শকুনি চরিত্রের
জন্য একজন শিল্পী খুঁজছিলেন। তখন তাঁর নজর
পড়ে গুফির দিকে। এক নজরেই তিনি চিনে নিয়েছিলেন ছোটপর্দার শকুনিকে।
শকুনি চরিত্রটি রাতারাতি গুফি
পেন্টালকে জনপ্রিয় করে তোলে। তবে এই নেতিবাচক
ভূমিকায় অভিনয়ের কারণে তাঁকে মানুষের
ঘৃণার শিকার হতে হয়েছিল। দর্শকরা ভেবেই নিয়েছিলেন আদপে মানুষটিই খারাপ,
ঠিক শকুনির মতো। গুফির কাছে অসংখ্য চিঠি আসত যাতে ভরা থাকত ঘৃণা। এমনকি
একজন তাঁর পা ভেঙে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন।
বাংলা চলচ্চিত্র ‘৪২’-এ বিকাশ রায় অভিনয় করেছিলেন এক
অত্যাচারি ব্রিটিশ কর্মচারির চরিত্রে। পর্দায় তাঁর নির্মমতার চিত্র দর্শকদের মনে
এমন প্রভাব ফেলেছিল যে সিনেমা হলে স্ক্রিনে বিকাশ রায়কে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়েছিল
জুতো। চরিত্রের মধ্যে কতখানি ডুবে গেলে এমন অভিনয় সম্ভব যা মানুষকে সিনেমা আর
বাস্তব ভুলিয়ে দেবে। গুফি পেন্টালের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছিল। সেইজন্য আজও মহাভারতের
শকুনি চরিত্রটির কথা কোথাও শুনলে সবার আগে তাঁর কথাই মনে পড়ে।